আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি ঘুঘু পাখির মৃত্যু

প্রকৃতিপ্রেমিকের ব্লগ

রাত ১:৪৬: বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আজকে বাংলাদেশের খেলা ছিল বারমুডার সাথে। গতরাত থেকেই অধীর আগ্রহে বসে ছিলাম সকালে উঠে ইন্টারনেটে খেলা দেখব বলে। সকালে আধো ঘুমের মাঝে ঘুঘুর ডাক শুনতে পেলাম। শীতের শেষ সময় এখন। ঘুঘুর ডাক তাই অবাক করল না।

ঘুমের ঘোরে অনেক পুরনো ঘটনা মনে পড়ল। আশ্চর্য মানুষের মন। কোন কারণ ছাড়াই মন ঘুরে এল বোনারপাড়ায় সেতু ভাইদের বাসায় বেড়ানোর স্মৃতি। তখন আমি অনেক ছোট, হয়তো ওয়ান বা টু-তে পড়ি। মনে আছে মাখন ভাই এয়ারগান নিয়ে কোথায় যেন যেতেন আর ঘুঘু শিকার করে আনতেন।

আহারে কত ঘুঘু খেয়েছি না বুঝে! বছর দুই আগে তখন আমি হ্যমিলটনে। কানাডায় এসেছি বছর মত হয়। অগাস্টের শেষের দিকে হবে। বিকালের রোদ সোনা ছড়িয়ে দিয়েছে স্টারলিং স্টৃটের চারপাশে। ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে তাই হাঁটতে শুরু করি।

অনেকখানি এসে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। এখানে রাস্তার পাশে বসার জন্য লোহার বেঞ্চ থাকে। অনেকটা আমাদের দেশে বড় পার্কে যেমন সিমেন্টের বাধানো বেঞ্চ তেমন। হঠাৎই একটা ঘুঘু রাস্তার উপরে খুব নিচ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে রাস্তায় পড়ে গেল। ঘটনা একদম আমার সামনে।

ঘুঘুটি ঠিক আমার সামনেই রাস্তার উপর পড়ে ওড়ার চেষ্টা করল। সম্ভবত ডানায় আঘাত পেয়েছে তাই উড়তে পারছেনা। আমি এগিয়ে গিয়ে হাতে তুলে নিলাম। এসে বেঞ্চে বসে দেখতে থাকি আঘাতের পরিমান। আঘাত ততটা মনে হলনা।

কিন্তু হঠাৎই ঘুঘুটি হা করে চোখ বন্ধ করে ফেলল। আমি ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে মুখে ধরলাম। একটুও বোধহয় খেল না। মাথায় পানি দিলাম, কোন সাড়া নেই। আমার হাতের উপরের ঘুঘুটি নিথর হয়ে পড়ল।

ততক্ষণে বাস এসে পড়েছে। নি:শব্দে মৃত ঘুঘুটি ডাস্টবিনে রেখে দিলাম। রক্তমাখা হাত সবার অগোচরে লুকিয়ে আমি বাসে উঠলাম। ঘুঘুটির বুকের রক্তে যেন আমার হৃদয় রঞ্জিত হল।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.