শনিবার চালানো এই হামলায় ৩১ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে মুসলিম ব্রাদারহুড।
ব্রাদারহুডের মুখপাত্র জিহাদ এল হাদাদ রয়টার্সকে বলেন, “তারা আহত করার জন্য জন্য নয় হত্যা করার জন্যই গুলি ছুঁড়েছে। গুলি মাথায় এবং বুকে বিদ্ধ হয়েছে। ”
এরআগে ব্রাদারহুডের পক্ষ থেকে ২৩ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল।
সেনা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে অন্ততপক্ষে ১৭৫ জন আহত হয়েছেন বলেও জিহাদ জানান।
অবশ্য মুসলিম ব্রাদারহুডের দাবি করা হতাহতের সংখ্যা এখনো পর্যন্ত স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এরআগে শুক্রবার দেশব্যাপী আয়োজিত ব্যাপক বিক্ষোভ চলাকালীন বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে অন্ততপক্ষে সাতজন নিহত ও অন্তত কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।
ওইদিন মুরসির বিরুদ্ধে আনা খুনের অভিযোগের তদন্ত শুরু হওয়ার পাশাপাশি দেশব্যাপী তার সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
এসব সহিংসতায় ক্রমেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়া মিশরের রাজনৈতিক বিভক্তি আরো গভীর হয়ে উঠেছে।
এমতাবস্থায় মুরসির প্রধান সমর্থক গোষ্ঠী মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠেছে।
এরই অংশ হিসাবে শনিবার সেনা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর অভিযান চালিয়ে থাকতে পারে।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আল আহরামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদে সেনা সমর্থিত অন্তবর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেছেন, “কায়রোতে ক্ষমতাচ্যুত নেতার সমর্থনে মাস ধরে চলা বিক্ষোভের শিগগিরই অবসান ঘটানো হবে, আইনি পন্থায়ই তা করা হবে। ”
গত ৩ জুলাই ব্যাপক গণঅসন্তোষের জের ধরে মিশরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী।
এরপর থেকে মুসলিম ব্রাদারহুড ও মুরসির অন্যান্য সমর্থকরা তাকে ক্ষমতায় পুনর্বাহালের দাবিতে টানা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে আসছে।
মুরসির ক্ষমতাচ্যুতিকে সেনাঅভ্যুত্থান বলে অভিযোগ করে আসছে মুসলিম ব্রাদারহুড, অপরদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করেছে বলে দাবি করেছে সেনাবাহিনী।
শুক্রবার সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তা আল সিসি’র ডাকে সাড়া দিয়ে মুরসিবিরোধী ব্যাপক সংখ্যাক মানুষ কায়রোর রাজপথে নেমে আসে। তারা সেনাবাহিনীর পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
মুরসির বিরুদ্ধে খুন ও ২০১১ সালে জেলখানায় হামলার অভিযোগের তদন্ত শুরু হওয়ার ঘোষণায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহুডের সংঘাত আরো বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তাদের ইসলামি আন্দোলনকে মুছে ফেলতে সেনাবাহিনী মুসলিম ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু করবে বলে আশঙ্কা করছে ব্রাদারহুডের নেতাকর্মীরা।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী মিশরের দ্বিতীয় প্রধান শহর আলেকজান্দ্রিয়ায় শত শত মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
পরস্পরকে লক্ষ করে ছড়রা গুলি ছোঁড়ে তারা, ছাদে অবস্থান নেয়া লোকজন নিচে অবস্থানরতদের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে।
এসব সংঘর্ষে সাতজন নিহত ও একশরও বেশি আহত হয়েছেন বলে মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। নিহতদের বেশ কয়েকজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এছাড়া দেশব্যাপী আরো কয়েকশত মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।