Click This Link target='_blank' >লিংক
নগরের আয়তন এবং জনসংখ্যার তুলনায় ঢাকা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট নয়। চলছে অবৈজ্ঞানিক এবং ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। প্রতিদিন সৃষ্ট বর্জ্যের অর্ধেকটাই থেকে যায় রাস্তাঘাটে কিংবা বাড়ির আশপাশে। যে বর্জ্য থেকে উৎপাদন হতে পারত বিদ্যুৎ, জৈব সারসহ মূল্যবান সম্পদ, সেখানে এ বিপুল পরিমাণ বর্জ্য ডাম্পিং করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মেডিক্যাল বর্জ্যের জন্য নেই আলাদা ব্যবস্থা।
সমপ্রতি বর্জ্য রিসাইক্লিং ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এলজিআরডি মন্ত্রণালয় থেকে বেসরকারিভাবে বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হলে ৮টি দেশি-বিদেশি কোম্পানি তাতে অংশ নেয়।
প্রতিদিন বর্জ্যে ঢেকে যায় ঢাকা
প্রতিদিন রাজধানীতে কী পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদিত হয় তার সঠিক কোনো হিসাব নেই ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছে। তবে সিটি করপোরেশন সূত্র থেকে যে ধারণা পাওয়া গেছে এতে অনুমান করা যায়, ঢাকায় প্রতিদিন ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হয়, যার ৫০ থেকে ৬০ ভাগ সঠিক নিয়মে ডাম্পিং করা হয়। ২০ ভাগ স্থানীয়ভাবে বেসরকারি উদ্যোগে বিশেষ করে টোকাইদের মাধ্যমে সংগ্রহ করে রিসাইক্লিং হয়।
আর বাকিটা থেকে যায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এবং পরে তা স্থানীয়ভাবেই মাটির সঙ্গে মিশে যায় কিংবা ড্রেনে পড়ে স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করে।
বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষা মতে, ঢাকা শহরে প্রতিদিন বর্জ্য উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় ৭ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ডাম্পিং হয় ৩ হাজার ৮শ মেট্রিক টন। অপর এক বেসরকারি জরিপ অনুযায়ী প্রতিদিন গৃহস্থালি বর্জ্য উৎপাদিত হয় ৫ হাজার ৯শ ৫০ মেট্রিক টন। এছাড়া মেডিক্যালসহ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে ১ হাজার ৫০ এবং রাস্তাঘাট থেকে ৪শ মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়।
প্রতিদিন নগরীতে মাথাপিছু উৎপাদিত হয় ৫শ ৬০ গ্রাম বর্জ্য। উৎপাদিত বর্জ্যের মধ্যে আছে প্লাস্টিক, কাগজ, কাচ, ধাতু এবং জৈব বর্জ্য। ওয়েস্ট কনসার্নের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০০৫ সালে ঢাকা শহরে কঠিন বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছে শুকনো মওসুমে প্রতিদিন ৩ হাজার ৭শ ৬৮ টন এবং বর্ষাকালে ৫ হাজার ৫শ এক টন। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার ৬শ ৩৪ টন। এর মধ্যে কম্পোস্ট উপযোগী প্রায় ৭৬ ভাগ, যার পুরোটাই ডাম্পিং করে মিশিয়ে দেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম
সিটি করপোরেশন সূত্র মতে, ঢাকা নগরীতে স্থায়ী লোকসংখ্যা ৭০ লাখ। তবে অস্থায়ী বাসিন্দা ও প্রতিদিন যাতায়াতকারী মানুষসহ নগরীর মোট জনসংখ্যা দেড় কোটির ওপরে বলে ধারণা করা হয়। এ বিপুল পরিমাণ জনগণের বিপরীতে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী আছে ৭ হাজার ৫শ জন। প্রতি ১ হাজার স্থায়ী নাগরিকের জন্য একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। এছাড়া নগরীতে ডাস্টবিন আছে ৬৪৭টি, কনটেইনার ৬ ঘনমিটার মাপের ২৬০ এবং ১২ ঘনমিটার মাপের ১২৩টি।
