"হারিয়ে গিয়েছি, এই তো জরুরী খবর ... "
সকাল ৯:০৭
শহরটির প্রধান ফটকের একটা ছোট্ট অংশ খুলে গেল। এক এক করে ভেতরে প্রবেশ করছে তারা। এদের মধ্যে কেউ মধ্যবয়সী পুরুষ অথবা ১৬/১৭ বছরের কিশোর নয়ত আটপৌরে শাড়ি পরিহিতা কোনও রমনী। হাতের ব্যাগগুলো কাছাকাছি কোথাও রেখে তারা খুঁজে নেয় নিজ নিজ অবস্থান।
সকাল যখন শেষের পথে- ১১:৩৮
যন্ত্রশহরের অলি-গলি ধরে হাঁটছি।
পায়ের তলায় কয়লা রঙের বালিগুলো সরে সরে যাচ্ছে। হাঁটতে হাঁটতে একটি গলির শেষ মাথায়-
-“ভালো আছেন?”
-“জ্বি। ”
-“শুনেছি টুকরোগুলো জুড়ে দিয়ে এটার একটা সম্পূর্ণ রূপ দিতে আপনি অনেক দক্ষ। ”
একথা শুনে লাজুক হাসে সে। একটু দূরেই দাঁড়ানো সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত ব্যক্তিটির কাছ থেকে জানা গেল, স্নিগ্ধ হাসির অল্পবয়সী মেয়েটির মাদকাসক্ত স্বামীর কথা, সপ্তাহ শেষে যে এই মেয়েটির উপার্জিত অর্থ পাই পাই করে বুঝে নেয়।
দুপুর ১:০০
পাশের কলপাড়ে শোরগোল শোনা যাচ্ছে। হাতের ধুলো-ময়লা পরিষ্কার করে বোতলে খাবার পানি ভরতেই সেখানে এত ভিড়।
মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতি।
দুপুর শেষে- ৩:৩৪
বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহের যন্ত্রটি বিকট শব্দে তার উপস্থিতি জানান দিয়ে চলেছে।
আবারো বিদ্যুৎ বিভ্রাট!
বিকাল ৪:২৭
আপাতত বিদ্যুৎ সরবরাহকারী যন্ত্রের শব্দবিরতি।
তবে বেসুরো আরও কিছু যন্ত্রের বিকট আর্তচিৎকারে শ্রবণযন্ত্র মৃত প্রায়।
সন্ধ্যা ৬:২২
কলপাড়ে আবারও শোরগোল। এক টুকরো সাবান ঘুরছে মানুষগুলোর হাতে হাতে। সারাদিনে অর্জিত কয়লা, ধুলোগুলোকে সাবানের ফেনায় পালা করে বিসর্জন দিতে ব্যস্ত সবাই। তুলনামূলকভাবে বয়স্ক মানুষগুলোর ভিড় কমে গেলে কিশোরগুলো মেতে ওঠে খুনসুটিতে।
শহরের যন্ত্রগুলোকে ঘষে-মেজে মসৃণ করতে করতে তারাও যে যন্ত্রে পরিণত হয়নি দেখে ভালো লাগলো।
এক এক করে শহর ছাড়ছে সবাই ...
রাত ১০:১২
অন্ধকারে দানবের মত ছায়াগুলো নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে। দিনে যেখানে বিপুল শব্দের উৎসাহে শ্রবণযন্ত্র উত্তপ্ত, রাতে যেন ঠিক ততগুণ নীরবতা আঘাত করে শহরের দেয়ালে দেয়ালে।
দূরে কোনও এক গলির মাথায় দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে থাকা নৈশপ্রহরী নিজের অবস্থান জানাতে গেয়ে ওঠে আঞ্চলিক কোন গান অথবা বেজে ওঠে তার আঙুলের ফাঁকে ধরে থাকা হুইসেলটি।
পেছনে পেছনে আলো হাতে এগিয়ে আসছে আরো একজন।
খোলা জায়গায় আমাকে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখে সেও থেমে যায়। অপেক্ষা করতে থাকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে।
হালকা হিম বাতাসে শন শন করে মাথার উপরের ইউক্যালিপ্টাসের পাতাগুলো যেন বলে ওঠে, “আমরাও আছি জেগে। ” সেগুন, মেহগনী আর সুপুরি পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয় চাঁদটা। উপরের দিকে তাকাতেই ফিকে হয়ে যাওয়া অন্ধকার চোখে পড়ে।
এখানে কৃত্রিম আলোর আধিপত্য নেই; তাই তো চাঁদ হাসে দ্বিধাহীন হাসি!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।