আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এপ্রিল ফুল বনাম এপ্রিল এর চালাক


(কেউ যদি বোকা হয় তার বিপরীত অবশ্যই একজান চালাক থাকবে। আসুন ব্যপারটি একটু জানার চেষ্টা করি এই মহান চালাক এর চালাকি এবং বোকার বোকামি )

৭১১ সালের এক বিকাল। তারিক বিন যিয়াদ স্পেন এর এক বন্দরে মাএ ৭০০ সদস্য এর একটি ছোট্র সেনা বাহিনী নিয়ে নামলেন। (পরে এ বন্দর এর নাম the incredible tareq bin ziad এর সস্নানে জাবালুত তারিক রাখা হয়। বর্তমানে তা সেই নামের বিকৃত রুপ জিব্রালটার হিসেবে পরিচিত)।

তাদের কাছে হাতিয়ার বলতে তরবারি, ঢাল আর ধনুক। তাদের উদ্দেশ্য একটিই অত্যাচারি গথিক রাজা রডারিক এর হাত থেকে এই দেশ এর মানুষকে মুক্ত করা। নেমেই জাহাজ পুড়িয়ে দিলেন। সামনে বিশাল রডারিক বাহিনী পেছনে বিক্ষুদ্ধ সমুদ্র। উদ্দেশ্যর প্রতি কতটা শ্রদ্ধা!!!! মাএ ৭০০ সৈন্য নিয়ে একটি অপরিচিত বিশাল দেশের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ????ঐতিহাসিক গন একে নিতান্তই আত্নহত্যার খায়েস বলে অভিহিত করেন।



কিন্তু বাস্তবে যা হয় তা ছিল রূপকথার চেয়ে অবিশ্বাশ্য। এই ক্ষুদ্র বাহিনী স্পেনের একর পর এক শহর জয় করে নেয়। জয় করেন মানুষের মন। স্পেনে ৮০০ বছর চলে মুসলিম শাসন। তখন স্পেন ছিল ইউরোপের রানী।

জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, চিকিৎসা, রাজনীতি, স্থাপত্য, শিল্প ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে সে সময়কালে স্পেনই ছিল একমাত্র স্পেনের উদাহারণ। যখন লন্ডন, প্যারিস, বন, জেনেভা ছিল অন্ধকারে তখন গ্রানাডা, মালগা, আন্দালুসিয়া, ভ্যালেন্সিয়ার মানুষ সরকারি বাতিতে পথ চলত। যখন বাকি ইউরোপ পানি স্পর্শ করাকে পাপ ভাবতো (রানী ইসাবেলা জীবকে ৩ বার গোসল করেছেন) তখন শুধু মাএ গ্রানাডাতে কয়েকশত হাম্মাম খানা ছিল (উন্নত গোসল খানা)। ছিল শত শত বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, গবেষণাগার । এগুলো দেখে খ্রিস্টানরা বসে থাকবে কেন।


সিসিলির রাজা ফার্ডিন্যান্ড টু এক ভয়ঙ্কর ফন্দি আটলো।
রাসুলের যুগে যেভাবে মুনাফিক সরদার আবদুল্লাহ ইবনে উবাই মুসলমানদের কাতারে থেকে মুসলমানদেরই ক্ষতি করতো, তেমনি আবু দাউদ নামক গাদ্দার স্পেনের গ্রানাডার শেষ সুলতান আবুল হাসানের ছত্রছায়ায় থেকে খ্রিস্টান রাজা ফার্ডিন্যান্ডের স্পেন ধ্বংসের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখলো। তার সঙ্গে যোগ দিলো রাজ্যের আরো কিছু ক্ষমতালোভী ব্যক্তিবর্গ।
সে হত্যাযজ্ঞের মিশনকে পাকাপোক্ত করতে ফার্ডিন্যান্ড Portugal এর রানী ইসবেলাকে বিয়ে করে। এরপর ষড়যন্ত্রের বীজ বুনীত হল সারা স্পেনে।

