জীবন কখনোই সংগ্রাম বিহীন হতে পারে না মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণরূপে দাখিল হয়ে যাও। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ’ অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধিতা করোনা।
বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ লোক মুসলমান এবং রাষ্ট্র দ্বীন হচ্ছে ‘পবিত্র ইসলাম’।
তাই সংবিধানসহ সরকার, প্রশাসন, আদালত, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মাদরাসা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ সর্বত্র ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম’ উনাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
যেমনিভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি হওয়ার কারণে ‘বাংলা ভাষাকে’ প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার শানে নুযূল সম্পর্কে বলা হয়, ইহুদী সম্প্রদায়ের মধ্যে কয়েকজন বড় বড় আলিম ছিলেন। উনাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি যখন পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন, করে দরবারে নববী শরীফ আসা-যাওয়া করতে লাগলেন; উদ্দেশ্য হলো, পবিত্র ইসলাম উনার সম্পর্কে ইলম হাছিল করবেন।
একদিন তিনি পবিত্র দরবারে নববী শরীফ উনার মধ্যে বসা ছিলেন এমন সময় কিছু উটের গোশত হাদিয়া স্বরূপ আসলো, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরীক্বা বা নিয়ম ছিল উনার কাছে কোনো হাদিয়া আসলে তিনি তার একভাগ স্বীয় পবিত্র হুজরা শরীফ উনার মধ্যে পাঠিয়ে দিতেন। আর অবশিষ্ট ভাগ উপস্থিত লোকদের মাঝে বণ্টন করে দিতেন। যখন উটের গোশত হাদিয়া স্বরূপ আসলো তখন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলকে উটের গোশত বণ্টন করে দিলেন খাওয়ার জন্য। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইহুদীদের জন্য উটের গোশত খাওয়া হারাম ছিল। ইহুদী থাকা অবস্থায় আমি কখনও উটের গোশত খাইনি।
তাই আজকে নতুন করে উটের গোশত খেতে আমার কাছে কেমন যেনো মনে হচ্ছে। দয়া করে আমাকে এ থেকে রুখছত (অব্যাহতি) দান করুন। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তো ওহী মুবারক ব্যতীত কোনো কথা বলেন না। তিনি চুপ করে রইলেন। সেই মুহূর্তে মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করেন।
উটের গোশত খাওয়া ফরয নয়, ওয়াজিব নয়, সুন্নতে মুয়াক্কাদাও নয়। বরং তা হচ্ছে মুস্তাহাব-সুন্নত। এই মুস্তাহাব-সুন্নত থেকে রুখছত চাওয়ার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে দিলেন যে, হে ঈমানদাররা! পবিত্র ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণ দাখিল হয়ে যাও। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা আদেশ ও নিষেধ করেন তা হুবহু পালন করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের জন্য যা এনেছেন তা দৃঢ়ভাবে ধারণ করো আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাকো। অর্থাৎ সবক্ষেত্রে বা সর্বত্র পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি নাযিলকৃত তিনখানা কিতাব- তাওরাত শরীফ, যাবূর শরীফ, ইনজীল শরীফ এবং একশখানা ছহীফা শরীফ উনাদের হুকুম এবং পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মানব রচিত সকল মতবাদ বাতিল ঘোষণা করে উনার যিনি হাবীব, যিনি নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, যিনি কুল-কায়িনাতের নবী ও রসূল, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিদায়েতকারী, সাক্ষ্য দানকারী, সতর্ককারী, সুসংবাদ দানকারী হিসেবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে দিয়ে, পবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে দিয়ে, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে দিয়ে যমীনে পাঠিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের পর উনার প্রতি নাযিলকৃত পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার হুকুম তথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিপরীত অন্য কোনো দ্বীন-ধর্ম ও মতবাদের অনুসরণ অনুকরণ করা বা প্রাধান্য দেয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ অর্থাৎ কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, একদিন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা ইহুদীদের থেকে তাদের কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি, যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি, এর কিছু আমরা লিখে রাখবো কি? হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তোমরা কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছ? যে রকম ইহুদী-নাছারারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি তোমাদের নিকট তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কার পবিত্র দ্বীন নিয়ে এসেছি।
হযরত মুসা আলাইহিস সালাম তিনিও যদি এখন দুনিয়ায় থাকতেন, তাহলে উনাকেও আমার অনুসরণ করতে হতো। সুবহনাল্লাহ!
কাজেই মুসলমান উনাদেরকে প্রতিক্ষেত্রে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম’ উনাকেই অনুসরণ করতে হবে এবং প্রতিক্ষেত্রে ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম’ উনাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনগুলো যদি তাদের দেশে তাদের ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে তাদের ধর্মকে যদি সর্বত্র প্রাধান্য দিতে পারে। তবে মুসলমান উনাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম’ উনাকে কেন প্রাধান্য দিতে পারবেনা এবং কেন দিবেনা?
আমাদের দেশে বাংলা ছাড়া আরো ভাষা থাকার পরও বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে যদি ‘বাংলা’ ভাষা প্রাধান্য পেতে পারে, তবে যে দেশের ৯৭ ভাগ মুসলমান এবং রাষ্ট্র ধর্ম হচ্ছে ‘ পবিত্র দ্বীন ইসলাম’ তাহলে সে দেশে কেন পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রাধান্য পাবে না? অবশ্যই পাবে এবং অবশ্যই পেতে হবে। অর্থাৎ আমাদের দেশের সবক্ষেত্রে সবস্থানে সব বিষয়ে ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম’ উনাকেই প্রাধান্য দিতে হবে।
এটা এদেশের মুসলমানদের ধর্মীয় এবং সাংবিধানিক অধিকার। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।