কানাডার সঙ্গে কথা না বলেই কৃষি শ্রমিক রপ্তানির ঘোষণা দিয়েছিলেন বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী
নতুনদেশ ডটকম
কানাডা সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাস ছাড়াই শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন কানাডা বাংলাদেশ থেকে কৃষি শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে প্রচার করেছিলেন। বাংলাদেশের মিডিয়ায় এই সংক্রান্ত খবর পড়ে কানাডা সরকার বিব্রতও হয়েছেন। অটোয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনকে চিঠি লিখে কানাডা সরকার তাদের প্রতিক্রিয়াও প্রকাশ করেছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন গত বছরের নভেম্বর মাসে বেসরকারি সফরে কানাডা আসেন। মন্ত্রীর সরকারি কর্মসূচী ছিলো মূলত: মেক্সিকোতে।
তিনি ৮ থেকে ১১ নভেম্বর মেক্সিকোতে গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি) মন্ত্রিপর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দেন। ১২ থেকে ১৪ নভেম্বর তিনি কানাডা সফর করেন। এরপর ১৬ থেকে ১৯ নভেম্বর তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) পরিচালনা পর্ষদের ৩০৯তম সভায় যোগ দেন। মন্ত্রী টরন্টো আসেন মূলত ব্যক্তিগত সফরে । টরন্টোতে তাঁর ছেলে সস্ত্রীক বসবাস করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টরন্টো অবস্থানকালে বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে কানাডা সরকারের ফেডারেল বা প্রাদেশিক কোনো পর্যায়েরই কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। ফলে দ্বিপাক্ষিক কোনো বিষয় নিয়ে কানাডা সরকারের কোনো পযায়েরই প্রতিনিধির সঙ্গে তাঁর আলাপ আলোচনা করার সুযোগও ছিলো না। কিন্তু কানাডা থেকে দেশে ফিরেই বিমান বন্দরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন,কানাডা বাংলাদেশ থেকে কৃষি শ্রমিক নেবে। যা পরদিনই ঢাকার মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার পায়।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ঢাকার মিডিয়ায় ফলাও করে প্রকাশিত সংবাদে বিস্মিত হয় ঢাকায় কানাডীয় হাই কমিশন।
তাঁরা বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের কাটিং পাঠিয়ে দেয় অটোয়ায়। ফেডারেল সরকার থেকে ওই খবরের কাটিং সংযুক্ত করে এ ব্যাপারে তথ্য চেয়ে পাঠানো হয় কানাডায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের কাছে।
এ দিকে ‘কানাডা বাংলাদেশ থেকে কৃষি শ্রমিক নেবে’ বলে মন্ত্রীর ঘোষণা শুনেই তৎপর হয়ে ওঠে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। তারা কানাডায় কৃষি শ্রমিক পাঠানোর কথা বলে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিপুল সংখ্যক লোকের সঙ্গে প্রতারনা শুরু করে। এক পর্যায়ে ঢাকায় কানাডীয় হাই কমিশন কৃষি শ্রমিক হিসেবে কানাডা আসার জন্য কোনো মহলের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন না করার পরামর্শ দিয়ে পত্রিকায় বিবৃতি দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ কানাডা থেকে ঢাকায় ফিরে বলেছিলেন, কানাডার সাসকাচুয়ান প্রদেশে প্রধানতঃ ক্যারিবিয়ান দেশের শ্রমিকরা কাজ করে। কিন্তু এখন তারা ক্যারিবিয়ান দেশের পরিবর্তে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে আগ্রহী। ইতোমধ্যে কানাডা এ বিষয়ে মৌখিক সম্মতি দিয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনার জন্য জানুয়ারিতে দেশটির সাসকাচুয়ান প্রদেশের প্রধান বাংলাদেশ সফর করবেন। তিনি বলেন, কানাডার শীত প্রধান ওই অঞ্চলে কাজ করার জন্য শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
দু'দেশ যৌথভাবে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে।
শ্রমিক প্রেরণের ব্যাপারে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সে দেশের সরকারের সাথে প্রাথমিক আলোচনা শেষ করেছে উল্লেখ করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, প্রথম দিকে সীমিত সংখ্যক শ্রমিক পাঠানো হবে। সেখানে তারা ৭/৮ মাস কাজ করার পর দেশে ফিরে আসবে। পরে তাদেরকে সেখানে পুনরায় পাঠানো হবে। তিনি জানান, সাসকাচুয়ান প্রদেশে কৃষি শ্রমিকরা প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ৭শ’ টাকা মজুরী পাবে।
কানাডা সরকারের কারো সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই মন্ত্রী এমন গুরুত্বপূর্ণ ঘোষনা কিভাবে দেন তা নিয়ে কানাডা সরকারের নীতি নির্ধারকদের পর্যায়েও কৌতূহল তৈরি হয় বলে জানা যায়। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুসারে, বাংলাদেশ থেকে কৃষি শ্রমিক আনার ব্যাপারে কোনো ধরনের অগ্রগতি হয় নি। জানা যায়, কয়েকটি প্রদেশ থেকে প্রাথমিক যতটুকু খোঁজ খবর করা হয়েছিলো সেটিও পরে বন্ধ হয়ে যায়।
http://notundesh.com/shirshokhobor.html
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।