আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোরের আগে রাত

অনেকদিন আগে ব্লগটা খুলেছিলাম...অনেক কথা লেখার ছিল...কিন্তু লেখা হয়নি। এখন ভাবছি লিখব...আগেই লেখা উচিত ছিল!

জামিলের রাত... এই রাতের শিফট এলেই জামিলের ইচ্ছে হয় চাকরিটা ছেড়ে দিতে। প্রতি সপ্তাহে দু’দুটো রাত জাগা! দিনে কি আর সেভাবে ঘুম হয়! কিন্তু কি বা করার আছে...হোটেল ম্যানেজম্যান্টে পড়েছে নিজের ইচ্ছায়, হোটেলে কাজ করলে রাতের শিফট করতে হবে এ আর নতুন কি! ওর অবস্থা অনেকটা প্রেম করে বিয়ে করে পচতানো মেয়েদের মতো...না পারে প্রেম ফুরিয়ে গেলে সম্পর্কের বোঝা বইতে, না পারে বাবার বাড়ী গিয়ে বরের বা শশুরবাড়ীর নালিশ করতে। সীমাহীণ যন্ত্রণা! ১১টার একটু আগে শিফটে এসে পিসিতে চোখ বুলিয়ে নেয় জামিল। প্রাণ জুড়োলো! আজ রাত ব্যস্ত যাবে না।

কোন এ্যারাইভাল নেই। আহা কি শান্তি! রাত ১২টা বেজে কুড়ি। আজ এই পাঁচতারা হোটেলের লবি অন্য দিনের চাইতে একদম ফাঁকা। আজ যে শুক্রবার মনেই ছিল না জামিলের, বার বন্ধ...তাই এই নির্জনতা। এত বড় লবিতে মাত্র ছ’জন মানুষ।

রিসিপশনে আছে জামিল আর ফয়সাল। একটু দুরের ডেস্কে আছে ডিউটি ম্যানেজার নাসের, কন্সিয়ারজে আছে নাইট পোর্টার রোজারিও, ওর পাশেই আছে সিকিউরিটি অফিসার। সবাইকে ছাপিয়ে যাকে সবচেইয়ে বেশী দেখা যাচ্ছে, সে রুপোলি পাড়ের গাঢ় ম্যাজেন্টা শাড়ী পরা একটা মেয়ে। জড়োসড়ো বসে আছে কোণার এক সোফায়। দেখতে আহামরি কিছু না, তবে বেশ দেখাচ্ছে মেয়েটিকে, পরিপাটি করে সাজা।

সাথে হ্যান্ড ব্যাগ ছাড়াও আছে ছোট একটা ট্রলি স্যুটকেস। বয়স বোঝা যাচ্ছে না, জামিল কখনোই মেয়েদের বয়স বোঝে না...২৫/২৬ হবে হয়ত! অনেক্ষণ ধরে বসে আছে, সেই শিফটের শুরু থেকে দেখছে জামিল। সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে আছে...ফনে করছে কিছুক্ষণ পরপর, চাপা গলায় চলছে কথা, মাঝে মাঝে খানিক উত্তেজিত, উদ্বিগ্ন...আবার নিরবতা। খানিক বাদে আবার ফোন চাপছে মেয়েটি...কিন্তু তাকে আর কোন কথা বলতে শোনা যাচ্ছে না। এত রাতে কি আর কেউ ফোন ধরে! সময় ধীরে গড়ালেও থেমে থাকছে না।

এরই মধ্যে রাতের শিফটের কাজ গুছিয়ে নিয়েছে জামিল আর ফয়সাল। হয়ে গেছে ওদের টী-ব্রেকও। খানিক বাদে রিসিপশনে উঠে এলো মেয়েটা। “ভাইয়া আমার ব্যাগটা একটু দেখবেন?...আমি এই আসছি!” বলে আর দাড়ালো না, শাড়ীর আচঁল, ঠিক করতে করতে ওয়াশ রুমের দিকে পা বাড়াল মেয়েটা। ডিউটি ম্যানেজার আঁড় চোখে দেখছে মেয়েটাকে...ডেস্ক থেকে ফোন তুলে ফয়সালঅকে জিজ্ঞেস করলো মেয়েটির কথা।

ফয়সালঃ ব্যাগ দেখতে বলল, বাথরুমে গেছে। আজতো কোন এ্যারাইভালও বাকী নেই! নাসের ভাই দেখেনতো মেয়েটার কেস কি...অনেক্ষণ ধরে বসে আছে... মিনিট পাচেঁক পরে মেয়েটি ফিরে গেল আগের সোফায়। নাসের সিকিউরিটি অফিসারকে আসতে বলল ওয়াকি-টকিতে। সিকিউরিটি অফিসার আসতেই নাসের এগিয়ে গেল... (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।