আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাওয়া ভবনের প্রভাবশালীরা কে কোথায়



হাওয়া ভবন। গত জোট সরকারের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের জয়ী হওয়ার পেছনে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছিল এই ভবন। সে সময় ভবনটির মূল আকর্ষণ ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। নির্বাচনের সময় তার সহযোগী ছিলেন মাহী বি চৌধুরী ও গিয়াসউদ্দিন আল মামুন।

নির্বাচনে জিতে সরকার গঠনের পর ক্রমেই মাহী বি চৌধুরীর সঙ্গে তারেকের দূরত্ব বেড়ে যায়। রাষ্ট্রপতি হিসাবে বি চৌধুরী পদত্যাগের পর মাহীর সঙ্গে তারেকের সব সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। ওই সময় থেকে লাইম লাইটে চলে আসেন হারিছ চৌধুরী, রশিদুজ্জামান মিলস্নাত এমপি, রম্নহুল কুদ্দস তালুকদার দুলু, হাবিব-উন-নবী সোহেল, সাহাবুদ্দিন লাল্টু, রকিবুল ইসলাম, সিলভার সেলিম, লুৎফর রহমান বাদল, মোটা তারেক ওরফে মালয়েশিয়া তারেক, আনোয়ার, ওসি হামিদ, রানী, আশিক ইসলাম, জহিরউদ্দিন স্বপন, মিয়া নুরউদ্দিন অপু, কাজী কামাল এমপি, শাহরিন ইসলাম তুহিন, সাইফুল ইসলাম ডিউক, ইলিয়াছ আলী এমপি, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, নূর আফরোজ জ্যোতি, গাবতলী পৌর চেয়ারম্যান মোরশেদ মিল্টন, ডা. ফিরোজ মাহমুদ ইকবাল, ওবায়দুল করিম, শফিউর রহমান বাবু, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকু, সায়মন আকবর, সাজ্জাদুল ইসলাম জয়, এনামুল হক, সাজ্জাদ হোসেন নাইট, লুৎফুজ্জামান বাবর, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সফিকুল হাসান তৃপ্তি, এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম পিন্টু, ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন, হেলেন জেরিন খান, আসাদুল হাবিব দুলু, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, হালিমা নেওয়াজ সাররী, রাজিব সিরাজ অপু, অনিন্দ ইসলাম অমিত, ফয়সাল মোরশেদ খান, তানভীর ইসলাম, জহিরম্নল ইসলাম চৌধুরী, তাহমিন আক্তার ডেল, খন্দকার আবু আশরাফ, জোবায়েদ হোসেন রানা, আকরাম আলী খান সঞ্জু, আদিুলর রহমান, রম্নম্মন, ইমতিয়াজ আহমেদ এবং হুমায়ুন আহমেদ চৌধুরী। এদের অনেকে ছিলেন চাটুকার ও ধান্দাবাজ। হাওয়া ভবনের চাটুকার ধান্দাবাজরা এখন তারেক রহমানের আশপাশে নেই।

লন্ডনে অনেকটাই নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন তারেক। আর সুবিধাভোগীরা কেউ দেশে, কেউ বিদেশে পালিয়ে রয়েছেন। এদের অনেকেই ছিলেন অযোগ্য, স্বল্পশিক্ষিত। কারো কারো পরিচিতি ছিল অস্ত্রধারী ক্যাডার হিসাবে। দু’একজন উচ্চশিক্ষিত পেশাজীবী ধান্দাবাজ জুটেছিল।

এদের সবাই সুবিধাভোগী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তারেক রহমানকে ব্যবহার করে কতটা অর্থ উপার্জন করা যায় তারা সেই প্রতিযোগিতায় মেতে ছিলেন। বিএনপি জামায়াতের পাঁচ বছর এরাই ছিলেন তারেক রহমানের প্রিয়ভাজন, পরামর্শক ও উপদেষ্টা। হাওয়া ভবনের ব্যক্তিগত স্টাফ ছিলেন ওসি হামিদ ও আনোয়ার। এরা দুজনই হাওয়া ভবনের নাম ভাঙিয়ে তদবির করে এখন বিপুল অর্থবিত্তের মালিক।

তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে বিগত ৫ বছর তারা সর্বত্র দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। ওসি হামিদ ছিলেন পুলিশ বিভাগে মূর্তিমান আতঙ্ক। এক সময় গাইবান্ধার ওসি ছিলেন তিনি। পরে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত হন। পুলিশ বিভাগে নিয়োগ বদলি পদোন্নতিতে তার হাত ছিল অনেক লম্বা।

