আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আকাশের নোনা জল...



আজ আকাশের মন ভালো নেই। একরাশ কালো মেঘ যেনো ঢেকে ফেলেছে তাকে। আজ হঠাৎ করেই তার নিজের কাছে জীবনটাকে অসহ্য মনে হচ্ছে। জীবনে বেঁচে থাকার জন্য যতগুলো রং এর প্রয়োজন তার সবকটি রং যেনো আজ হারিয়ে গেছে। সে কি আজ আত্মহত্যা করবে? নাকি অজানার পথে পাড়ি দিবে একাকী? হয়তো, হয়তো না।

জীবনের স্বাদটা এতো তেতো হয়ে গেছে যে, ইচ্ছেমাফিক যে কোনো কিছুই করে ফেলতে পারে সে। মেঘলার বিয়ের কথা চলছে। মেঘলা তাকে বহুবার আত্মস্থ করেছে যে সে আকাশকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবে না। আকাশ প্রতিষ্ঠিত একজন সুদর্শন ছেলে। ভাল কোম্পানীতে চাকুরী করে।

অর্ধলক্ষ টাকার উপরে তার বেতন। সুতরাং মেঘলা তার জন্য যে কোনো ঝুকি নিতে প্রস্তুত। তবে আকাশ কেনো আজ তার জীবনের প্রতি মায়া হারিয়ে ফেলছে? মেঘলা বহুবার জিজ্ঞেস করেছে প্রশ্নটি। কোনো উ্ত্তর পায়নি। মেঘলা খুব করে বুঝতে পারছে যে সমস্যাটি তাকে নিয়ে।

কারন তাদের দুজনার মাঝে সম্পর্ক হবার পর থেকে মান অভিমান হয়নি তা নয়। কিন্তু এমন কোনো দিন যায়নি যে দিন দুজনার মাঝে কথা হয়নি। আজ তেমনই একটি দিন। আকাশ আজ মেঘলার সাথে একটি কথাও বলেনি। কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি।

কেবল শুনেছে। আজ তার বলার ভাষা নেই। জীবনের পদ্যগুলো যেনো আজ ছন্দ হারিয়ে ফেলেছে। আকাশের চোখ ছল ছল করছে। আর কিছুক্ষন মেঘলার পাশে বসা থাকলে সে চোখের পানি ধরে রাখতে পারবে না।

নিজেকে সামলে নিয়ে উঠে পরলো আকাশ। কোনো কিছু না বলেই হাটতে থাকলো পীচঢালা পথ ধরে। মেঘলার চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরছে। পীচঢাকা রাস্তার উপর মেঘের নোনা জল পরে তা আরো কালচে হয়ে যাচ্ছে। কষ্টগুলো যেনো ঝড়ে পরছে বৃষ্টির মত।

আকাশ হাটছে অজানা পথে। কোথায় যাবে জানে না। চোখ দুটো খুব ভারী হয়ে আসছে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে তার। কিন্তু কোথায় কাঁদবে? কার কাছে কাঁদবে? এই কষ্টের কথা কার কাছে বলবে? মেঘলা আকাশের এই নিগুঢ় কষ্টটা কখনো বোঝার চেষ্টা করবে না।

খুব করে সুমুদ্রের কাছে যেতে ইচ্ছে করছে। সাগরের নোনা জল আজ তাকে বড্ড টানছে। নিজের চোখের নোনা জলটুকু সাগরেই একাকার হয়ে যাক। আকাশের এই অশ্রুর মর্যাদা কি সাগর ছাড়া আর কেউ বুঝবে? কেউ বুঝতে চাইবে? আকাশ আর কার কাছে গিয়ে বলবে যে আজ বাংলাদেশ ৫৮ রানে অলআউট হয়েছে বলে চোখ ফেটে কান্না আসছে। বুকের এই কষ্টটা কাকে বোঝাবে? কেউ হয়তো বুঝতে চাইবে না।

মেঘলা, অফিসের বস, বাবা মা.... কার কাছে? তাই আকাশ সমুদ্রেই যাবে..... আবার পিচঢালা পথ ধরে হাটা। হাটতে হাটতে তার চোখ চক চক করে উঠলো। এই প্রথম মুখে হাসি। দৃঢ়তা চোখ। ঘুড়ে দাড়াতে হবে।

নিজের কাছে নিজে পরাজিত হওয়া যাবে না। সে তার সমুদ্রের সন্ধান পেয়ে গেছে। হাতে একটি প্লেকার্ড নিয়ে দাড়িয়ে পরলো বাংলাদেশ টিমের হোটেলের সামনে। "একবার না পারিলে দেখো শতবার। এগিয়ে যাও বাংলাদেশ।

আমরা তোমাদের বিজয়ে যেমন আছি পরাজয়েও আছি"

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।