আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী লীগের অর্জিত সাফল্যের প্রচার নেই...



ঢাকা থেকে প্রকাশিত মিডিয়া তালিকাভুক্ত কাগজ সাপ্তাহিক ‘স্বদেশ খবর’। লক্ষ্য করছি পত্রিকাটি অন্যান্য খবরের পাশাপাশি অনেক দিন ধরে সরকারের অর্জিত সাফল্যের প্রচার-প্রচারণায় নিয়োজিত। কিন্তু অত্যন্ত উন্নতমানের নিয়মিত প্রকাশিত এ পত্রিকাটি ঢাকা শহরের পত্রিকা-স্টলগুলোতে ব্যাপক পরিমাণে পাওয়া যায় না। সমগ্র দেশের অন্যান্য জায়গার খবর না হয় বাদই দিলাম। পত্রিকার সম্পাদককে জিজ্ঞাসা করায় উত্তর পেলাম তিনি পর্যাপ্ত টাকার অভাবে পত্রিকা বেশি ছাপতে পারেন না।

উপরন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে উৎসাহী হয় না। অথচ অনেক নিম্নমানের পত্রিকায়ও সরকারি বিজ্ঞাপন যাচ্ছে। এই পত্রিকার সম্পাদকের ভেতর হতাশা কাজ করছে, দুঃখও। তিনি ১২ বছর যাবৎ পত্রিকাটি বের করছেন। কিন্তু সরকারের প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেও প্রত্যাশিত সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে চাহিদা সত্ত্বেও পত্রিকাটি সারা দেশে সার্কুলেট করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

ফলে সরকারের অর্জিত সাফল্যের প্রচার প্রকাশ করেও প্রত্যাশিত পর্যায়ে গণমানুষের নিকট পৌঁছানো যাচ্ছে না। আমরা যদি বলি বিএনপি-জামায়াত জোটের দুর্নীতি-কুকীর্তির বহুল প্রচার দরকার; তাহলে প্রয়োজন হয় একাধিক প্রচার সেলের এবং তা পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এবং নিবেদিত প্রাণ কর্মী ছাড়া সরকারের সাফল্য প্রচার একেবারে অসম্ভব। কেবল তৃণমূল জনতাকে দোষারোপ করে লাভ কি? তাদের যারা বোঝাতে পারে তাদেরই পক্ষে ভোট যায়। অথচ বর্তমান সরকারের বিপুল অর্জন-উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের কিছুই জানে না তৃণমূল জনতা।

এই ব্যর্থতা দলের, এই ব্যর্থতা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের। তবু এই প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ রয়েছে নানাভাবে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী। কয়েক মাস আগে তথ্যমন্ত্রী করা হয়েছে ঝানু রাজনীতিবিদ হাসানুল হক ইনুকে। তাদের দ্বারা আওয়ামী লীগ ও বর্তমান সরকার কতটুকু লাভবান হচ্ছে কিংবা হবে তা জানি না।

তবে গত দুবছর ধরে আওয়ামী সমর্থক অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি এই সরকারের অর্জিত সাফল্য প্রচারের দুর্বলতা নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। দলের প্রচার ও তথ্য দপ্তরের নিষ্ক্রিয়তা এবং অপপ্রচারের সমুচিত জবাব দিতে না পারায় দেশের জনগণের কাছে মহাজোট সরকার সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে। বিরোধী দল এবং সরকার বিরোধী জোট যেভাবে মন্ত্রী, এমপি ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ সম্পর্কে কুৎসা রটনা করেছে, যেভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিশ্বে বিভিন্ন বিষয়ে তিলকে তাল করে প্রচার করেছে তা মোকাবেলা করতেও ব্যর্থ হয়েছে সরকারের প্রেস উইং ও তথ্য মন্ত্রণালয়। উপরন্তু গোয়েন্দা সংস্থার মিডিয়া সেলকে যথাযথ ব্যবহার করতেও সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের পক্ষে নিয়মিত লিখে যাওয়া এক কলামিস্টকে দলটির জনৈক শীর্ষ নেতা বলেছেন আপনারা লিখছেন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে।

এসব নিয়ে সরকারের কোনো আগ্রহ নেই। দুঃখজনক হলেও সত্য সরকারের পক্ষে নিঃস্বার্থভাবে লিখে যাওয়া কলামিস্টদের একটা ধন্যবাদ দেবার মতো দলের কাউকে কোনোদিন দেখা যায়নি। এসব লেখক কখনো দল কিংবা সরকারের কাছ থেকে কিছু পাওয়ার জন্য কিংবা নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য লেখেন না। বরং তারা বিশ্বাস করেন আওয়ামী লীগের মতো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী দল ক্ষমতায় না আসলে দেশ আরো পিছিয়ে যাবে। তবে আমাদের সিনিয়র এক সাংবাদিক ও লেখক সম্প্রতি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না।