এই বিভাগে তদবির করে ৫ বছরে শতকোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। তারেক রহমানের ব্যক্তিগত পিয়ন ছিল আনোয়ার। সারাদিন ব্যসত্ম থাকত তদবির নিয়ে। এই আনোয়ারও এখন কোটিপতি। ওয়ান-ইলেভেনের পরে পালিয়ে মালয়েশিয়া চলে যায়।

বর্তমানে উভয়েই বিদেশে অবস্থান করছে। সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ ছিলেন রশিদুজ্জামান মিলস্নাত, জহির উদ্দিন স্বপন, নাদিম মোসত্মফা, নাসের রহমান, কাজী কামাল, নূর আফরোজ জ্যোতি, ইলিয়াছ আলী, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ। অভিযোগ রয়েছে হাওয়া ভবন ভাঙিয়ে এরা সবাই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। ওয়ান-ইলেভেনে জহির উদ্দিন স্বপন ভোলপাল্টে সংস্কারবাদী বনে যান। বাকিদের কেউ দুর্নীতির দায়ে জেলে যান।

কেউ পালিয়ে বিদেশে চলে যান। বর্তমানে স্বপন বাদে সবাই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। মন্ত্রীদের মধ্যে হাওয়া ভবনের অন্যতম পরামর্শক ছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, জিয়াউল হক জিয়া, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সালাউদ্দিন আহমেদ, আমান উলস্নাহ আমান, এহছানুল হক মিলন, উপমন্ত্রী রম্নহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আসাদুল হাবিব দুলু ও আবদুস সালাম পিন্টু। এসব মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী উপমন্ত্রী হাওয়া ভবনের নির্দেশে সব কাজ সম্পাদন করতেন। ব্যারিস্টার হুদা প্রকাশ্যেই বলতেন ‘আমাকে টাকা নিয়ে হাওয়া ভবনে দিয়ে আসতে হয়’।

ওয়ান-ইলেভেনপরবর্তী দুর্নীতির মামলায় সবাই জেলে যান। লুৎফুজ্জামান বাবর ও আবদুস সালাম পিন্টু এখনো জেলে রয়েছেন। জিয়াউল হক জিয়া নিষ্ক্রিয়। বাকি সবাই আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এদের সবাই হাওয়া ভবনকে ব্যবহার করে শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

তরম্নণনেতা সফিকুল হাসান তৃপ্তি ও এমরান সালেহ প্রিন্স ছিলেন হাওয়া ভবনের অন্যতম নীতি নির্ধারক। কিন্তু ওয়ান-ইলেভেনে উভয়েই ভোল পাল্টে সংস্কারবাদী হয়ে যান। অথচ এরা তারেককে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার মালিক হন। এদের দেখলে এক সময় কেবিনেট মন্ত্রীরা পর্যন্ত সালাম দিতে বাধ্য হতেন। সচিবালয়ে তারা ঢুকলে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর স্টাফরা ব্যস্ত হয়ে পড়তেন।

উভয় নেতাই এখন অনেকটা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেছেন। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটান। পেশাজীবীদের মধ্যে হাওয়া ভবনের সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ ছিলেন কৃষিবিদ জাভেদ ইকবাল ও ড্যাব-বিএমএ নেতা ডা. জাহিদ হোসেন। দুই নেতাই দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। এ দুই ধান্দাবাজ-পেশাজীবী সব কাজে তারেক রহমান তথা হাওয়া ভবনকে ব্যবহার করতেন।

ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও কৃষিবিদ জাভেদ ইকবালকে কোথাও দেখা যায় না। তিনি দেশেই গা ঢাকা দিয়ে চলেন। অথচ এরাই একদিন স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রক ছিলেন। তাদের ছিল দোর্দ- প্রতাপ। তারা উভয়েই হাওয়া ভবনের নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন।

তারেক রহমানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীও। এদের মূল নায়ক ছিলেন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। মামুন ছাড়া আরো ছিলেন বাবুল কাজী, অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান, রাজিব সিরাজ অপু, এনামুল হক মামুন, আবদুল্লাহ আল মামুন, আবেদ হাসান মাহমুদ প্রমুখ। গিয়াস উদ্দিন আল মামুন জেলে রয়েছেন। বাবুল গাজী, রাজিব সিরাজ অপু ও এনামুল হক মামুন বিদেশে, বাকিরা সবাই দেশে চুটিয়ে ব্যবসা করছেন।

