রঙ্গিলা বন্ধুরে....... i_mahmud2008@yahoo.com
ইসমাইল মাহমুদ
শনিবার রাতে শ্রীমঙ্গলে বৈশাখী মেলায় এসে রহস্যজনক কারনে মর্মান্তিকভাবে নিহত আলতাফ হোসেন (৩২) এর পরিবারে চলছে শোকের মাতম। নিহত আলতাফের মা রাবেয়া খাতুন (৭০) তার জীবন সায়ান্বের শেষ প্রান্তে এসে আদরের বড় ছেলেকে হারিয়ে পুরোপুরি নির্বাক। তার সদ্য বিধবা স্ত্রী শফিকুন্নাহার (২৫)’র আহাজারিতে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে। দুই পুত্র শ্রীমঙ্গল বর্ডার গার্ড শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নার্সারী-২ শ্রেণীর ছাত্র জয় মিয়া (৭) ও নিহাদ মিয়া (৪) অবুঝ শিশু হলেও তারা বাবার মৃতদেহ এবং বাড়িতে হাজার হাজার মানুষের আগম দেখে কিছু একটা হয়েছে তা অনুমান করছে। গতকাল রোববার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার শেখ রাসেল শিশু পার্কে অনুষ্ঠিত বৈশাখী মেলার সমাপনী দিবসে রহস্যজনক কারণে নিহত আলতাফ হোসেনের বাড়ি উপজেলার আশীদ্রোণ ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামে গিয়ে এমনই দৃশ্যই পরিলক্ষিত হলো।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর গ্রামের মৃত তোরা মিয়ার ৩ ছেলে ২ মেয়ের মধ্যে কৃষিজীবি আলতাফ হোসেন (৩২) জ্যেষ্ঠ্য সন্তান। তার ছোট ভাই টেনু মিয়া ২ বছর পূর্বে পহেলা বৈশাখে স্টোক করে রাস্তায় পড়ে মৃত্যুবরণ করে। বোন মায়া বেগম ও ছায়া বেগম বিবাহীত। অপর ভাই সর্বকনিষ্ট কামাল মিয়া ঢাকায় একটি গার্মেন্টেস এ কর্মরত। শনিবার সন্ধ্যায় আলতাফ হোসেন শ্রীমঙ্গল বৈশাখী মেলা দেখতে যায়।
একটি দেহজীবি নারীকে নিয়ে মেলা প্রাঙ্গনে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে মৃদু লাঠিচার্জ করে। এতে আলতাফ নাকে আঘাত পেয়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে মেলায় আসা লোকজন তাকে শ্রীমঙ্গল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলতাফকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকার আরজু মিয়া জানান, মেলা প্রাঙ্গনে উত্তেজনা দেখা দেবার পর পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
এতে আলতাফ নাকে আঘাত পেয়ে মাটিতে পড়ে যাবার পর পুলিশ ফায়ার ব্রিগ্রেডকে ভবর না দিয়ে রিক্সাযোগে আলতাফকে হাসপাতালে পাঠায়। ওই সময় ট্রেন আসার কারণে রেল গেইট বন্ধ থাকায় মেলা প্রাঙ্গন থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লাগে। যদি ফায়ার ব্রিগ্রেডের গাড়ি অথবা এ্যাম্বুলেন্স আনা হতো তবে হয়তো আলতাফকে বাঁচানো যেতো।
নিহতের সদ্য বিধবা স্ত্রীর বড় ভাই উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের মো. শাহজাহান জানান, মেলা প্রাঙ্গনে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তার ছোট বোনের স্বামী আলতাফ মারা গেছে। এ বিষয়ে তিনি একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন।
তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর তিনি আইনী প্রক্রিয়ায় যাবেন বলে জানান।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ জানান, মেলা প্রাঙ্গনে উত্তেজনা প্রশমনে পুলিশ পদক্ষেপ নেয়। এ সময় প্রচন্ড ভিড়ে আলতাফ দৌড়াতে গিয়ে চলন্ত নাগরদোলায় গিয়ে পড়ে। এত সে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায়।
শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মনিরুজ্জামান মজুমদার জানান, পুলিশের লাঠির আঘাতে আলতাফের মৃত্যু হয়নি।
প্রচন্ড ভীরের মধ্যে আলতাফ চলন্ড নাগরদোলায় পড়ে গিয়ে মারা যায়।
০১৭১৫১৭১৯৫০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।