আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোরের আগে রাত

অনেকদিন আগে ব্লগটা খুলেছিলাম...অনেক কথা লেখার ছিল...কিন্তু লেখা হয়নি। এখন ভাবছি লিখব...আগেই লেখা উচিত ছিল!

জামিলের রাত...২য় অংশ নাসেরঃ “এক্সকিউজ মি ম্যাডাম! আপনি কি কারো জন্য অপেক্ষা করছেন?” মেয়েটির চোখে বিরক্তি...একটু ঘুরে বসলো কিন্তু কোন কথা বলল না। নাসেরঃ “ম্যাডাম, আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন? আমি নাসের বলছি, এই হোটেলের ম্যানেজার অন ডিউটি। এভাবে আসলে লবিতে বসে থাকা যায় না...আপনাকে কি কোন ভাবে হেল্প করতে পারি?” কোন উত্তর নেই। সিকিউরিটি অফিসারঃ “ম্যাডাম, আপনি কি শুনছেন?” “ভাই আপনারা কেন বিরক্ত করছেন? আমি তো কোনো...” ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল মেয়েটি।

নাসের, সিকিউরিটি অফিসার দুজনই অপ্রস্তুত! একটু গুছিয়ে চোখ মুছতে মুছতে রিসিপসনে এগিয়ে এলো মেয়েটি। “ভাইয়া আপনাদের এখানে একরাতের রুম ভাড়া কত?” জামিলঃ “ডিলাক্স রুম ১৭০ ডলার। ভ্যাট, সার্ভিস চার্জসহ ১৯৫ ডলার...” “এতো অনেক...কত হয় টাকায়? এটাই কি সব’চে সস্তা রুম?” ক্যালকুলেটর চেপে জামিল বলল, “জি ম্যাডাম, টাকায় আসছে প্রায় ১৪ হাজার” “অত টাকা...” কি একটু ভাবতেই আবার কেঁদে ফেলল মেয়েটা! নাসের রিসিপসনে এগিয়ে এলো। জামিলঃ “ম্যাডাম আপনি বসুন। আমি দেখছি কি করা যায়!” মেয়েটি সোফায় ফিরছে আর হাত ব্যাগে কি যেন খুঁজছে...কতো টাকা আছে দেখছে হয়তো! জামিলঃ “নাসের ভাই কি করা যায় বলেনতো! দিস ইস ক্লিয়ার যে রুম নেবার মত টাকা উনার কাছে নেই।

আর আমার দেখে মনে হচ্ছে না যে উনি মিথ্যা বলছেন...” নাসেরঃ “এটাই দোষ তোমাদের বয়সের! মেয়েদের চোখের পানি দেখলে আর ঠিক থাকতে পারো না!” জামিলঃ “বাদ দেন ফালতু পেচাল...থিঙ্ক পসিটিভ। এখন কি করা যায় সেটা বলেন। হিউম্যানিটি বলেও তো একটা ব্যাপার আছে!” নাসেরঃ “হ্যাঁ হ্যাঁ, জানি। এখন রুম নিতে না পারলে আমি কি করবো? হাইয়েস্ট ৪৫ ডলার কমাতে পারি...কিন্তু আমার মনে হচ্ছে না উনি সেটাও এ্যাফোর্ট করতে পারবেন!” জামিলঃ “কিন্তু মেয়েটাকে তো সকাল পর্যন্ত বসে থাকতে দেয়া যেতে পারে, তাই না? এত রাতে আমরা নিশ্চয়ই বলতে পারি না যে রুম না নিতে পারলে বেরিয়ে যান!” নাসের একবার জামিলের দিকে তাকালো...কি যেন ভাবল...সিকিউরিটি অফিসারকে নাসের মেয়েটিকে চোখে চোখে রাখতে বলে এগিয়ে গেল নিজের ডেস্ক এ। আর এদিকে জামিল এগিয়ে গেল মেয়েটি যেখানে বসে আছে... জামিল কি ভেবে সেই ৪৫ ডলার কমানোর কথা আর বলল না।

“ম্যাডাম, আপনি চাইলে অপেক্ষা করতে পারেন ভোর হয়া পর্যন্ত। আপনাকে কেউ আর বিরক্ত করবেনা!” মুখ তুলে তাকালো মেয়েটি! জল ছাপিয়ে চোখে ফুঁটছে কৃতজ্ঞতার ছায়া। মানুষের চোখের ভাষা এত দ্রুত, মূহুর্তে বদলাতে এই প্রথম দেখল জামিল... কেন যেন কষ্ট হচ্ছে জামিলের! মেয়েটিতো ওর কেউ নয়! তবুও... ১ম পর্ব শেষ। (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।