ব্লগ পড়ছি প্রায় এক বছরের ও বেশি সময় ধরে কিন্তু এখনো কারো ব্লগে মন্তব্য করতে পারি না, কেননা নিয়মিত ব্লগ লেখা বা ব্লগে বসে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হয়না। এই শিরোনামে অনেকেই ব্লগ লিখেছেন। তাদের যুক্তি ও দেখিয়েছেন। আমি যেহেতু কারো ব্লগে কমেন্ট করতে পারি না, তাই একটা লিঙ্ক আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্যেই আজকের এই লেখাটি। অনেকে বিরক্ত হতে পারেন দেখে আমি আমার লেখাকে বিস্তারিত করবো না, শুধুমাত্র কয়েকটা লিঙ্ক শেয়ার দিতে চাই।
এই সম্পর্কে ” সূর্য ”ভাই ১লা এপ্রিল সকালেই একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। যারা সেটি মিস করেছেন তাদের জন্য সেটির লিঙ্ক হল:
আসলেই কি ১লা এপ্রিল মুসলমানদের জন্য বেদনার দিন?
অন্যান্য ব্লগ ঘাটতে গিয়ে, যেহেতু আমি টেকটিউনস এর একজন নিয়মিত পাঠক, সেখানে পেলাম আরেকজনের উল্টো লেখা..সেটির লিঙ্ক হল:
১লা এপ্রিল— (এপ্রিল ফুল) মুসলমানদের বেদনার দিন(আপডেটেড)
মত ও ভিন্ন মত দুটোই আছে..কিন্তু কোনটা আমরা সত্যি হিসেবে জানব? ”সূর্য’ ভাইয়ের (১ম লিঙ্কটা) ব্লগের শেষ কমেন্ট টা পড়ে দেখুন।
সিষ্টেম ইন্জিনিয়ার বলেছেন: চিমা মস্তকে হুল হুল বলেছেন: ঘটনা দু:খজনক, তবে কতটুকু সত্যি তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে।
যদি ঘটেও থাকে, তবে তা ঘটেছে অনেক পরে - ১৫ শতাব্দীতে। এপ্রিল ফুল আরো কয়েক শতাব্দী আগে থেকেই প্রচলিত ছিলো।
প্রাচীনকালে সম্ভবত: এপ্রিল মাসে বছর শুরু হতো। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করার পর তা বদল করে জানুয়ারীতে নতুন বছর শুরু করা হয়। তবে অনেক মানুষ নতুন ক্যালেন্ডারের ব্যাপারে জানতো না - তারা এপ্রিলকে নববর্ষের মাস মনে করে উৎসব করতো। জানুয়ারী-ওয়ালারা এই এপ্রিল-ওয়ালাদেরকে ঠাট্টা করার জন্য অনেক মজাটজা করতো। এটাই পরে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এপ্রিল ফুল নামে।
এছাড়া প্রাচীন রোমানরা আরো কয়েক হাজার বছর আগে থেকেই এপ্রিলে স্প্রিং ফেস্টিভাল পালন করতো। হিন্দুদের হোলী উৎসবও সুপ্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত একটি স্প্রিং ফেস্টিভ্যাল। ইহুদীরাও কি এক স্প্রিং ফেস্টিভ্যাল পালন করে (নাম মনে নাই)।
এগুলো সবই প্রি-ইসলামিক পিরিয়ড থেকে চালু ছিলো।
আর খ্রীস্টানদের হাতে মূরিশ মুসলিমদের নিধন হবার ঘটনাটির কোনো ঐতিহাসিক সত্যতা পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।
স্বপ্নচারী ভাই লিংক দিয়েছিলেন এই থ্রেডটির। ঐ থ্রেডের আলোচনা অনুযায়ী ১৯৯৭ সালের মালয়শিয়ান একটি নিউজগ্রুপে এই হোক্সটি প্রথম ছড়ানো হয়।
মালয়রা ভুয়া গুজব ছড়াতে ইন্টারন্যাশনাল ওস্তাদ - এ ব্যাপারে তাদের বিশেষ "খ্যাতি" আছে। এপ্রিল ফুলের ১৫-২০ বছর আগে (৮০-র দশকে) এরা নীল আর্মস্ট্রং-কে চাঁদে আজান শুনিয়েছিলো (চাঁদ যে বায়ুশূন্য ব্যাপারটা বোধহয় ওদের মোটা মাথায় ঢুকে নাই), তারপর পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তন করার পর আর্মস্ট্রংকে মুসলমানও বানিয়ে ফেলেছিলো। গুজবটা এমনই প্রচলিত হয়ে যায় যে মালয়শিয়ার বড়বড় দৈনিক পত্রিকাতেও হট নিউজ ছাপা হয়।
আর্মস্ট্রং স্বহস্তে লিখিত একটি চিঠি পাঠিয়ে প্রতিবাদ করেন। চিঠিটির স্ক্যান এখনো ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। অবশ্য গুজবটাও এখনো দেখা যায় ফেইসবুক-ওয়ালাদের ইমেলে।
চিমা মস্তকে হুল হুল বলেছেন: এটা যে ভুয়া hoax সে ব্যাপারে আগেই সন্দেহ ছিলো। তবে শিওর ছিলাম না।
এখন একটু গুগলিং করে এই তথ্যগুলো পেলাম গ্রানাডার ১৪৯২ পতন বিষয়ে:
The Muslim ruler Muhammad XII of Granada surrendered the Emirate of Granada in 1492 without the Alhambra itself being attacked when the forces of Los Reyes Católicos, King Ferdinand II of Aragon and Queen Isabella I of Castile, took the surrounding territory with an overwhelming force of numbers.
