ভালবাসা মানে অন্যের ভালত্বে বাস করা
আমি ছিলেম ছাতে,
তারায় ভরা চৈত্র মাসের রাতে ।
হটাথ মেয়ের কান্না শুনে ,উঠে
দেখতে গেলাম ছুটে ।
শিরির মধ্যে যেতে যেতে
প্রদীপ টা তার নিভে গেছে বাতাসেতে।
শুধাই তারে "কি হয়েছে বামী"?
সে কেদে কয় নিচে থেকে হারিয়ে গেছি আমি
মা যেমন একটি বিশাল শব্দ তেমনি সন্তান ও তাই.সন্তান ভুমিষ্ট হয়ে যে শব্দ টি উচ্চারণ করে তা হচ্ছে মা একজন শিক্ষিত আলোকিত মায়েই পারবে একজন আলোকিত সন্তান দিতে
এই ক্ষেত্রে বাবা-মা দুজনের ভূমিকাই আছে ব্যতিক্রম থাকে সেটা ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ছাড়া আর কিছু নয় একটু বলি মায়েরা কি চান তাদের সন্তানটি কেমন হবে এ নিয়ে জরিপ করা হয়েছ জরিপে বেছে নেয়া হয়েছিল জাপান চীন তাইওয়ান দক্ষিন কোরিয়া ও তাইওয়ানের পাচটি বড় শহর । বেনেসি হোল্ডিংস পরিচালিত ওই জরিপে দেখা যায়, টোকিওর মায়েরা চান তাদের সন্তান ধনী বন্ধুদের সঙ্গে মিশুক বেইজিংয়ের মায়েরা চান সন্তানের্রার্ কমক্ষেত্রে তাদের প্রতিভার ঝলক দেখাক।
এক্ষেত্রে সিউলের মায়েরা সন্তানের কাছে নেতৃত্বগুণ আশা করেন। সাধারণত টোকিওর মায়েরা সন্তানদের মানবিক গুণাবলী বিকাশে জোর দেয়, যেখানে অন্য মায়েরা সন্তানের কাছে সাফল্য প্রত্যাশা করে। তবে সব শহরের মায়েরাই চান তাদের সন্তানেরা কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা দেখাবে ও অন্যরা তাদের শ্রদ্ধা করবে, আর এক্ষেত্রে তাইপের মায়েরা সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম এমন কর্মদক্ষ সন্তান চান। সিউলের মায়েরা চান সন্তানেরা নেতৃত্ব দেবে ও টাকা উপার্জন করবে।
এখন আমি নিজেকে প্রশ্ন করছি আমি কি চাই ?আমাদের চাওয়া অনেক থাকে যেমন আমার বাবা তার যা ইচ্ছে হয়েছিল তাই করাতে পেরেছিলেন আমাকে কিন্তূ আমি মন থেকে এটা চাইনি তাই বলে যে ভুল করেছি এটা বলবনা ।
আমি চাই আমার সন্তান সবার সাথে মিশুক ভালো মন্দের মাঝ থেকে বেছে নিক ভালো দিক টা এখানে মায়ের ভুমিকা অনেক বড় কারণ মা তার সব চেয়ে কাছের বন্ধু.।
আমি আমার ছেলের কথা বলছি যে আমাকে সব সময় ব্যস্ত রাখে আমার ভাবনায় আমার কাজে চিন্তায় চেতনায় মিশে আছে ও । বাড়ি যাব তো লিফট এর বাইরে পা দিয়েই যে বেরিয়ে আসে এক হাত এ জড়িয়ে ঘরে ঢুকি বা বাড়ির দরজা খুলেই যে মুখ সবার আগে দেখি সে আমার সন্তান ।
ওর বয়েস যখন ৩/৪ তখন কত গল্প যে বলতাম রাশান উপকথা থেকে রূপকথার রাজপুত্তর সব আর গান খেতে, ঘুম পারাতে সব সময় যেমন,
চন্দ্র যে তুই মোর সুর্য যে তুই
আমার এ আঁখিতে তারা যে তুই
অথবা ...