ব্যক্তিগত ডাস্টবিন আছে ৪১টি, সিটি করপোরেশনের খোলা ও আবদ্ধ মোট ৩৭০টি ট্রাক আছে। সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বিপিন কুমার সাহা বলেন, আমাদের যে সম্পদ ও জনবল আছে তাতে জনগণ সচেতন হলেই নগরী পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব। তবে সোনার বাংলা গ্রুপ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বর্জ্য বিশেষজ্ঞ এএম কামাল বলেন, ঢাকা শহরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কম করে হলেও ৩০ হাজার জনবলের প্রয়োজন। ছোট ছোট ট্রাক দরকার কমপক্ষে এক হাজার। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সেক্রেটারি ডা. আবদুল মতিন বলেন, ‘আমরা এক সময় দেখেছি, খুব ভোরে নগরীর রাস্তাঘাট পরিষ্কার করা হতো।
এখন আর তা হয় না। দুপুর বেলা, কখনো কখনো স্কুল শুরু কিংবা ছুটির সময় পরিচ্ছন্নতার কাজ করে থাকে কর্মীরা। অনেক সময় ডাস্টবিনে ময়লা পড়ে থাকে দিনের পর দিন। দুর্গন্ধে কাছে ভেড়া যায় না। প্রতিদিন রাতের অন্ধকার থাকতেই নগরীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করা দরকার।
’ ক্যাপ্টেন বিপিন কুমার সাহা বলেন, রাতেই যদি পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করা হয় তাহলে সকালে অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার করে যে ময়লা ফেলবে সেগুলোর কী হবে? দিনে ময়লা পরিবহনের ব্যাপারে তিনি বলেন, কনটেইনারগুলো রাতেই পরিবহন করা হয়। ট্রাকগুলো শুধু দিনে চালানো হয়। সাধারণত দিনে একবার শহরের রাস্তা পরিষ্কার করা হয়। তবে বর্তমানে বিশ্বকাপ উপলক্ষে দিনে দুবার রাস্তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ কাজ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব আমরা।
ডাম্পিং পরিবেশবান্ধব নয়
প্রতিদিন সিটি করপোরেশন যে বর্জ্য সংগ্রহ করে তার পুরোটাই ডাম্পিং করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। বর্তমানে মাতুয়াইলে ডাম্পিং করা হচ্ছে। নিচু স্থানে বর্জ্য ফেলে তা বুলডোজার, টায়ারডোজার ও প্লেলোডার দিয়ে চাপ দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়াকেই বলা হয় ডাম্পিং। এভাবেই ধীরে ধীরে ঢাকা শহরের খাল-বিল হারিয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মাতুয়াইল ও আমিনবাজারে ডাম্পিং করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে গাজীপুরের দিকে দুটি স্থানে ডাম্পিং করা হবে। ওয়েস্ট কনসার্নের হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর ঢাকা শহরের বর্জ্য ডাম্পিং করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ৪ ফুট গভীর ৩৯.৮৯ একর জমি। কিন্তু শতভাগ ডাম্পিং করার জন্য দরকার ৯৪.৯৭ একর জমির। বর্জ্য গবেষক এএম কামাল বলেন, এভাবে ডাম্পিং করে একের পর এক খাল-বিল ভরাট করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে সিটি করপোরেশন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সেক্রেটারি ডা. আবদুল মতিন বলেন, সিটি করপোরেশন যেভাবে ডাম্পিং করছে তা মন্দের ভালো। তবে এটা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পন্থায় হচ্ছে। ফলে আশপাশের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আলাদা হয়নি মেডিক্যাল বর্জ্য
নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে এখনো আলাদা করা হয়নি মেডিক্যাল বর্জ্যকে। স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মেডিক্যাল বর্জ্য আলাদা না করে এখনো ফেলা হয় ডাস্টবিন, রাস্তাঘাটসহ যত্রতত্র।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রাজধানী ঢাকায় সরকারি হাসপাতালগুলো ছাড়াও এক হাজার ২শ ছোট-বড় রেজিস্টার্ড প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর বাইরেও রেজিস্ট্রেশনবিহীন পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান নগরীতে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি হিসাবে গণ্য; হাসপাতাল বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা মেনে চলছে না। সৃষ্ট চিকিৎসা বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলা হচ্ছে। নিক্ষিপ্ত বর্জ্যের তালিকায় রয়েছে ব্যবহৃত সুচ, সিরিঞ্জ, রক্ত ও পুঁজযুক্ত তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ, মানব-প্রত্যঙ্গ, ওষুধের শিশি, ব্যবহৃত স্যালাইন, রক্তের ব্যাগ এবং রাসায়নিক দ্রব্যসহ সব ধরনের চিকিৎসাজাত ময়লা-আবর্জনা।
সুনির্দিষ্ট আইনের অভাব, অপ্রতুল প্রচার, নিয়ন্ত্রণহীনতা ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় আসছে না। মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আইনগত বাধ্যবাধকতা ও প্রয়োজনীয় সচেতনতা না থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে সক্রিয়ভাবে অংশও নিচ্ছে না বলে জানা গেছে। এসব বর্জ্য যথাযথভাবে প্রক্রিয়াকরণ না করায় ছড়িয়ে পড়ছে হেপাটাইটিস ‘বি’, হেপাটাইটিস ‘সি’, যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া এমনকি বাড়ছে এইডসের মতো মরণব্যাধির ঝুঁকি। ক্যাপ্টেন বিপিন কুমার বলেন, মেডিক্যাল বর্জ্য আলাদা করার জন্য আমাদের সিটি করপোরেশনের আলাদা ইউনিট আছে। বেশকিছু হাসপাতাল-ক্লিনিক আমাদের কার্যক্রমের সঙ্গে একাত্ম হয়েছে।
কিছু অসাধু ক্লিনিক ও হাসপাতাল এখনো আমাদের সঙ্গে একাত্ম না হওয়ায় এই কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ডা. মতিন বলেন, প্রত্যেকটি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের পেছনে লাল ও হলুদ কনটেইনার রাখা দরকার। লাল কনটেইনার বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য ফেলানোর জন্য। এসব বর্জ্য কোনোভাবেই অন্য বর্জ্যের সঙ্গে মেশানো যাবে না।
পরিশোধন হচ্ছে না শিল্পবর্জ্য
বর্জ্য শোধনাগার কেন্দ্র-ইটিপি স্থাপন না করেই চলছে রাজধানীসহ আশপাশের শিল্পকারখানা।
বর্জ্য শোধনাগার কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি ভঙ্গ করে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কারখানা চালাচ্ছেন মালিকরা। এদিকে এক যুগেরও বেশি অকার্যকর বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও বিধিমালা। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও ওয়েস্ট কনসার্নের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারাদেশে টেক্সটাইল খাত থেকে ২০০৭ সালে ৯৯.৭৫ মিলিয়ন ঘনমিটার বর্জ্য পানি ও ১ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন কাদা নির্গত হয়েছে। ২০১২ সালে এ হিসাব গিয়ে দাঁড়াতে পারে যথাক্রমে ২ হাজার ৪শ ৭০ মিলিয়ন ঘনমিটার ও ৩ লাখ ৬ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন। ২০০৭ সালে মেডিক্যাল বর্জ্য নির্গত হয়েছে ১ হাজার ২৪৫ মেট্রিক টন।
২০১২ সালে নির্গত হতে পারে ১৬ হাজার ৯শ ৭২ মেট্রিক টন। ট্যানারি শিল্প থেকে ২০০৭ সালে ১৩ লাখ ঘনমিটার বর্জ্য পানি এবং ২২ হাজার ৫শ মেট্রিক টন কঠিন বর্জ্য নির্গত হয়। ২০১২ সালে হতে পারে যথাক্রমে ১৬ লাখ ঘনমিটার ও ৩৪ হাজার মেট্রিক টন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিল্পকারখানাগুলোতে বর্জ্য শোধনাগার না থাকায় নগরীর ২২ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান- হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার জরিপে বলা হচ্ছে, ৩০টি কঠিন রোগের অন্যতম কারণ দূষণ।