তিনি কোনো একটি কাজের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিবের সাহায্য চেয়েছিলেন, তারা উভয়ে তাকে নীতিকথা শুনিয়ে দিয়েছেন। যদিও ঐ উভয় ব্যক্তি আমাদের পরিচিত লেখকের অতি ঘনিষ্ঠজন। এসব বাস্তবতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তবু আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষেই লিখতে চাই। কারণ এই দলটি ব্যতীত সাধারণ মানুষের মঙ্গল চিন্তা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল করে না। আর গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এই দলটিই লালন-পালন ও ধারণ করছে।

বর্তমান সরকারই দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারার সূচনা করেছে। এজন্য আওয়ামী সমর্থিত বুদ্ধিজীবীরা নির্বিকারভাবে বর্তমান মহাজোট সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরিয়ে দিয়ে হরহামেশায় সমালোচনা করেন। পক্ষান্তরে বিএনপি বুদ্ধিজীবীদের ক্ষেত্রে বিএনপির কর্মকা-ের সমালোচনা অসম্ভব বলেই মনে হয়। সমালোচনা সহ্য করার মতো শেখ হাসিনার যে সহিষ্ণু ক্ষমতা আছে তা খালেদা জিয়ার নেই। রাজনৈতিক গণতন্ত্রে সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক অনিবার্য।

আর এসবই চর্চিত হচ্ছে বর্তমান সরকারকে কেন্দ্র করে। গণমাধ্যম স্বাধীনতা ভোগ করছে বলেই সরকারের যেকোনো ত্রুটি বিচ্যুতি সঙ্গে সঙ্গে জনগণের কাছে উন্মোচিত হচ্ছে। চলতি বছর দিগন্ত ও ইসলামী টিভি বন্ধ করা হয়েছে মূলত হেফাজতে ইসলাম ও মৌলবাদী কর্মকান্ডে উস্কানি দেওয়ার জন্য। এরই মধ্যে এপ্রিল মাসে আমরা দেখলাম অতি অল্প ব্যয়ে দেশের দক্ষ জনশক্তি বিদেশে যাচ্ছে। বিদেশে কাজের জন্য এই স্বল্প ব্যয়ে বিদেশ গমন দেশের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত।

কারণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান সরকার আমলাদের প্রাধান্যকে কমিয়ে এনেছেন। যোগাযোগমন্ত্রীর যখন তখন আমলাদের কর্তব্য পালনে অবহেলাকে সমালোচনা ও অর্থমন্ত্রীর আমলাদের বিষয়ে পছন্দ-অপছন্দ ও স্থানান্তর এর প্রধান উদাহরণ। ইতোপূর্বে বর্তমান সরকারের সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থানের প্রশংসা করা হয়েছে সারা বিশ্ব জুড়ে। কারণ ধর্মীয় মৌলবাদের শেকড় উৎপাটনে বদ্ধপরিকর এই সরকার।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ হওয়ায় এদেশ সম্পর্কে বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশসমূহ ইতিবাচক ধারণা পোষণ করা শুরু করেছে। ৬ জুলাই অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ভোট দেওয়া সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সুস্থ ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছে। এর আগে ১৫ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশকে আরো একবার বিশ্বের সামনে ইতিবাচক ভাবমূর্তিতে তুলে ধরেছে। অথচ কিছুদিন আগেও নানা রকম নেতিবাচক ঘটনা, সমস্যা ও সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তলিয়ে যেতে বসেছিল। উক্ত পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পূর্বে ক্রিকেটের ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারি, তার আগে রানা প্লাজা ধসের ঘটনা কিংবা একই সময়ে দেশের মধ্যে বিরোধী দলের হরতাল ও নাশকতা অথবা জামায়াত-শিবির ও হেফাজতে ইসলামের তা-ব দেখে মনে হয়েছিল দেশ বুঝি গৃহযুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে।

আশ্চর্যজনকভাবে সেসব পরিস্থিতি পাল্টে গেছে বর্তমান সরকারের সময়োচিত সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে। অন্যদিকে কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল লন্ডনের বিখ্যাত ‘দি ইকোনমিস্ট’ পত্রিকা। অথচ সাম্প্রতিককালে বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক সংবাদ। ‘এ দেশের মাটিতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানো কঠিন’- এই বার্তা চলতি বছরের শুরুর প্রথম সাড়ে ৫ মাসের সবচেয়ে ইতিবাচক সংবাদ। সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের মাটিতে কাজ চালানো সন্ত্রাসীদের জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে।

বৈশ্বিক সন্ত্রাস নিয়ে গত ৩০ মে ওয়াশিংটনে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়। ২০১২ সালের পরিস্থিতি নিয়ে ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন টেরোরিজম ২০১২’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনটি করা হয়েছে। পাশাপাশি বিরোধী দলের সাংসদরা সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দেয়ায় সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনের পথও উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যদিও প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকেই বলেছেন বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ-আলোচনার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবু আমরা আশাবাদী।

