ইরাসমাস বৃত্তির আওতাধীন মাষ্টারস ও পিএইচডি পর্যায়ের সব কোর্সের তালিকা
প্রতি বছর এই বৃত্তিটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্পন্সর করে। এর মাধ্যমে সাধারণতঃ তিনটা ইউরোপীয় ইউনিভার্সিটি দুই বছর সময়ের একেকটা কোর্সে মাষ্টারস ডিগ্রী দেয়। আন্ডারগ্র্যাড শেষ করা যে কেউই এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারে। আবেদনের যোগ্যতা এবং সাফল্যের সম্ভাবনা বিচারে এই বৃত্তিটা বেশ লোভনীয়। ইরাসমাসের একটা বড় সুবিধা হলো একটা মাল্টিকালচারাল পরিবেশে পড়াশোনা।
তাছাড়া ভ্রমন, রিসার্চ ও সেমিনারের সুযোগও প্রচুর, প্রকৃতপক্ষে পুরো ইউরোপব্যাপী। আর ইরাসমাসের কোর্সগুলো সাধারনত মাল্টিডিসিপ্লিনারী কোর্স তাই এর পরিসরও অনেক বড় ও লোভনীয়। একটু ট্যাকটিক্যাল হলে আমাদের অনেকেই অল্প আয়াসে সাফল্য পেতে পারে।
১। প্রথমে উপরের লিষ্ট থেকে নিজের বিষয়ের সাথে সব থেকে বেশি সম্পর্কিত তিনটা (৩) কোর্স বাছাই করতে হবে (একজন সর্বোচ্চ তিনটা কোর্সে আবেদন করতে পারে)।
এরপর সেইসব কোর্সের ওয়েব সাইটে (উপরের তালিকায় কোর্সের নামের ডানদিকে) গিয়ে দেখতে হবে কোন বিশ্ববিদ্যালয় কো-অর্ডিনেট করছে আর সেখানে ভর্তির যোগ্যতা কি কি।
২। আইইএলটিএস স্কোরের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বেশিরভাগ ইউনিভার্সিটিতে ৬/৬.৫ চাইলেও কোথাও আবার ৭ চায়। আমার জানা মতে, বাংলাদেশে এখন ৭ স্কোর করা কঠিন কিছু না।
দরকার শুধু মাস দুয়েকের মনোযোগী প্রস্তুতি। এটা জুলাইয়ের মধ্যেই সেরে ফেলতে হবে।
৩। একাডেমিক রেজাল্ট আর আইইএলটিএস স্কোর দরকারী, এবং সকল আবেদনকারীরই এসব থাকে। কাজেই, নিজের সিভি’তে আরো কিছু অতিরিক্ত যোগ্যতা যোগ করতে হবে, যেমনঃ পাবলিকেশন।
প্রায় সবারই কোন না কোন প্রজেক্ট বা থিসিস থাকে। সেখান থেকে একাডেমিক জার্নালে ছাপার যোগ্য মোটামুটি মানের পেপার রেডি করা খুব কঠিন কাজ নয়। আর দেশেই কিছু জার্নাল আছে যেখানে নবীশ লেখকরা তাদের গবেষণা/রিপোর্ট ছাপাতে পারে যা’ একাডেমিক পেপার হিসেবে গ্রহনযোগ্য।
৪। কাজের অভিজ্ঞতাও প্রার্থীতায় প্রভাব রাখে।
ইতোমধ্যেই কোন চাকুরীতে যোগ দিয়ে থাকলে ত’ খুবই ভালো। আর বেকার থাকলেও হতাশ হবার কিছু নেই। পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের প্রাইভেট ফার্ম বা কোন এনজিওতে একটা স্বেচ্চাসেবির অস্থায়ী পদ বাগিয়ে নিতে হবে যা’ বৃত্তির আবেদনের সময় সিভি’তে যোগ করে দিতে হবে। [মনে রাখতে হবে, অকর্মাদের কোথাও বেইল নাই]।
৫।
কো-অর্ডিনেটিং ইউনিভার্সিটির কোন প্রফেসরের সাথে আগে থেকেই ই-মেইলে যোগাযোগ করে কোন ফায়দা নাই। আইইএলটিএস, পেপার আর কাজের যোগ্যতা- সবকিছু রেডি করে ফেলতে হবে আগষ্ট মাসের মধ্যেই। সেপ্টেম্বরে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু, চলবে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত। তবে আগে আবেদন করাই ভালো এবং ভয়ের কোন কারণও নেই, কেননা ইউরোপে কোনদিন বাঘ থাকেনি ।