মুসলিম নেতৃবৃন্দের অন্তঃকোন্দোলে যখন এমনিতেই অবস্থা বিপর্যস্ত, ঠিক সে সময়ই ফার্ডিন্যান্ড হামলে পড়ল মুসলমানদের ওপর। ১৪৯২ সালের মার্চ এর শেষের দিক তারা আল হামরার শহর, দারুল হিকমা বিশ্ববিদ্যালয় এর শহর গ্রানাডার উপর হামলে পড়ে। চলতে থাকে হত্যাযজ্ঞ। এর মধ্যে ইসাবেলা ও ফার্ডিন্যান্ড স্পেন আসেন এবং ৩১ মার্চ ঘোষনা দেয় যারা মসজিদে ও জাহাজে আশ্রয় নেবে, শুধু তারাই রেহাই পাবে। ইসাবেলা ও ফার্ডিন্যান্ড এর ছলনাময়ী প্রস্তাবে রাজী হয়ে মুসলিমরা মসজিদে ও জাহাজে আশ্রয় নিল।

১৪৯৩ সালের ১লা এপিল সুবেহ সাদিক। যখন মুয়াজ্জিম আযান দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন তখনই ঘটে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম ঘটনা। যারা মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিল তাদের তালাবদ্ধ করে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে এবং জাহাজে আশ্রিতদের সাগরে ডুবিয়ে করুণ মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছিল। তখন ইসাবেলা ও ফার্ডিন্যান্ড এবং তাদের সাগরেদ গন আত্মতৃপ্তিতে বিকৃত অট্টহাসিতে মাতোয়ারা হয়ে বলে এপ্রিল ফুল (এপ্রিলের বোকা)!

এর পর পর সকল মসজিদে আযান বন্ধ হয়ে গেল। এখনও বিরান হয়ে পড়ে আছে সেই অসাধারন মসজিদ গুলো।

তার পরও যারা বেঁচে ছিল তাদের জাহাজে উঠিয়ে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। তবে ১২ বছরের কম বয়স এর শিশুদের মা মেরীর সম্পদ বলে রেখে দেওয়া হয় এবং খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা হয়। যদি মনে করেন এখানেই সব শেষ তাহলে ভুল ভাবছেন। এই শিশুদের দাস বানানো হয়। খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা হলেও তাদের খ্রিস্টান বলে মেনে নেয় না।

তাদের নাম দেওয়া হয় মরিস্ক। সমাজের ৩য় শ্রেণীর নাগরিক। যাদের নেই কোন অধিকার না শিক্ষা, সম্পদ, বা চাকুরীর। এমনকি এখনও সেই শিশুদের বংশধরদের মরিস্ক বলা হয়।
এপ্রিল ফুল!
মুসলমানেরা তাদের সেদিনের করুণ আর্তনাদের ইতিহাস ভুলে গেলেও খ্রিস্টান সম্প্রদায় তাদের প্রতারণাকে স্বরণ করে রাখতে আজো সে দিনটিকে জমকালোভাবে জমিয়ে রেখেছে ‘এপ্রিল ফুল’ নাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে।

১৯৯৩ সালের এই দিনে ৫০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা মিলিত হয়ে “হলি মেরী ফান্ড” গঠন করে। বৈঠক করে তারা এ সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা মুসলমানদের কোথাও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেবে না। আর সারা দুনিয়ার মুসলিম তরুণ-তরুণীরা নিজেদের পূর্বসূরীদের করুণ আর্তনাদের দিনকে পরস্পরকে ধোঁকায় ফেলে চরম মজায় লুটোপুটি খায়! সেলুকাস! সেই বোকাতত্ত্বে মুসলমানরা এখনো ধরাশায়ী।

এপ্রিল ফুল! এপ্রিল এর বোকা।

মনরে ওরে মন
তুই বড্ড বোকা
নিজের বুঝ বুঝলিনা রয়ে গেলি খোকা।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.