আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লুঙ্গির জয়জয়কার

প্রায় শেষ হয়ে এল মাহে রমজান। ঈদের কেনাকাটা প্রায় সাঙ্গ করে ফেলেছেন অনেকেই। ঢাকা ছেড়ে যাঁরা গ্রামের বাড়ি যাবেন ঈদের ছুটি কাটাতে, তাঁরা এখন যানবাহনের টিকিট সংগ্রহে ব্যস্ত। বাড়ি ফেরার ঝক্কি কম নয়; টিকিট পাওয়ার বিড়ম্বনা তো আছেই। এ ছাড়া যেসব জিনিসপত্র কেনাকাটা হয়েছে, সেসব গুছিয়ে বেঁধেছেঁদে ব্যাগে ভরা, আরও কত ঝক্কি থাকে।

ঈদে শেষ দিকের কেনাকাটায় থাকে লুঙ্গি, টুপি, আতর, সুরমার মতো টুকিটাকি জিনিস। বাঙালি পুরুষের পোশাকের মধ্যে লুঙ্গির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ঈদের সময় এর বিক্রিও অনেক বাড়ে। প্রাচীন যুগে পুরুষ ও নারী উভয়েরই পোশাক ছিল ধুতি। তবে পুরুষদের ধুতি পরার কায়দা ছিল আলাদা।

খেটে খাওয়া সাধারণ লোকেরা মূলত খাটো লুঙ্গি পরতেন। কুঁচি দেওয়া লম্বা ধুতি পরতেন অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তিরা। মধ্য যুগে মুসলিমদের প্রভাবে পোশাকে পরিবর্তন এসেছিল। চাপকান, কুর্তা, ফতুয়া, চুড়িদার পাজামা—এসব তখন পরতেন অভিজাত মানুষেরা। মাথায় পাগড়ি, পায়ে শুঁড়-তোলা নাগড়া।

শার্ট-প্যান্ট-কোট পরার চল শুরু হয়েছিল ইংরেজ আমলে। তবে ঘরোয়া পোশাক হিসেবে লুঙ্গির সংযোজন বিশ শতকের গোড়ার দিকে বলে মনে করেন ইতিহাসবিদেরা। গোলাম মুরশিদ তাঁর হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি বইতে লিখেছেন, ‘উনিশ শতক শেষ হওয়ার আগেই ইংরেজি-শিক্ষিতদের মধ্যে পশ্চিমা পোশাক অথবা সে পোশাকের কিছু উপকরণ অনুপ্রবেশ করেছিল। তবে বৃহত্তর বাঙালি সমাজে বহাল থাকে সনাতনী পোশাক। ’ এই সনাতনী পোশাক হলো ধুতি, পাঞ্জাবি আর চাদর।

হিন্দু-মুসলমান সবাই তখন ধুতি পরতেন।  গোলাম মুরশিদ লিখেছেন, ‘বিশ শতকের গোড়ার দিকে মুসলিম-পরিচালিত পত্রপত্রিকায় শিক্ষিত মুসলমানদের ধুতি পরার সমালোচনা করা হয়েছে। ’ তখন ওসব পত্রপত্রিকার নিবন্ধে ধুতির বদলে পাজামা পরার অনুরোধ জানানো হয়। গ্রামের মুসলমানেরা অবশ্য আগে থেকেই ধুতির বদলে লুঙ্গি পরতে থাকেন। দেশ ভাগের পর খুব দ্রুত পূর্ব বাংলায় পুরুষদের পরনে ধুতির জায়গা দখল করে নেয় লুঙ্গি।

এখন তো লুঙ্গি উঠেছে হিন্দু-মুসলিম, ছেলে-বুড়ো সবার পরনেই। জাতীয় পোশাকের তকমা পায়নি বটে, তবে উভয় বঙ্গেই লুঙ্গির জয়জয়কার। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.