যে বিষয়গুলো ইমপরটেন্ট:
- সিজিপিএ (প্রোগ্রাম নির্ভর)
- স্টেটমেন্ট অফ পার্পাস (খুব ইমপরটেন্ট)
- লেটার অফ রিকমেন্ডেশন
- যে সাবজেক্টে এপ্লাই করছ সেটার উপরে থিসিস বা কোন কাজ থাকলে ভাল, না থাকলেও অসুবিধা নাই।
ন্যূনতম সিজিপি কত লাগবে সেটা ঠিক করে বলা যায় না। নির্ভর করে কোন সাবজেক্টে এর উপর। তিনটার মধ্যে একটা হাই প্রায়োরিটি সাবজেক্টে এপ্লাই করলে ২ টা লো প্রায়োরিটি সাবজেক্টেও এপ্লাই করলে ভাল। জিআরই জিম্যাট কিছুই লাগে না। এগুলোর ভ্যালু আছে বলে মনে হয় না।
কেবল আইইএলটিএস বা টোফেলই যথেষ্ট।
ইরাসমাস বৃত্তি আর যেকোন বৃত্তির থেকে তুলনামূলক ভাবে কম প্রতিযোগীতাপূর্ণ। নানান জাতীয়তা কোটা, কোর্সের স্পেশালাইজেশন আর অংশগ্রহনকারী বিশ্ববিদ্যালয়+দেশ সম্পর্কে তথ্যের অভাবে এইখানে অনেক ছাত্রই আবেদন করতে পারে না। তাছাড়া, খুব ভালো রেজাল্টধারীরা আমেরিকা/কানাডা/অষ্ট্রেলিয়ায় করতে গিয়ে এদিকে নজর দিতে পারে না। সবকিছু মিলিয়ে যা হয়- মোটামুটি মানের রেজাল্ট নিয়েও অনেকেই এই বৃত্তি পেয়ে যায়।
ইরাসমাসে আর্টস পার্টির সাফল্যের সম্ভাবনা তুলনামূলক ভাবে বেশি।
পড়াশোনার মধ্যে থেকেই দেশে দেশে ঘোরা+ডিগ্রী অর্জন সম্ভব। এর জন্য নিজের পকেটে টাকা থাকা জরুরী নয়, নামডাক-ওয়ালা মেধাবি হওয়াও আবশ্যক নয়। শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছা+বুদ্ধি+লেগেথাকা হলেই মাত্র ৬ মাসের মধ্যে নিজেকে তৈরী করে ফেলা যায়। এরপর আরো ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যেই উড়াল দেওয়ার ডাক আসে।
টিউশন ফি ইনস্যুরেন্স মানি সব বাদ দিয়ে একজন ছাত্র যা পায় তা হল:
- প্রতি বছরের শুরুতে ৪০০০ ইউরো। তার মানে ২ বছরে মোট ৮০০০ ইউরো।
- প্রতি মাসে ১০০০ ইউরো। ২৪ মাসে মোট ২৪,০০০ ইউরো।
সর্বমোট টাকার পরিমাণ ৩২,০০০ ইউরো।
এর বাইরে ইনস্যুরেন্সের টাকা এবং টিউশন ফি সব ইউরোপীয় ইউনিয়ন বহন করবে। তার মানে ৩২,০০০ ইউরো কেবলই থাকা-খাওয়া এবং যাতায়াতের জন্য। মেডিকেল কস্ট এবং অ্যাক্সিডেন্টাল যাতায়াতের সব খরচ তো ইনস্যুরেন্স থেকেই আসবে।
ইউরোপে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চাইলে আহামরী মেধাবী হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। মোটিভেশন আর সদিচ্ছাটাই আসল।
তবে এটা নিশ্চিত যে একবার এখানে এসে পড়াশোনা শুরু করলে এবং ভাল করার ইচ্ছে থাকলে ভবিষ্যিৎ অনিশ্চিত থাকবে না।
VLIR-UOS - বেলজিয়াম সরকার প্রদত্ত বৃত্তি এবং মটিভেশন লেটার বা স্টেটমেন্ট অফ পারপার্স, রেফেরেন্স বা রেকমেন্ডেশন লেটার সম্পর্কে জানতে ঘুরে আসতে পারেন ।
বিঃদ্রঃ সঙ্কেলিত। তবে যে কোন প্রশ্ন এর উত্তর দেবার চেষ্টা করবো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।