ক্লাস টেনের মাঝামাঝি সময়ে কিশোর-তরুণদের সাধারণত বয়সগত যে সব সমস্যা হয়, আমি সে সব সমস্যা থেকে মোটামুটিভাবে মুক্ত ছিলাম। ভালো ছাত্র এবং দেখতে নাদুসনুদুস হওয়ার কারণে সমবয়সী মেয়েরা মনে মনে যে পছন্দ করতো তা অনেক সময় বুঝতে পারতাম। কিন্তু সে দিকে খুব একটা মনের আকর্ষণ ছিলো না। তবে একেবারে নিরস মনের মানুষও ছিলাম না। মেট্রিক পরীক্ষার তিন মাস আগে শেষ পর্যন্ত একই ক্লাসের একজনের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কও গড়ে ওঠেছিল।
নানা কারণে তার সাথে আমার আর দাম্পত্য সম্পর্ক হয়ে উঠে নি। দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপন করার ইচ্ছা আমাদের দুজনেরই ছিল। তার ইচ্ছা আমার চেয়ে একটু বেশিই ছিল। তিনি এখন বাংলাদেশ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা। পারিবারিক ভাবে আমাদের সাথে এখনো কালেভদ্রে যোগাযোগ হয়।
যাই হোক এসব বিষয়ের চেয়ে আন্তর্জাতিক বিষয়াদীর খোঁজ খবর রাখা এবং ধর্মীয় বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করাই আমার সবচেয়ে বেশি পছন্দের কাজ ছিল। এ জন্য একবার তিন দিনের জন্য তাবলীগ জামাতে গিয়ে পরিবেশ ভালো না লাগার কারণে দেড় দিন পরেই বাড়ী ফিরেছিলাম। আমার বাবা আমাকে দেখেই মজা করে বলেছিলেন, দেড় দিনেই ওর চিল্লা শেষ হয়ে গেছে। একবার চরমোনাইয়ের পীর মরহুম ফজলুল করিম সাহেবের মুরিদ হয়েছিলাম। কিছু দিন ওনার লিল্লাহ বর্ডিং-এ দশ টাকা করে দানও করতাম।
শিবিরের ছেলেদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো ছিল তবে শিবিরে ওভাবে কখনো যোগ দেই নি। আমার মানসিক এই অবস্থার মধ্যে আমাদের ভাড়াটিয়া হিসেবে আসলো ওয়ার্ল্ড ভিশনের একজন কর্মকর্তা। যিনি সম্ভবত হিন্দু থেকে কনর্ভাটেড খৃষ্টান। ভদ্র লোককে আমরা ডাকতাম দাদা আর তার স্ত্রীকে ডাকতাম বৌদি। বৌদি আমাকে খুবই স্নেহ করতেন।
খুবই অমায়িক ব্যবহার ছিল তাদের। বৌদির ব্যবহারে খৃষ্টান ধর্মের প্রতি ক্রমেই আকৃষ্ট হয়ে পড়লাম। বৌদির সাথে গল্প করতে বসলেই তিনি মুসলমানদের এবং মুসলিম সমাজের নানা দুর্বলতা অত্যন্ত সুন্দর করে বয়ান করতেন। মুসলিম পুরুষদের চার বিয়ে , মেয়েদের প্রতি নানা বৈষম্য তিনি এত সুন্দর করে উপস্থাপন করতেন যে ইসলাম ধর্মের প্রতি বিতৃষ্ণা না এসে উপায় ছিল না। খৃষ্টান পরিবারের এত অমায়ীক আচরণ এবং মুসলমানদের সম্পর্কে নানা নেতিবাচক গল্প শুনে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম প্রয়োজনে খ্রীষ্টান হয়ে যাবো।
ইতিমধ্যে বৌদির সুবাদে অনেক খ্রীষ্টান পরিবার এবং স্থানীয় গির্জার সাথে সম্পর্ক হয়ে গেল। যাতায়াত এবং মেলা মেশা যতই বাড়তে লাগলো আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল সমস্যা সব জায়গায়ই আছে। ঝগড়া, হিংসা –বিদ্বেষ এগুলো থেকে খ্রীষ্টান পরিবারগুলো মুক্ত নয়। বাঙ্গালী খাসলত মুসলমানদের মধ্যে যেমন আছে দেশী খৃষ্টানদের মধ্যেও আছে। এসব ভাবতে ভাবতে একদিন গেলাম পাদ্রী মিশন হাসপাতালের সিষ্টারদের আস্তানায়, বৌদিই পাঠালেন তার এক বান্ধবী সিষ্টারের কাছে, বিদেশ থেকে আসা গুড়া দুধ আনতে।
নিরব নিস্তব্ধ গাছ গাছালী ঘেরা সিষ্টারদের হোষ্টেলে ঢুকে কাউকে খুজে পাচ্ছিলাম না। সবাই বিশ্রাম নিচ্ছেন। পা টিপে টিপে বারান্দা দিয়ে এগুচ্ছিলাম। দোতলার সিড়িঁর ঠিক নীচে এক কোনায় একটি জানালা । জানালার একটি অংশ সামান্য খোলা।
ভেতর থেকে মহিলাদের গোঙ্গানোর সামান্য শব্দ আমার কানে এলো। ফ্যানের বাতাসে জানালার পর্দার এক কোন সামান্য নড়ছিল। আমি মনে করলাম এখানে হয়তো কাউকে পাওয়া যাবে যার কাছে সিষ্টার ছবি কোথায় আছে তা জিজ্ঞেস করে নিব। জানালা দিয়ে ওকি দিতেই দেখি তিন সিষ্টার সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে যা করার করে যাচ্ছে। তাদের যিনি উপুড় হয়ে শুয়ে আছে তারই মুখ থেকে সুখের গুঙ্গানি শব্দ আসছে।
এক ঝলক দেখেই আমার মধ্যে ঘেন্ন চলে আসলো। মনে হতে লাগলো খ্রীষ্টান জগত কতো নোংরা । ঘরে ফিরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলাম । ফিরে আসলাম অন্ধকারের দোয়ার থেকে।
পবিত্রতার মোড়কে ঢাকা এসব নোংরামী এখন অবশ্য আর গোপন নেই।
পোপ এবং চার্চের যৌন কেলেংকারীর একটির পর একটি ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর খৃষ্টান জগতেই এখন ভূমিকম্প শুরু হয়ে গেছে। আমার জানা নেই আমার সেই বৌদি এখন কোথায় আছেন। এসব কেলেংকারীর ঘটনা জানার পর বৌদির অনুভতি জানতে আমার খুবই ইচ্ছে হয়।
যে ঘটনা পড়ে আজ আমি এই লেখা লিখতে বসলাম তার লিঙ্ক এখানে দেয়া হলো। এখানে ক্লিক করুন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।