আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্ষুদিরাম বসু



ক্ষুদিরাম বসু ‘‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি, হাসি হাসি পরবো ফাঁসি দেখবে জগৎবাসী. . . ’’ এই গানটি শুনলে আমাদের বুকের ভেতর একটি চিনচিনে ব্যথা অনুভব হয়। একজন বীরের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে পড়ি। সেই বীর কিশোরকে আমরা সশদ্ধ সালাম জানাই। আমাদের এই বীরের নাম সবাই জানি। কিন্তু খুবই কমই জানি তার সঠিক পরিচয়।

ক্ষুদিবাম বসু আমাদের বীর এবং একজন বিপ্লবী। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে যাঁরা আত্মোৎসর্গ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ক্ষুদিরাম বসু অন্যতম হিসেবে বিবেচিত। ঔপনিবেশিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের সার্বক্ষনিক প্রেরণার চেতনা যুগিয়েছেন তিনি। ক্ষুদিরামের জীবনধারা কেটেছে খুবই কষ্টকর এবং একটি নাটকীয় রঙ্গমঞ্চের শিল্পিত কারুকাজের মতো। ভারতের মেদেনী পুর জেলার হাবিবপুর প্রামে আমাদের ক্ষুদিরামের জন্ম।

বাবা ত্রৈলোকনাথ বসু এবং মা লক্ষ্মীপিয়া দেবী। তাঁর যখন ছয় বছর বয়স তখন তাঁর মা এবং পরের বছর বাবা মারা যান। পিতৃ-মাতৃহীন সাত বছরের ক্ষুদিরাম বড় বোনের কর্তৃক লালিত পালিত হতে লাগলো। ক্ষুদিরাম পড়াশোনায় মেধাবী হলেও তার ঝোঁক ছিলো বেশি কিশোরোচিত দুরন্তপনায়, দুঃসাহসিক কার্যকলাপের প্রতি তার ছিলো প্রচন্ড আগ্রহ। আর অন্যায় বিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর জন্য তার ছিলো সৎ সাহস।

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী ও স্বদেশী আন্দোলন ক্ষুদিরামকে প্রচন্ডভাবে প্রভাবিত করেন। একসময় তিনি লেখা-পড়া ছেড়ে দিয়ে আরও কযেকজন বন্ধুর সাথে বিপ্লবী সত্যেন বসুর এক গুপ্ত সমিতিতে যোগদান করেন। ওখানে নৈতিক ও রাজনৈতিক শিক্ষা গ্রহন করেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভ’মিকা পালন করতে থাকেন। এতে তিনি পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছিলেন।

কিন্তু, অল্প বয়সের বিবেচনায় তিনি মুক্তি পান। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী ও স্বদেশী আন্দোলনের কর্মীদের প্রতি কঠোর সাজা প্রদান ও দমন নীতির কারনে তখনকার কোলকাতার প্রধান ম্যাজিষ্ট্র্রেট কিংসফোর্ড বাঙালিদের কাছে ছিলো অত্যন্ত ঘৃণার পাত্র। সকল বাঙালি ছিলো কিংসফোর্ডের চরম শাস্তির পক্ষে সতর্ক ও ক্রিয়াশীল। ১৯০৮ সালে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি এই দু’জনের উপর দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

কিংসফোর্ডকে হত্যা কররার জন্য। এই সংবাদ গোয়েন্দাদের মাধ্যমে জানতে পেরে তখনকার ব্রটিশ সরকারের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কিংসফোর্ডকে সেশন জজ হিসেবে কোলকাতা হতে দূরে মোজফফর পুর বদলী করা হয়। কোলকাতা ইউরোপেীয় ক্লাবের গেটের কাছে একটি গাছের আড়ালে প্রফুল্ল চাকি আর ক্ষুদিরাম দুইজন এ্যাম্বুশ করে রইলেন। কিন্তু, দুর্ভাগ্য, কিংসফোর্ডের গাড়ির মতো অন্য একটি গাড়িতে তারা ভুল করে বোমা নি্েক্ষপ করেন। এতে একজন ইংরেজ মহিলা ও তার মেয়ে মারা যান।

এরপর পুলিশ সমস্ত কোলকাতা তন্ন তন্ন করে খুঁজে ক্ষুদিরামকে ধরে ফেলেন। তার উপর অনেক নির্যাতন করা হলেও অপর সহযোগী প্রফুল্ল চাকির কোন গোপন তথ্য তিনি প্রকাশ করেননি। তাঁকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হলো। ১৯০৮ সারের ১১ আগষ্ট ক্ষুধিরাম বসু মোজফফর পুর জেলখানায় ফাঁসি মঞ্চের দিকে বীরের মতো এগিযে যান। এবং নিজ হাতে ফাঁসির দড়ি গলায় পড়েন।

পৃথিবীর একজন মানব কল্যান-কামী বিপ্লবী চলে গেলেন , আলোড়ন তুলে গেলেন সারা বাংলায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.