হাওয়া ভবনে তারেক রহমানের হয়ে অর্থের লেনদেন করতেন তৌহিদুল ইসলাম ওরফে আশিক ইসলাম ওরফে পাপ্পু, রকিবুল ইসলাম ও পিএস মিয়া নূর উদ্দিন অপু্‌। শুধু হাওয়া ভবনকে সাইনবোর্ড হিসাবে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে তারেক রহমানের হয়ে বিদেশে অর্থ পাচারে এই থ্রি স্টার বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ওয়ান-ইলেভেনের পর তারা পালিয়ে ভারতে চলে যান। পরে আমেরিকা ও কানাডায়।

বর্তমানে আশিক আমেরিকায় ব্যবসা করছেন। রকিবুল ইসলাম বকুল দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরে এসেছেন। মিয়া নূর উদ্দিন অপু এখনো পলাতক। পারিবারিক আত্মীয়দের মধ্যে তিন খালাতো ভাই সাইফুল ইসলাম ডিউক, তাহসিন আক্তার ডেল ও শাহরিন ইসলাম তুহিন হাওয়া ভবনের নামে ক্ষমতার দাপট দেখান। এদের মধ্যে ডিউক ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় জড়িয়ে কারাগারে রয়েছেন।

ডেল ও তুহিন বিদেশে পালিয়ে ছিলেন। সম্প্রতি তারা দেশে ফিরে এলেও পলাতক দিনযাপন করছেন। হাওয়া ভবনের আরেক ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলেন জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকু। তিনি বিএনপির সময় পাউবো নিয়ন্ত্রণ করতেন। বর্তমানে অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

অপর পার্টনার ওবায়দুল করিম জালিয়াতি করে ওরিয়েন্টাল ব্যাংককে ধ্বংস করেন। মহাজোট সরকারের আমলেও তিনি চুটিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন ছাত্রদল নেতা শাহাবুদ্দিন লাল্টু। মূলত এই আশীর্বাদ তাকে ছাত্রদল সভাপতি পদ পেতে সহায়তা করে। মামুনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক বিষয় দেখাশোনা করেছেন তিনি।

হাওয়া ভবনের হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দেখাশোনা করতেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ও অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার ডা. ফিরোজ মাহমুদ ইকবাল। দুজনেই শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যান। ডা. ফিরোজ মাহমুদ ইকবাল ও ডা. জোবায়দা রহমান উভয়েই ঢাকা মেডিক্যালের ছাত্র। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হাওয়া ভবনের অঘোষিত মুখপাত্র বনে যান তিনি। বগুড়ায় পাউবো, সওজ, এলজিইডির সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে ৫ বছরে কয়েক শ কোটি টাকা আয় করেন তিনি।

নিজ গ্রাম শিবগঞ্জ উপজেলার আলিয়ারহাটকে ‘মিনি টাউন’ হিসাবে গড়ে তোলেন। তিনি তারেক রহমানকে দিয়ে একদিনে ১৮টি প্রকল্প উদ্বোধন করান। পিতার চেহলামে ৩ লাখ লোক খাইয়ে ঐতিহাসিক রেকর্ড গড়েন। হাওয়া ভবনের এ ক্ষমতাধর ব্যক্তি ওয়ান-ইলেভেনে পালিয়ে যান। বর্তমানে কানাডায় রয়েছেন।

হারিছ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হিসাবে দায়িত্ব পেলেও তার মূল দায়িত্ব ছিল হাওয়া ভবনের সঙ্গে। প্রায় হাজার কোটি টাকার মালিক হারিছ চৌধুরী ওয়ান-ইলেভেনে সিলেট সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে মামাবাড়ি আসামের করিমগঞ্জে চলে যান। পরে সেখান থেকে ইংল্যান্ডে। বর্তমানে সেখানেই চুটিয়ে ব্যবসা করছেন। তারেক রহমানের ব্যক্তিগত খরচের দেখভালও করেন তিনি।

হাওয়া ভবনের অত্যন্ত ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা রকিবুল ইসলাম বকুল। দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়োগ-বদলিসহ বিএনপির সাংগঠনিক কর্মসূচি দেখভাল করার দায়িত্ব ছিল তার ওপর। একই সঙ্গে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিও দেখতেন তিনি। তিনি ছাত্রদলও দেখাশোনা করতেন। তারেক রহমানের পক্ষে বকুল জোট সরকারের মন্ত্রিসভার ভেতর শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন।

প্রশাসনে এরা তারেক রহমান গ্রম্নপ নামে পরিচিত ছিল। মন্ত্রীরা কথা না শুনলে তাকে অকার্যকর করে রাখা হতো। জোট সরকারের ৫ বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। আমিন আহমেদ হাওয়া ভবনের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ছিলেন।

