যে কথা বলতে চাই
বর্তমান সরকার যখন দায়িত্ব নেন, তখন এক কেজি মোটা চালের দাম ছিল ২২/২৩ টাকা। বর্তমানে ৩৬/৩৮ টাকা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা ছিল বর্তমান সরকারের প্রধান নির্বাচনী অঙ্গীকার। চারদলীয় জোট সরকার ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার সময় প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ছিল ১৩/১৪ টাকা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় হু হু করে বেড়ে দাঁড়ায় ২৪/২৫ টাকা।
এছাড়াও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট গত নির্বাচনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে নেয়। ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর কথা শুনে ভুক্তভোগী মানুষ সেই আশায় বুক বাঁধে। কিন্তু আশা পূরণ হয়নি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীলরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলেছেন, এখনও বলছেন।
প্রধানমন্ত্রী ইতোপূর্বে বলেছেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আছে, আবার বলেছেন চক্রান্ত করে দাম বাড়ানো হচ্ছে, সংসদে বলেছেন যে, ১০ টাকা কেজি চালের কথা বলেছিলাম ১৯৯৬ সালে, আবার এও বলেছেন যে, এখন বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকলে চালের দাম ৮০/৯০ টাকা হতো। বাণিজ্য মন্ত্রী নানা সময় নানা কথা বলেছেন, এখনও বলছেন। সর্বশেষ তার বক্তব্য হচ্ছে যে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে দাম কম। এটা একটা বিভ্রান্তিকর বক্তব্য। ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে চালের দাম বেশি।
আর যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের অথবা প্রতিবেশী ভারতের অর্থনীতি আর মাথাপিছু আয় এবং বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এক নয়। সরকারি হিসাবে ২০০৯-১০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জনপ্রতি মাথাপিছু আয় দেখানো হয়েছে ১৩৪ টাকা প্রায়। ব্যয়ের কোনো তথ্য নেই। বর্তমানে অর্থনীতিবিদদের মতে জনপ্রতি মাথাপিছু ব্যয় আড়াইশত টাকার বেশি।
সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ।
যেমন-তৃতীয়/৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী, বেসরকারি প্রাথমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাখ লাখ শিক্ষক কর্মচারী। রাজধানী ঢাকা বা বড় শহরগুলোতে যারা বাস করছেন, যাদের মাসিক আয় ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে। পরিবারের সদস্য সংখ্যা দুই বা তার অধিক- তারা চোখে অন্ধকার দেখছেন। ‘‘না পারছেন সইতে, না পারছেন কইতে। ’’ ভালো নেই গ্রামের মানুষও।
মূল্যস্ফীতি এরই মধ্যে বিপজ্জনক মাত্রা অতিক্রম করেছে। খাদ্যে মূল্যস্ফীতি দুই অংকের ঘর অতিক্রম করেছে। গত ডিসেম্বর মাসে বিবিএস-এর হিসাবে মূল্যস্ফীতি ১১.০১ শতাংশে পৌঁছায়। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ছিল ৯.৫০ শতাংশ।
তাই সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ, দ্রব্যমূল্যের দাম কমান প্লিজ! নয়তো আপনাদের পরিণতিও 'তাদের' মত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।