অনেক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে বাওকুল ও আপেল কুলের চাষ করে তিন বন্ধুর স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে গেছে। তিন বন্ধুই এখন সর্বশান্ত । সড়ক ও জনপথ বিভাগের চরম অবহেলায় ভাঙ্গাচোরা ও বেহাল সড়কের ধুলা-বালি বাগানের উপর পরে লাল হয়ে বাওকুলের আবাদ পুরোপরি নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েকশত একর জমিতে বাওকুল চাষ করার জন্য প্রায় ৮০ লাখ টাকা পুঁজি খাটিয়ে এক টাকাও ঘরে নিতে পারেনি তিন বন্ধু । ক্ষতিগ্রস্ত তিন বন্ধু এখন পথে পথে ঘুরছে বলে জানা গেছে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগাও, তরফপুর ইউনিয়নের পাথরঘাটা এবং তক্তারচালা এলাকার বংকী গ্রামে কুল চাষ করে তিন বন্ধ চরম ভাবে তিগ্রস্ত হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই-সখীপুর সড়কের ঐ তিন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে কয়েকশত একর জমিতে কুল চাষের তির দৃশ্য। দেখা গেছে কুল গাছে কোন ফুল ও ফল ধরেনি। বেহাল ও ভাঙ্গাচোরা সড়কের উপর থেকে ধুলা-বালি গাছের উপর গিয়ে পরে লাল হয়ে কুলের আবাদ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই-সখীপুর সড়ক সংলগ্ন এলাকা পাহাড়ি হওয়ায় বিশাল জমি অনাবাদী পরে রয়েছে।
এলাকার মাটি বিভিন্ন সবজি ও ফল চাষের জন্য উপযোগি বিধায় ঢাকার আব্দুল আমীন (৫০) নামের এক ফল চাষী ও তার দুই বন্ধু মিলে পাঁচগাও, পাথরঘাটা এবং বংকী এলাকায় প্রায় কয়েকশত একর সরকারী জমি লিজ নিয়ে এবং বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন লোকজনের কাছ থেকে জমি ভাড়া নিয়ে বাওকুল চাষ শুরু করেন। গত তিন বছর ধরে এই তিন বন্ধু নিজেদের পুঁজি এবং বিভিন্ন এনজিও ও সরকারী বেসরকারী ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাওকুলের আবাদে ঝুঁকে পরেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা গেছে। বাওকুল চাষী এবং বাগান রনা -বেনের কাজে নিয়োজিত মোঃ রোমেজ আলী (৫৬) বলেন তিনটি বাগানে প্রায় ৫০/৬০ হাজার বাওকুল ও আপেল কুলের চারা রোপন করা হয়েছিল। কিন্ত ভরা মৌসুমেও বাগানে ফুল এবং বাওকুল ধরেনি।
তিগ্রস্থরা অভিযোগ করেন গোড়াই-সখীপুর সড়কের উপর থেকে পিচ ঢালাই এবং ইট পাথর উঠিয়ে রাখার কারনে পুরো রাস্তা এখন মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই রাস্তার উপরের ইটের লাল গুড়া এবং রাস্তার উপরের পুরো ধুলাবালি বাগানের গাছের উপর পরে লালচে হয়ে পরেছে। ফলে বাগানের কুল গাছে ফুল এবং ফল ধরেনি। শুধু কুল বাগানেই নয়, হাটুভাঙ্গা, গোড়াই, বেলতৈল, হোসেন মার্কেট, চেয়ারম্যানবাড়ি,বাঁশতৈল,পাচগাও নয়াপাড়া, তালতলা, পেকুয়া, তক্তারচালা এলাকাসহ ৩০/৩৫ গ্রামের বিভিন্ন ফলের বাগানেও কোন ফুল ও ফল ধরেনি। ফলের বাগান পরিচর্চার কাজে নিয়োজিত ৪০/৫০ জন শ্রমিক দিন রাত পরিশ্রম করেও বাগানে কোন ফল ধরাতে পারেনি ।
কুল গাছের মধ্যে ছিল আপেল কুল, বাওকুল এবং বিভিন্ন উন্নত জাতের বিদেশী কুলের গাছ। প্রতিটি গাছে ৩০/৪০ কেজি করে কুল ধরার কথা ছিল । এক কেজি আপেল কুল ও বাওকুলের বর্তমান বাজার দর ৯০/১২০ টাকা। সেই হিসেবে প্রায় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে বলে কুল চাষী রোস্তম আলী জানিয়েছেন ।
এ ব্যাপারে কুল বাগানের মালিক মোঃ আমীন আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন, তিনটি এলাকায় কুলের চাষ করে আজ আমরা সর্বশান্ত হয়ে পরেছি।
তিন বন্ধু মিলে প্রায় ৮০ লাখ টাকা পুঁজি খাটিয়ে ছিলাম। কিন্তু গোড়াই -সখীপুর সড়ক ভাঙ্গাচোরা হওয়ায় রাস্তার উপর থেকে ইটের গুড়া এবং ধুলাবালি বাগানের উপর পরে লাল হয়ে কুল বাগানে ফুল ও ফল ধরেনি। ফলে তারা তিগ্রস্ত হয়ে নিঃস্ব হয়ে পরেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।