কিন্তু ওয়ান-ইলেভেনপরবর্তী সময়ে তিনি তারেকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করেন। তিনি ১ কোটি টাকা চাঁদা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। অথচ এই ব্যবসায়ীই জোটের ৫ বছর হাওয়া ভবনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বর্তমানে তিনি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। খাম্বা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবুল গাজী, ওয়ান-কম্পোজিট লিমিটেডের পরিচালক এনামুল হক মামুনি, ওবায়দুল কাদের সোহেল, গিয়াস উদ্দিন মামুনের পিএস কামরম্নজ্জামান, হাবুল ও মোটা তারেক সবাই হাওয়া ভবনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

হাওয়া ভবন ভাঙিয়ে তারা একেকজন কোটিপতি বনে গেছেন। কিন্তু ওয়ান-ইলেভেনের পর তারা হাওয়া হয়ে যান। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলে তারা গা ঢাকা দেন। আবার ফিরে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরম্ন করেছেন। বগুড়া জেলার নেতাকর্মী সমন্বয়ে হাওয়া ভবনে একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে।

এর মধ্যে ছিলেন তারেক রহমানের পিএস সাজ্জাদ হোসেন নাইট, তার ভাই সুইট, গাবতলী পৌর চেয়ারম্যান মোর্শেদ মিল্টন, ছাত্রদল নেতা এমআর ইসলাম স্বাধীন, মাহফুজ সিদ্দিকী লিটন ওরফে চাকু লিটন, জেলা বিএনপি সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক ভিপি সাইফুল, মহিলা সাংসদ নূর আফরোজ জ্যোতি, গাবতলী থানা বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান আতিক, সন্ত্রাসী নতুন, ধুনট থানা বিএনপি সভাপতি পলস্নী মামুন, বগুড়া মিনিবাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারম্নক, সাবেক সাংসদ জিএস সিরাজের চাচাতো ভাই গোলাম মাহবুব প্যারিস, সাবেক সাংসদ হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর শ্যালক শামীম চৌধুরী, মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা কবির আহমেদ মিঠু, অস্ত্রধারী ক্যাডার আবু হেনা, দাদন ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, ঘরজামাই শহীদুল ইসলাম বাবলু, অ্যাডভোকেট মাহবুল আল শাহীন, বাস মালিক হামিদুল হক চৌধুরী হিরম্ন। মাহবুবুর রহমান বকুল তারেক রহমান ও হাওয়া ভবন কানেকশন দিয়ে কোটিপতি বনে যান। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তারা পালিয়ে ছিলেন। এখন আবার দেশে ফিরে এসেছেন। আলোচিত-সমালোচিত এই ভবনের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ছিলেন ভবনের কথিত মালিক আলী আসগার লবী ও এমএএইচ সেলিম।

জোটের পাঁচ বছরে উভয়েই দোর্দ- প্রভাবশালী ছিলেন। শত শত কোটি টাকার ব্যবসা বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরম্নদ্ধে। উভয় ব্যবসায়ী জেল থেকে বের হয়ে এসেছেন। বর্তমানে দেশে অবস্থান করে ব্যবসা করছেন। মন্ত্রী-এমপির পুত্রদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে হাওয়া ভবনকেন্দ্রিক।

এদের মধ্যে ছিলেন পাটমন্ত্রী শাজাহান সিরাজের পুত্র রাজিব সিরাজ অপু, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর পুত্র আবিদ হাসান, বন ও পরিবেশমন্ত্রী তরিকুল ইসলামের পুত্র অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সাংসদ এমএ হাসেমের পুত্র ফয়সাল মোর্শেদ খান ও মেজর (অব.) কামরম্নল ইসলামের পুত্র তানভীর ইসলাম। তারা সবাই জোট সরকারের পাঁচ বছর হাওয়া ভবনের ব্যানারে চুটিয়ে ব্যবসা করেন। একইভাবে যুবদল সভাপতি বরকতউলস্না বুলু ও সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম নীরব, মইনউদ্দিন তিতাস, খন্দকার আবু আশফাক ও হেলেন জেরিন খানের বিশেষ পরিচিতি ছিল হাওয়া ভবনের লোক হিসাবে। এসব নেতা এখন দেশে থেকেই রাজনীতি করছেন। কমিশনারদের মধ্যে এমএ কাইয়ুম, আনোয়ারম্নজ্জামান আনোয়ার মুন্সী বজলুল বাসিতের আঞ্জুর বিশেষ পরিচয় ছিল এই ভবনকেন্দ্রিক, তারা এখন রাজনীতিতেই রয়ে গেছেন।

Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.