১৫ জুলাই কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম এবং ১৭ জুলাই আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সাজার রায় ঘোষিত হওয়ায় মানুষ আশা করছে এই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে। আর রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের ক্ষেত্রে ইতিবাচক কার্যক্রমের প্রচার ও প্রশংসা করা আমাদের মতো সাধারণ জনগণের উচিত বলে মনে করি। মার্কিন প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের প্রশংসা করার পর পরই ১১ জুন জাতীয় সংসদে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) বিল ২০১৩ পাস হলো। উল্লেখ্য, বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘সন্ত্রাস দমন আইন, ২০০৯’ পাস করে। সেই আইনটিকে যুগোপযোগী করার প্রয়োজন দেখা দেয় বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের ধরন দ্রুত পাল্টানোর ফলে।

এজন্য সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থা এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি) এবং ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) মানদ- অনুসরণ করতে সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এরপর গতবছর এক দফা আইনটি সংশোধন করা হয়। কিন্তু তারপরও আরও কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক মহল থেকে অনুরোধ আসে। এসব বিষয় যুক্ত করতেই সরকার আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত বিলটি পাস করা হয়েছে।

এই বিলের গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ইন্টারনেট ভিত্তিক সন্ত্রাসী কর্মকা- প্রতিরোধে বাস্তবসম্মত ধারাসমূহ অন্তর্ভুক্তি। কোনো সন্ত্রাসী ব্যক্তি বা সংগঠন ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকা- করলে সাক্ষ্য আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, এ-সংক্রান্ত তথ্যগুলো প্রমাণ হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা যাবে। অন্যদিকে এই বিলে জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ধারা যুক্ত হয়েছে। আল-কায়দার সম্পদ বাজেয়াপ্ত, অস্ত্র বিক্রি ও ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং জঙ্গিবাদে অর্থায়নে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নেওয়া দুটি প্রস্তাবও আইনে পরিণত করা হয়েছে। সন্ত্রাস দমনের নামে এর আগে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আওয়ামী লীগকে দমন করেছিল।

পক্ষান্তরে বর্তমান সরকারের আমলে প্রকৃত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অবস্থানই বিশ্বব্যাপী সরকারের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। খালেদা-নিজামী জোট আমলে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ পরিচালনাকালে হার্ট অ্যাটাকের নামে ৫৮ জন এবং ক্রসফায়ারের নামে র‌্যাব ও পুলিশ কর্তৃক ২০ মে ২০০৬ পর্যন্ত ৬২০ জন মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসমূহের হেফাজতে কয়েকশত মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশতাধিক স্থানীয় প্রভাবশালী, ত্যাগী ও সৎ নেতা-কর্মীকে ক্রসফায়ারে হত্যা এবং এসব হত্যাকা-ের মামলা গ্রহণ না করা; বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- সম্পর্কে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও এই ধারা অব্যাহত থাকে। জোট সরকারের নির্দেশনায় বিনা বিচারে মানুষ হত্যার জন্য যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে অভিযোগ উত্থাপন এবং তাদের বিচার করা যাবে নাÑ এই মর্মে ‘যৌথ অভিযান দায়মুক্তি’ আইন পাশ করা হয়, যা সংবিধানের মৌলিক চেতনার পরিপন্থি ছিল।

সুখের বিষয় বর্তমান সরকারের আমলে হাইকোর্ট আইনটি বাতিলের জন্য রুল জারি করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে ব্যবহার করা এবং বিরোধী দলকে (আওয়ামী লীগকে) নির্মূলের নানা ঘটনা বিবেচনায় রেখেও বলা যায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার রয়েছে ব্যাপক সাফল্য। জঙ্গি সংগঠন জেএমবি’র নেতাদের গ্রেফতার ও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীসহ অন্যান্য মৌলবাদী সংগঠনকে আইনের কাছে উপস্থিত করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা। বর্তমান মহাজোট সরকারের এই ধরনের সাফল্যের কথা ক্রমধারায় লেখা যায়। হয়তো আমি লিখে যাব।

তাতে আওয়ামী লীগের উপকার হবে কিনা জানি না। কিন্তু আমাদের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী এখনো নিরক্ষর তাদের কাছে সরকারের অর্জিত সাফল্য বোঝানোর জন্য টিভি মিডিয়াও অন্যতম মাধ্যম হতে পারে। খুব সহজে উন্নয়নের নজিরগুলো তাদের সামনে উপস্থিত করা গেলে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের সমুচিত জবাব দেওয়া সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস। এক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াকে ইতিবাচক খবর প্রচারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের প্রতিটি দপ্তরকে সক্রিয় করা আবশ্যক।

আর দলের প্রচারকর্মীদের শ্রমের প্রতি সম্মান দেখানো একান্ত প্রয়োজন; শীর্ষ নেতারা এক্ষেত্রে উদাসীন রয়েছেন। তাদের মনোযোগ ছাড়া আওয়ামী লীগের অর্জিত সাফল্যের কথা জনগণ জানতে পারবে কি? লেখাটি মিল্টন বিশ্বাস এর, তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.