বর্জ্য দূষণের কারণে রাজধানীর পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। রাজধানীর আশপাশের এলাকাগুলো থেকে ৬২ রকম রাসায়নিক বর্জ্য পানিতে মিশছে।
রাজধানীর হাজারীবাগে ১৮৫টি ট্যানারি কারখানা থেকে দৈনিক ২২০ টন চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এ থেকে ৭৭ লাখ লিটার তরল ও ৮৮ টন কঠিন বর্জ্য নির্গত হয়, যার মধ্যে রয়েছে ক্রোমিয়াম, সালফার, অ্যামোনিয়া, লবণ ও অন্যান্য পদার্থ। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক এসব বর্জ্য বুড়িগঙ্গাকে দূষিত করার অন্যতম কারণ।
ডা. আবদুল মতিন বলেন, ঢাকার চারপাশের যেসব নদী আজ দূষণের শিকার তার ৬০ ভাগ করছে শিল্প প্রতিষ্ঠান, ৩০ ভাগ ডিসিসি ও ঢাকা ওয়াসা। আর বাকি ১০ ভাগ দূষণ করছে সাধারণ মানুষ, যা হিসাবের মধ্যে না আনলেও চলে।
হচ্ছে না রিসাইক্লিং
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকা শহরে উৎপাদিত বর্জ্যের অধিকাংশই রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে মূল্যবান সম্পদে পরিণত করা সম্ভব। সোনার বাংলা গ্রুপ লিমিটেডের গবেষণা মতে, ঢাকা শহরে বর্তমানে উৎপাদিত ১২৮ মেট্রিকটন প্লাস্টিক বর্জ্যের ৮৩ ভাগ রিসাইকেল হয়। এছাড়া কাগজ বর্জ্য উৎপাদিত হয় ২৬০ মেট্রিক টন এবং রিসাইকেল হয় যার ৬৫ ভাগ; কাচ জাতীয় বর্জ্য উৎপাদিত হয় ৪৬ মেট্রিক টন এবং রিসাইকেল হয় ৫২ ভাগ; ধাতব বর্জ্য উৎপাদিত হয় ২৭ মেট্রিক টন এবং রিসাইকেল হয় ৫০ ভাগ এবং জৈব বর্জ্য উৎপাদিত হয় ২ হাজার ২১১ মেট্রিক টন রিসাইকেল হয় না বললেই চলে।
এসব রিসাইক্লিং হয়ে থাকে মূলত ব্যক্তিমালিকানায়। বেসরকারি সংগঠন ওয়েস্ট কনসার্নের মতে, ঢাকা শহরে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার গরিব মানুষ এই রিসাইক্লিংয়ের সঙ্গে জড়িত। প্রতিদিন ৪৫০ টন বর্জ্য এভাবে পরিশোধন হয়ে প্রতিবছর প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার আয় হচ্ছে। এছাড়া সারাদেশে প্রতিবছর ৫০ হাজার ২শ ১৩ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার ৬৯ ভাগ বর্জ্য মাটির সঙ্গে মিশে যাওয়ার মতো এবং বাকি ৩১ ভাগ বর্জ্য মাটির সঙ্গে মিশতে পারে না। ২০০৬ সালে এসব পণ্যের ৬৬ ভাগ অর্থাৎ ৩৩ হাজার ১শ ৪০ টন ই-ক্লিংয়ের মাধ্যমে নতুন করে ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ডাম্পিং ছাড়া কিছুই করে না বলে জানা যায়। ক্যাপ্টেন বিপিন কুমার বলেন, ডাম্পিং করাই শেষ কথা নয়, বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি আমরা। ইতিমধ্যেই বেসরকারিভাবে এ কাজের জন্য টেন্ডার হয়েছে। অচিরেই কার্যক্রম শুরু হবে। বর্জ্য বিশেষজ্ঞ এএম কামাল বলেন, এসব বর্জ্য থেকে জৈব সার, বিদ্যুৎ ও ডিজেল উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, মেডিক্যাল বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করে ‘বায়োমাস’ পদ্ধতিতে ১২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পুড়িয়ে ফেললে তা আর পরিবেশের জন্য কোনো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
শেষ কথা
ডিসিসি, বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদী প্রতিষ্ঠানগুলোও কেবল পরিসংখ্যান ও সম্ভাবনার কথা বলেই দায়িত্ব শেষ করছে। এ বিষয়ে কোনো সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলছে না। নিচ্ছে না সচেতনতামূলক কর্মসূচি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জনসচেতনতা, জনগণের অংশগ্রহণ।
আসাদ জোবায়ের
স্টাফ রিপোর্টার
সাপ্তাহিক ২০০০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।