জানতে ভালোবাসি,...তাই প্রশ্ন করি... একটি আজব দেশের সিদ্ধান্ত।
পুঁজিবাজারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিনিয়োগকারীদের পরিচয়পত্র প্রদান এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সংলগ্ন এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বাজার-সংশ্লিষ্টরা। তাঁদের মতে, এ কাজ করা হলে বিনিয়োগকারীরা আর বাজারে আসতে চাইবেন না। ফলে বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসইসি ও ডিএসইর কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের পরিচয়পত্র প্রদান ও ডিএসইর সামনের সড়কের বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
গত ডিসেম্বর ও এ বছর জানুয়ারিতে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধসের ঘটনা ঘটে। এতে পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন, যানবাহন ও বিভিন্ন ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এসব বিষয় নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
ফয়সাল আহমেদ নামের এক বিনিয়োগকারী বলেন, এমনিতেই বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও বিনিয়োগকারীদের পরিচয়পত্র প্রদান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি করবে।
এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের মুখ বন্ধ করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, পুঁজিবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিছু লোককে সুযোগ দেওয়ার জন্য এটা করা হচ্ছে।
আহমদুল্লাহ নামের আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘আমরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছি। আমরা চোর বা গুন্ডা নই যে সিসি ক্যামেরা স্থাপন বা পরিচয়পত্র দেওয়া দরকার।
’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিনিয়োগকারী বলেন, সরকার পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে টানা-হেঁচড়া করছে। এর ফলে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা প্যানিক সেল (ভয়ে শেয়ার বিক্রি) দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আসছে বাজেটে পুঁজিবাজারবান্ধব ঘোষণা চাই। ’
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাজারের বর্তমান অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে না গিয়ে বরং অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে এসইসি ও ডিএসই কর্তৃপক্ষের কথা বলা দরকার ছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করতে চাই না।
আমরা একটি স্থিতিশীল বাজার চাই। ’
এ ব্যাপারে বাজার-বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, অর্জিত মুনাফার (গেইন ট্যাক্স) ওপর কর আরোপ, বিনিয়োগকারীদের পরিচয়পত্র প্রদান ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের খবর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করছে।
আবু আহমেদের মতে, বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে শেয়ারবাজার-সম্পর্কিত বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতির পরিবর্তন করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের পরিচয়পত্র প্রদান ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ব্যাপারে প্রস্তাব করা হয়েছে। এটা কোনো সিদ্ধান্ত নয়।
তবে এটা যাচাই-বাছাই করে ডিএসইর বোর্ড সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যে লুটেরা ও চোরদের চিনতে পরিচয়পত্র লাগেনা তাদের সরকার ধরেনা বা ধরতে পারেনা আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী যারা সকলে মিলে হাজার কোটি কোটি লোকসান দিলো তাদের মুখ সরকার বন্ধ করতে চায়।
এ কোন আজব দেশে আছি আমরা? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।