বিরিন শট (নিজস্ব পাকিবেদক)
মা জানত না ছেলের অবস্থান; ছেলে জানত না মায়ের। হাতেও ছিলনা টাকা। তাই ব্যাটে-বলে সংযোগটা অর্থাৎ মা-ছেলের দেখা কিছুতেই যেন হচ্ছিলনা। অবশেষে দীর্ঘ ৮৭৭ দিন পর মা সোনাভানু আর ছেলে নদের চাঁদের দেখা হলো। অভাবের তাড়নায় ৮৭৭ দিন আগে ছেলেকে নিয়ে কাজের খোঁজে ঢাকায় এসে গুলিস্তানের গোলকধাঁধায় পড়ে ছেলে নদের চাঁদকে হারিয়ে ফেলেছিলেন সোনাভানু।
সেই থেকে মা সোনাভান ছিলেন পাগল প্রায়। কিছুকাল আগে ফেসবুক ব্রাউজ করতে যেয়ে ছেলে নদের চাঁদের সন্ধান পান সোনাভানু। তারপর থেকে ছেলেকে দেখবার জন্য তিনি পুরোপুরিই পাগল হয়ে যান। কিন্তু বাঁধ সাধে দূরত্ব। ছেলে যে এখন লন্ডনে থাকে।
কোথায় পাবেন তিনি লন্ডনে যাওয়ার এত টাকা ? অবশেষে যে মালিকের বাসায় কাজের ফাঁকে ফাঁকে জুম আল্ট্রা দিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতেন সে মালিকের দেয়া কিছু টাকা, নিজের অভাবের সংসারের সামান্য কয়টা জিনিস (৫০/৬০টা এসি আর ফ্রিজ,৭/৮টা কমদামী গাড়ি, আর প্রিয় জাকুজি) বিক্রি করা টাকা আর ইন্নুচ মিয়ার গামীন ব্যাং থেকে উচ্চ সুদে নেয়া টাকা সব মিলিয়ে কোনোমতে লন্ডনে যাওয়ার বন্দোবস্ত করতে সমর্থ হন সোনাভানু। অতঃপর গ্রোভনোর নামক লন্ডনের এক সাদামাটা ভাতের হোটেলে মা ছেলের সাক্ষাত হয়। ছেলের মাড়ির সামনের দুই দাঁতের ফাঁক দেখে ছেলেকে চিনতে পারেন মা। ৮৭৭ দিন পর মা ছেলের সাক্ষাতে সেখানে এক আবেগ ঘন মতান্তরে ঘন আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। হোটেলে ভাত খেতে আসা প্রতিটি মানুষের চোখে নেমে আসে পানি।
তবে জানা যায়, প্রকৃতপক্ষে হোটেলের তরকারীতে ঝাল অত্যাধিক বেশী হওয়াই ছিল তাদের চোখে পানি আসার কারণ। নদের চাঁদের বর্তমান অভিভাবক ও ভাতের হোটেলটির মালিক জানান, নদের চাঁদকে সেদিন ঢাকার মানে বাংলাদেশের পাবলিক মিছামিছি গাইটকাটা সন্দেহে বেদম মার দিলে সে রাস্তার পাশে বেহুশ অবস্থায় পড়ে থাকে। এ অবস্হায় তাকে দেখে তার প্রতি খুব মায়া লাগায় তিনি তাকে তার সাথে লন্ডনে নিয়ে আসেন। তিনি জানান, খুব অল্প বয়সে হারিয়ে যাওয়ায় এবং পাবলিকের মাইরে মাথায় আঘাত পাওয়ায় বাংলাদেশের স্মৃতি খুব একটা মনে করতে পারছেন না নদের চাঁদ। তবে তিনি তাকে তার ভাতের হোটেলে কাজ দিয়েছেন ও নিয়মিত চিকিৎসা করাচ্ছেন বলে জানান।
এদিকে নদের চাঁদের চিকিৎসক জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পাবলিকের প্রতি তার রোগী নদের চাঁদের সারাক্ষণ কি এক অজানা আতংক কাজ করে। বাংলাদেশের পাবলিক নাকি খালি মারে। তবে তিনি জানান, বাংলাদেশের আগামী ইলেকশনের আগ দিয়ে নদের চাঁদের বাংলাদেশ ভীতি পুরোপুরি কেটে যাবে ও তার স্মৃতি ফিরে আসবে ইনশাআল্লাহ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।