উইকিপিডিয়ার তথ্য
চিমা মস্তকে হুল হুল বলেছেন: The Granada War began in 1482. On January 2, 1492, the last Muslim leader, Muhammad XII, known as Boabdil to the Spanish, surrendered complete control of Granada, to Ferdinand and Isabella, Los Reyes Católicos ("The Catholic Monarchs"), after the city was besieged.
"On Monday 2 January (1492) they (Isabella and Ferdinand) left the camp with their army duly drawn up. As they came near to the Alhambra, Abu Abd-Allah rode out, accompanied by many of his knights, with the keys of the city in his hand. He tried to dismount in order to kiss the king's hand, but the king would not allow it.
"The Moor kissed Ferdinand on the arm and gave him the keys, saying 'Take the keys of your city, for I, and the men who are within, are your vassals.' King Ferdinand took the keys and gave them to the queen . . ."
সূত্র: http://www.white-history.com/hwr23.htm
উপরের বর্ণনাগুলো পড়ে দেখা যাচ্ছে -
১) গ্রানাডার পতন ঘটেছিলো ১৪৯২-এর ২রা জানুয়ারী। ১লা এপ্রিলে নয়, ৪ মাস আগেই খেল খতম।
২) সম্রাট ফার্দিনান্দ এবং রাণী ইসাবেলার (ইনি কলম্বাসের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন) হাতে শান্তিপূর্ণ আত্মসমর্পণ করেন আলহামরার আমির মুহাম্মদ। আমির নিজে ফার্দিনান্দের কাছে শহরের চাবি হস্তান্তর করেন, এবং তিনি এবং তার লোকবল ফার্দিনান্দের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করেন।
৩) পুরো ঘটনাটাই ঘটেছিলো শান্তিপূর্ণভাবে - রক্তপাত বা সংঘর্ষের কোন তথ্য নাই।
এটা যে একটা ভুয়া, ডাহা মিথ্যা, ফালতু গুজব এই ব্যাপারে মোটামুটি নিশ্চিত।
আগের পোস্টেই একটি লিংক দিয়েছিলাম - ঐ থ্রেডের একজন পোস্টার ট্রেস করে বের করেছিলো: ১৯৯৭ সালের এপ্রিলে একটি মালয়শিয়ান মেইলিং লিস্টে এই ভাওতাটি প্রথম দেখা যায়।
সবচাইতে বড় Irony হলো, কোনো এক ফাজিল লোক হয়তো সবাইকে এপ্রিল ফুল বানানোর জন্য ফাইজলামি করে পোস্টটি করেছিলো!
এবারে আরো একটি লিঙ্ক দিয়ে শেষ করতে চাই। ইন্টারনেটে অনেট স্টাডি করে এই সূত্রটা অথেন্টিক বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে..
ইউসুফ এস্টেস এর মতামত ও ১লা এপ্রিল
আমি সম্পৃতি ড.জাকির নায়েক কে এই প্রশ্নটি করেছি ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে, কিন্তু এখনো উত্তর পাইনি, তবে আশা করছি শিঘ্রি আরো বিস্তারিত জানতে ও আপনাদের জানাতে পারব।
ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্যে।
ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।