ইসলাম সব ধরনের ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড থেকে মুমিনদের দূরে থাকার নির্দেশ দেয়। সংযমের মাস মাহে রমজানে অনেকেই ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে দূরে থাকেন। মাহে রমজানে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে দূরে থাকার যে সাধনা মুমিনরা করেন, তা তাদের খারাপ অভ্যাস ত্যাগের সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয়। যারা ধূমপান ও তামাক গ্রহণের মতো খারাপ অভ্যাস বা নেশায় আসক্ত তারা এ বদভ্যাস ত্যাগে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলে তা অবশ্যই একটি ভালো কাজ বলে বিবেচিত হবে। ধূমপান বিষপানের শামিল। ইসলাম এমন কোনো অভ্যাসকে অনুমোদন করে না, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। একটি জাতির জন্য স্বাস্থ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগতভাবেও তা সবার জন্য অগ্রগণ্য একটি বিষয়। মহানবী (সা.) বলেছেন, স্বাস্থ্য এক বিরাট অনুগ্রহ। তিনি আরও বলেছেন, 'পাঁচটি বিষয়কে পাঁচটি বিষয়ের আগে গনিমতের মতো সুবর্ণ সুযোগ মনে কর, তোমার রুগ্নতার আগে সুস্বাস্থ্যকে।'
মহানবী (সা.) আরও বলেছেন, 'শারীরিকভাবে শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর নিকট দুর্বল মুমিন থেকে উত্তম ও বেশি প্রিয়।' স্বাস্থ্য পরিচর্যায় একটি বিখ্যাত উক্তি হলো_ চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। এ প্রতিরোধ ব্যবস্থার বড় অংশজুড়ে আছে সচেতনতা। ধূমপান, তামাক গ্রহণ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হুমকি সৃষ্টি করে। ধূমপান ফুসফুসের নানা রোগের জন্যও দায়ী। প্রতিবছর ৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে ধূমপান বা তামাক ব্যবহারের পরিণতিতে সৃষ্ট বিভিন্ন রোগে ভুগে। প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এ কারণে প্রাণ হারাচ্ছে। মহানবী (সা.) আমাদের জন্য যে জীবন বিধান রেখে গেছেন, তা মেনে চললে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করা যায়। অসুস্থতা থেকে সুস্থতা ফিরে পেতে তিনি বহু ভেষজ ওষুধের ব্যবহারের কথা বলে গেছেন। এগুলো 'তিব্বুন-নববী' নামে পরিচিত। তিনি কালিজিরা, মধু ইত্যাদি বহু ধরনের দ্রব্যের ঔষধি গুণ সম্পর্কে বলে গেছেন। মহানবী (সা.) কোনো ধরনের চিকিৎসাকে নিরুৎসাহিত করেননি। মহান আল্লাহর কাছে আরোগ্য কামনার পাশাপাশি তাঁরই দেওয়া প্রাকৃতিক উপাদান ও বুদ্ধি-কৌশল ব্যবহার করে জরা রোগ, অবসাদ, মানসিক বিকার এবং দুঃখ-কষ্ট থেকে উদ্ধারের জন্য তার আদর্শ রেখে গেছেন। রোজা পালন ও সিয়াম সাধনা আত্দশুদ্ধিই শুধু নয়, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার সুযোগও সৃষ্টি করে।
লেখক : খতিব, আল আমিন জামে মসজিদ, খুলনা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।