আমার লেখালেখি এবং চিন্তাভাবনা নিয়েই আমার ব্লগ।
পত্রিকার পাতা থেকে
আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো সরকার স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর করলে যদি জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে তা অন্য জায়গায় করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সরকার। জনগণের ক্ষতি হয় এমন কোনো প্রকল্পে সরকার হাত দেবে না। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রী পরিষদের নিয়মিত সভায় তিনি একথা বলেন বলে সভায় উপস্থিত একজন মন্ত্রী জানান।
মন্ত্রী সাংবাদিকদের আরো জানান, গতকাল বুধবারের মন্ত্রী পরিষদ সভায় প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর' স্থাপন। এ বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সভায় এটাও বলা হয় যে, যারা বিমানবন্দর স্থাপনে বিরোধিতা করছেন তাদের দূরদর্শিতার অভাব রয়েছে। অপরদিকে দায়িত্ব পালনে গাফলতির কারণে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপারকে (এসপি) বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান।
আড়িয়ল বিলে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর' স্থাপনের ইস্যুতে জনবিস্ফোরণ ঘটে গত সোমবার।
২২টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ নিজের ভিটাবাড়ি, আবাদের জমি রক্ষায় রাস্তায় নেমে আসেন। পুলিশের বাধার মুখে বাধে সংঘর্ষ। এতে একজন পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। পুলিশ-সাংবাদিকসহ আহত হন প্রায় ৭০ জন। এই ঘটনার পর পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ নেতারা ৪টি মামলা দায়ের করেন।
মুন্সিগঞ্জের আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল মান্নান বাদি হয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করেন। চারটি মামলায় আসামী করা হয় প্রায় ২১ হাজার। গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ মুন্সিগঞ্জের আলমপুর, লস্করপুর, বাড়ৈখালী, মদনখালীসহ বিভিন্ন গ্রামে হামলা চালায। গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা যায়, ২০ জনকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল সকালে গ্রেফতার করা হয় ১৪ জনকে।
যখন থেকে আড়িয়লবিলে বিমানবন্দর স্থাপনের ঘোষণা দেয়া হয় তখন থেকেই ঐ এলাকার মানুষ প্রতিবাদি হয়ে উঠেন। ইতোপূর্বে কয়েকবার সড়ক অবরোধ, মানব বন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। গোটা মুন্সিগঞ্জ জেলাবাসী দলমত নির্বিশেষে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে আসেন। তাদের একটাই কথা যে, ‘জান দেবো তবু জমি দেবো না।
'
কোনো পূর্ব পরিকল্পনা, প্রকল্পের বাস্তবতা যাচাই-বাছাই না করেই আড়িয়লবিলে বিমানবন্দর নির্মাণের ঘোষণা দেয়া হয়। এছাড়া আদৌ দেশে কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রয়োজন আছে কিনা, তাও যাচাই করে দেখা হয়নি। বর্তমানে দেশে ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে। এর মধ্যে প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ঢাকায়) মাত্র ৪০ শতাংশ ক্যাপাসিটি অনুযায়ী ব্যবহার করা হচ্ছে। ৬০ শতাংশ ব্যবহার হয় না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে দেশে আরো ৪০ বছরের মধ্যে কোনো আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর স্থাপনের প্রয়োজন নেই। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠে যে, প্রায় লাখ কোটি টাকা খরচ করে কার স্বার্থে নতুন বিমানবন্দর? জানা যায়, অতি উৎসাহী কিছু ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর ‘কাছের লোক' হতেই নাকি নতুন বিমানবন্দর স্থাপনের বিষয়টি সামনে তুলে আনেন। আর তারাই পরিস্থিতিকে এই পর্যায়ে ঠেলে দেন।
এদিকে আড়িয়লবিলে বিমানবন্দর হচ্ছে না, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় গতকাল মুন্সিগঞ্জের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। তারা আনন্দ-উল্লাস করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, বর্তমান মহাজোট সরকারের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টিসহ দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষ সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।