গ্রামীণ সমাজের বাস্তবতা আর অশ্লীলতার বিপক্ষে অবস্থান।
তিস্তা পাড়ে ভাঙ্গনের খেলা, ছাউনি বিহীন ঘরের মেলা।
বালিকা বধুর বিয়ের সানাই, শুনতে আসুন মিনতী জানাই।
ভাটির টানে ঘুম আসে না , কখন জোয়ার আসে
জোয়ার এলে ঘুম ভেঙ্গে যায় ভাঙ্গন রাহু গ্রাসে।
নব সাজে সাজবো আমি বাসর ঘরের স্মৃতি,
নদীর বানে তলিয়ে গেছে খসিয়ে গেছে সিতি।
রহিমুদ্দির ছোট মেয়ে নাম তার শীরিনা। দেখতে খুবই সুন্দরী , মা মেয়ে বাবা তিনজনের সংসার। বাবা খেয়া নৌকার মাঝি। মাঝে মাঝে জেলেদের সাথে মাছ ধরে জিবীকা নির্বাহ করে।
শীরিনা: মা বাবাই কই দুপরে ভাত খাইতে আইব না।
শীরিনার মা: বিল পাড়ে গেছে , করিম গাজীর জাল বাইব ,মাছ বেশী পাইলে টাহা দিব , টাহা যে কত দরকার ।
শীরিনা: কি এত দরকার আমরা গরীব মানুষ , বাবারে কও তাড়াতাড়ী চইলা আইতে ,বান তুফান আইতাছে মনে অয়।
শীরিনা মা: একটু মুচকি হাসিতে , তোরে বিয়া দেওন লাগবনা ।
শীরিনা লজ্জায় বাগানের দিকে দৌড়ে কেওড়া গাছের নিচে বসে চুলের বেনী করতে করতে গাছে ডাল পানে চেয়ে।
নিজের বিয়ের কথা ভাবে আর ঘুঘু শালিক ময়না টিয়ের বিয়ে দেখে।
দোয়েল পাখির বিয়ে শালিক সেজেছে ধুসর রংয়ের বেনারশীতে। টিয়ে পরেছে গাড় সবুজ রাজশাহী সিল্ক ।
দোয়েল পাখির বিয়ে হবে টুনটুনিদের নাচ
ধুসর রংয়ের বেনারশী শালিক পাখির সাজ।
মাছরাঙার ঐ ঠোট রাঙানী দোয়েল পাখির বিয়ে
সে বিয়েতে অতিথী হবেন ময়না , শালিক , টিয়ে।
গাড় সবুজ রাজশাহী সিল্ক, টিয়ের গলায় মালা
এই সুযোগে ভুরিভোজন কাক জুড়ালো জ্বালা।
মাছরাঙার ঐ রঙ্গিন ঠোটে নব বধুর কপাল চুমি
কুল বাগানে নাচছিলে যে, দোয়ের নামের সেই কি তুমি?
আজকে তোমায় দারুন লাগছে
পেখম তুলে ময়ুর আসছে।
হলুদ হলুদ শাড়ীর মেলা
কুটুম পাখির সাজের বেলা।
ঘুঘুরা সব যুগলবন্দি
কে দিল ভাই এমন ফন্দি।
কোকিল পাখির গানের আসর
শীরিন সুরের স্বপ্নবাসর।
ফিংঙে নাচে নাচের তালে
ময়না দিল তিলক ভালে।
এমন বিয়ের দিন কি আমার(আফসোস)
কপাল গুনে হয় কজানার।
ছাউনী বিহীন বাবার ঘরে
ঘুম আসেনা ভাঙ্গন ডরে।
কখন জানি কাল বৈশাখী
হানা দিবে উল্কা রাগী।
নব বৈশাখ লক্ষজনে
পালন করল বছরক্ষনে।
এমন সময় কান্নার আওয়াজ আর জেলের মিছিল শীরিনার বাবা কালবৈশাখী ঝড়ে নৌকা ডুবিতে মারা গেছে।
সেই রাগে কি বৈশাখ এলো
আমার কুটির উড়িয়ে নিল।
ইলিশ মোদের নিত্য দেখা , পান্তা আসল ভাত
অর্ধ খেয়ে কাটিয়ে দিছি কত শত রাত।
সারা বছর কোথায় ছিলে , জাত কি ছিল তোমার
একদিনেরই উৎসব করে সব করেছ সাবার।
তুমি না হয় বাঙ্গালী হলে আমার হল কি
কাল বৈশাখীর রাগের মাথায় ঢালিয়ে দিলে ঘি।
একদিনেতে বাঙ্গালী হওয়া কে দিল এই রীতি
সারা বছর হিন্দি ছবি পাশের বাড়ীর গীতি।
লক্ষজনের প্রেম যুগলী কোথা থেকে এল
হুড়মুড়ীতে বউ হারিয়ে বৈশাখী সূখ পেল।
উৎসব তোমার কালবৈশাখী অশ্লীলতায় ভরা
ধংসজজ্ঞ মোদের জীবন টর্নেডো আর ক্ষরা।
তোদের পাপে মোদের মরন , কালবৈশাখীর রাগ
তিস্তাপাড়ে দেখে যান ভাই, মাতম সুরের ডাক।
দোয়েল বিয়ে স্মৃতি আমার ,তোদের হবে বিয়ে
নিয়তী তোদের জীবন সঙ্গী , ভাবিস না এ নিয়ে ।
কুলতার দল খেয়েছে মোদের, তোদের কিসের ভয়
দোয়া করিস আমার জীবন তোদের মত হয়।
এসো হে নব বৈশাখ স্বাগতম হে........
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।