আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বনাথে সুরমা সিকিউরিটিজ কোম্পানী বন্ধ, গ্রাহকের ২ কোটি টাকা লুট করার অভিযোগ

নাজমুল ইসলাম মকবুল
বিশ্বনাথে সুরমা সিকিউরিটিজ কোম্পানী বন্ধ গ্রাহকের ২ কোটি টাকা লুট করার অভিযোগ তদন্ত করছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বিপাকে গ্রাহকরা নাজমুল ইসলাম মকবুল দেশের পুজিবাজারে প্রভাবশালী মতাসীন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও সরকারের ব্যর্থতার জন্য যখন বিনিয়োগকারীরা তাদের পুজি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম তখন বিশ্বের দ্বিতীয় লন্ডন খ্যাত সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথে সুরমা সিকিউরিটিজ কোম্পানি লিমিটেড কৌশলে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ২ কোটি টাকা লুুট করে নেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুরমা সিকিউরিটিজ হোল্ডিং লিমিটেড বিশ্বনাথ শাখায় বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেছেন, কোম্পানির কর্ণধার এম.এ.মুমিন ও তার পুত্র মনসুর মুমিন তাদের আত্মীয় ও নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্বনাথ অফিসের ইনচার্জ কামরুজ্জামান শিপনের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে কৌশলে এ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে বিশ্বনাথ অফিসের ইনচার্জ কামরুজ্জামান শিপন মনসুরের তালতো বোন বিয়ে করেছেন। আর সে সম্পর্কের সুবাধে টাকা ও শেয়ার আত্মসাতকারী শিপনকে কৌশলে যুক্তরাজ্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। এদিকে গ্রাহকদের আবেদনের প্রেেিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তদন্তকারী দল সরেজমিনে বিশ্বনাথ ঘুরে গেছেন গত রোববার।

অপর দিকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, মিডিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন তদন্তকারী দল এই মোটা অংকের টাকার হদিস বের করতে পিতা-পুত্র ও এজেন্টের উপর বিভিন্ন গোয়েন্দা নজরদারী চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে কোম্পানির কর্ণাধারের পুত্র মনসুর মুমিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। অভিযোগের প্রেেিত জানা যায়, বিগত প্রায় ৬ মাস যাবত সুরমা সিকিউরিটিজের বিশ্বনাথ শাখা নতুন আসা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও টাকা নিয়ে কৌশলে বিভিন্ন অনিয়ম করে আসছিল। গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে বিনিয়োগকারীদের কাছে এ অনিয়ম ধরা পড়ে। কয়েকজন বিনিয়োগকারী দেখতে পান তাদের অ্যাকাউন্টে অনেকগুলি শেয়ার ও রসিদের মাধ্যমে জমা দেওয়া টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই সিকিউরিটিজ হাউজের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তারা তাদের পোর্টফোলিওর খোঁজ নিতে শুরু করেন। এসময় অনেক বিনিয়োগকারী তাদের অ্যাকাউন্টে শেয়ার ও টাকার হিসাব নিয়ে চরম গাফিলতি অনিয়ম ও দূর্নীতি দেখতে পান। বিনিয়োগকারীরা জানান, তাদের প্রায় আড়াই থেকে ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই সিকিউরিটিজের বিশ্বনাথ শাখার কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।

বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন অফিসের ইনচার্জ কোম্পানীর মালিকের সাথে যোগসাজসের মাধ্যমে কৌশলে অনেকের শেয়ার বিক্রয় করে টাকা আত্মসাত করে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছে। এদিকে বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন অভিযোগের প্রেেিত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপ গত ২০ জানুয়ারী থেকে সুরমা সিকিউরিটিজ বিশ্বনাথ শাখার লেনদেন বন্ধ করে দেয়। এতে চরম বিপাকে পড়েন ওই শাখার ৪৯৯ জন বিনিয়োগকারী। লেনদেন করতে না পেরে তাদের কোটি কোটি টাকা আটকা পড়ে। আর এতে লাখ লাখ টাকার লাভ থেকেও বঞ্চিত হন গ্রাহকরা।

এছাড়া নানা অজুহাত দেখিয়ে অনেক বিনিয়োগকারীকে লিংক একাউন্ট করে শেয়ার ট্রন্সফার করে নিতেও দিচ্ছে না তারা। এতে ােভ বিরাজ করছে বিনিয়োগকারীদের ভেতরে। এ ব্যাপারে বিনিয়োগকারী আব্দুল খালিক বলেন, হাউজ কর্মকর্তাদের শেয়ার ও অর্থের গাপলার কারণে গত ১ মাস ধরে আমাদের মতো সাধারণ বিনিয়োগকারীদের চরম মাশুল দিতে হচ্ছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ ব্যাপারে সিকিউরিটিজ হাউজের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা মালিক বিনিয়োগকারীদের কোন সহযোগিতা করছেনা। তিনি জানান, অনেক চেষ্টা করেও আমার শেয়ার স্থানান্তর করে নিতে পারছি না।

বিনিয়োগকারী ও বিশ্বনাথ পুরান বাজার বণিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. মধু মিয়া বলেন, সুরমা সিকিউরিটিজ হাউজের বিনিয়োগকারীরা দুঃখ আর কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তিনি জানান, প্রতিদিন বিনিয়োগকারীরা সুরমা সিকিউরিটিজের সামনে এসে ভিড় করেন। কিন্ত কোনো কাজ হয় না। তিনি বলেন, ওই সিকিউরিটিজের মালিক সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি এম.এ.মুমিন। তিনি কি কারণে শেয়ার ও টাকা কেলেঙ্ককারির সমাধান দিচ্ছেন না এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম ােভের সৃষ্টি হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সিকিউরিটিজের মালিক এম.এ.মুমিমের কথায় ও কাজে মিল পাচ্ছি না। তারা বিভিন্ন ধরনের ঢালবাহনা ও ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সিলেট অফিস ইনর্চাজ অশিক বিল্লাহ বলেন, বিনিয়োগকারীদের অভিযোগের প্রেেিত সুরমা সিকিউরিটিজের লেনদেন বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে তদন্ত চলছে। তিনি আরো বলেন বিনিয়োগকারীরা ইচ্ছা করলে লিংক করে শেয়ার নিতে পারবেন।

এবিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র মন্ডল সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন মন্তব্য করেননি।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.