টাট্টূ ঘোড়া পাড়লো ডিম শিয়াল দিল তা
দুদিন পরে বের হলো এক কানাবগীর ছা
বা-বা-বা, বা-বা-বা। ।
অথবা বাঘের বিয়ে ,কেনারাম বেচারাম এর ছড়া কবিতা আমি ঢাকার এমন কোনো জায়গা বাধ দেয়নি এনে দিয়েছি ওকে পরে শুনিয়েছি
কারণ এসব যেমন আমার প্রিয় তার ও প্রিয় ও তো আমাকে কাঁদতে দেখলেই বলবে,
শ্যমলা দের মেয়ে দুটো পথে বসে কাঁদে
আর কেঁদোনা আর কেঁদোনা
ছোলা ভাজা দেব,
আর যদি কাদো তবে তুলে আছাড় দেব।
হা হা
আস্তে আস্তে সময়ের সাথে সব পরিবর্তন হতে লাগলো তাকে গান শোনাতাম ,
বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই মাগো আমার শোলক বলা কাজলা দিদি কই কখনো নিজের মনেই গাইতাম
"মাঝ রাত এ ঘুম ভেঙ্গে যায়" বা "মরমিয়া তুমি চলে গেলে বা আধো রাত এ যদি ঘুম ভেঙ্গে যায় মনে মরে প্রিয় "
হয়ত ঘুমিয়ে পরেছে কি চোখ বুজে আছে বোঝার উপায় নেই ।
অনেক পরে মায়ের এই শিক্ষা সে রপ্ত করেছে তার রুম এর বুক সেল্ফ ভর্তি বই ওর জন্মদিন এ আমি বই দেই কারণ ওটাই ওর সব চেয়ে ভালো সঙ্গী । আমার সোনামনিটা এখন বড় হচ্ছে এখন মা ওকে ঘুম পারবে না ও মাকে।
হয়ত বসে একাকী বেলকনিতে এসে বসে পড়বে গান গাইবে সাদা রঙের স্বপ্ন গুলো..বা মায়ের কোলে মাথা রেখে চুপ করে নিশব্দের গান ।
এসব কষ্টের গান কেন ও কি আমার মতন হবে।
আমি ভয় পাই ওকি আমার মতন অনুভুতি প্রবন হবে ? কিন্তূ কেন এর জন্য জীবনে আমি কম খেসারত দেইনি । হে খোদা ও যেন আমার মত না হয় । এটাই আমি সব সময় মনে মনে বলি.।
ওকে শিখাই রবি ঠাকুরের কবিতা,
সত্য যে কঠিন
কঠিনেরে ভালবাসিলাম-
সে কখনো করেনা বঞ্চনা
আমার এই নরম মনের খেসারত কম দেইনি আমি ।
সুন্দর কথাকে দুর্বলতা ভাবে কিন্তূ ও এমন হবে না ।
সেদিন ছাদে চাঁদের আলোয় আমি আমার ছেলে আমার বোন ওর ছেলেরা চাঁদ দেখছিলাম আমরা গান কবিতা এসব করছিলাম।
ওকে বললাম গা না মা একটা ও পড় পড় বাপ্পা মজুমদারের পরী গান টা আরো আরো গাইলো আমি শুনছিলাম তন্ময় হয়ে ভাবছিলাম আমাদের ভবিষ্যত!!!
হে বিধাতা রেখে যাব এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে ওকে একটু ছায়া দিও সুন্দর পথ দেখিও .।
আমিও গাইলাম..ও বলল আমি আমার মায়ের প্রিয় গান গুলো শোনাচ্ছি আমি অবাক হলাম কি করে পারল সে মাঝ রাত এ থেকে শাওন ও রাত এ যদি .আমি স্তব্দ হয়ে বসেছিলাম হার্ট বিট বেড়ে গেল এসব কখন শিখল !!!!
ও প্রায় মন খারাপ দেখলে জড়িয়ে ধরবে বলবে কেন মন খারাপ.তখন হেসে দেয়া ছাড়া কি আর করা যায়...রুম ঢুকলেই আমার গাল টেনে দেবে
হয়ত ছুটির দিন রান্না ঘরে রান্না দেখি ওর চিত্কার হাতে খুন্তি কপালে ঘাম ওর চিত্কার বন্ধ এবার প্রসঙ্গ পরিবর্তন তোমার এসব করতে যাওয়ার কি হলো.।
আমার সন্তান কি হবে এ প্রশ্ন আমার তার কাছে ।
আমি তাকে দিতে চাই ভালবাসায় স্নেহে ঘেরা এক পৃথিবী । এই সব কিছুর মাঝে থেকে সেই বেছে নেবে কোনটা ভালো কোনটা মন্দ ।
আমার মতন আবেগ প্রবন যেন না হয়..বাস্তব টা কে জানতে হবে তাকে ।
কারণ যে পৃথিবীতে তাকে একা রেখে যাব তাকে নিজের বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার দায়িত্ব তার আমরা আছি সহায়ক হিসেবে ।
এমন সব ছড়া কবিতা আর গান এ ভর পুর ছিল ওর পৃথিবী আর আমি ছিলেম ওর নিত্য খেলার সঙ্গী এখনো আছি অফিসে দেরী হলে কেন দেরী হচ্ছে ।
আর সেদিন তো ফিরেই বৃষ্টি দুজনেই ছাদে খুব করে ভিজলাম বিদ্যুত চমকের সাথে আমি ভয় পাই ও আমাকে অভয় দেয় ।
পাগল নই অনুভুতিশীল হয়ত কি করব এ বিধাতা প্রদত্ত।
জীবন অনেক সুন্দর একে উপভোগ করতে শিখতে হবে নিজেকে উপযুক্ত হতে হবে । শিখতে হবে কি করে লড়াই করে বাঁচতে হয়.।
আজ বড় বেশী নস্টালজিক হয়ে যাচ্ছি.আবার যদি সেদিন গুলো ফিরিয়ে আনা যেত সেদিনের ভুল গুলো ঠিক করে নিতাম ।
আমার সন্তান আমার জীবন আমার পৃথিবী ।
আমার সন্তানের জন্য রেখে যেতে চাই আলোকিত এক পৃথিবী যেখানে সবুজ প্রান্তর থাকবে ,রক্তিম গোধুলি থাকবে ,থাকবে পাখির কলকাকলিতে ভরা নতুন সকাল ।
আজ খুঁজে ফিরি সেই ছোট্ট বাবুনি কে ওর ঘাড়ে মুখ গুঁজে ..চুলে মুখ ডুবিয়ে খুঁজে ফিরি সেই সেই সব দিন গুলোকে ।
ওকে বলতে ইচ্ছে হয় তোকে দিলাম একটা নতুন জগত মনের মতন গড়ে নিস । যেখানে সব কিছুর মাঝেই ভালো থাকবি আনন্দে থাকবি ভালবাসায় থাকবি .আর আমি দূর আকাশের শুকতারা তো হয়ে দেখব ।
একটা আলোকিত পৃথিবী চাই, চাই বাস যোগ্য পৃথিবী ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।