আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিবাহ: প্রাচীন গ্রিসে

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
গ্রিক কনে। বিয়ের ব্যাপারটা প্রাচীন গ্রিসে মঙ্গলজনক বলেই মনে করা হত। গ্রিকরা বিশ্বাস করত- প্রাচীন কালের রাজা সিকক্রোপস ছিলেন আধা-মানুষ এবং আধা-দেবতা ।

ইনিই প্রথম একগামী (মনোগ্যামাস) বিয়ের প্রচলন করে মানবসমাজকে সভ্য করে তোলেন। পুরুষ যদিও রক্ষিতা ও বেশ্যার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে স্বাধীনই থাকে, তথাপি বিবাহ প্রতিষ্ঠানটি সন্তানের বৈধতা দেয়। শুধু তাইই নয় বিবাহই ঠিক করে দেয় কার ওপর নারীর অধিকার ... প্রাচীন গ্রিসের মানচিত্র। আজও ওই প্রাচীন অঞ্চলটির প্রতি সভ্য মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। Gamelion হল এথেনিয় পঞ্জিকার একটি মাসের নাম ।

এই গ্রিক শব্দের অর্থ 'বিয়ে'। এটি শীতকালীন মাস। বেশির ভাগ বিয়েই এই মাসে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে ধর্মীয় কৃত্য সম্পন্ন করা হত। যেমন পশুবলি।

তাছাড়া, স্বামীর সংঘে স্ত্রীর নাম অর্ন্তভূক্তি। ( প্রাচীন গ্রিসে পুরুষেরা নানান সংঘের সদস্য ছিল। ) গ্রিক নারী। বিয়ের মাধ্যমে এদের পুরুষের কাছে হস্তান্তর করা হত। এর বেশি মর্যাদা তাদের ছিল না ... প্রাচীন গ্রিসে দু ধরনের পদ্ধতিতে বিবাহ অনুষ্ঠিত হত ।

একটি হল: স্বাভাবিক বাগদান। এতে নারীর বৈধ অভিভাবক বিয়ের আয়োজন করত। অন্যটি হল: এপিডিকাসিয়া। অনেক নারীরই বৈধ অভিভাবক থাকে না। এ ধরনের নারীকে epiikleros বলা হত ; এদের বিবাহ অনুষ্ঠিত হত এপিডিকাসিয়া পদ্ধতিতে।

বিধবা বিবাহকেও এপিডিকাসিয়া বিবাহ বলা হত। নারীর নিজস্ব সম্পদ ছিল না। কাজেই এপিডিকাসিয়া মতে সে বিয়ে করত পরিবারের কোনও পুরুষকে। এর ফলে সম্পদ পরিবারের ভিতরেই থাকত। প্রাচীন গ্রিসের বিয়ের চিত্র প্রাচীন গ্রিসে মেয়েদের বিয়ে হত সাধারনত ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়েসে।

আর ছেলেদের ২০ থেকে ৩০। তাহলে আমাদের অনুকরণীয় ‘প্রাচীন গ্রিসে’ ১৪ বছরের বালিকার সঙ্গে ৩০ বছরের বুড়োর বিয়ে হত! যাক। কিন্তু পুরুষের এত দেরি হওয়ার কারণ কি? তাদের তরুণ বয়েসে সৈন্যবাহিনীতে যোগ দিতে হত, এতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যেত। যা হোক। বিয়ে ঠিক করত পাত্রপাত্রীর অভিভাবকের সিদ্ধান্তে।

হ্যাঁ, প্রাচীন গ্রিসে যৌতুক প্রথা ছিল। তবে যৌতুক নারীকে দিতে হত। নারী যেহেতু স্বামী সম্পদ পেত না। যৌতুক নারীর আপৎকালীন সময়ের সম্বল। যৌতুকের পরিমান ঠিক করত বর-কনের অভিভাবক।

প্রাচীন গ্রিসের কনে প্রাচীন গ্রিসের বিবাহ অনুষ্ঠানে পুরোহিতের প্রত্যক্ষ কোনও ভূমিকা ছিল না। বিয়ের দিন বর পবিত্র ঝর্নায় স্নান সারত। তারপর সেজেগুজে কনের বাড়ি রওনা দিত। সঙ্গে বন্ধুদের মিছিল। তারা ড্রাম (ঢোল) বাজত।

অশুভ শক্তিকে তাড়াতে আতশবাজী পোড়ানো হত। কনেও ভোরে পবিত্র ঝর্নায় স্নান সেরে নিত। স্নান সেরে কনে বিয়ের পোশাক পরত । কনের বাড়িতে অবশ্য বিয়ের অনুষ্ঠান একদিন আগেই শুরু হত । সে অনুষ্ঠান মূলত মেয়েদের।

কনের মাথার চুল কেটে দেবীর হেরার উপাসনালয়ে দেওয়া হত, কনের মেয়েবেলার খেলার পুতুলগুলিও দেওয়া হত । এর মানে হল- 'এখন থেকে তোমার কুমারী জীবন শেষ'! বিয়ের দিন কনের মুখে থাকত অবগুন্ঠন; কনের বন্ধুবান্ধব, আত্বীয়স্বজন কনেকে ধরে ভোজসভায় নিয়ে যেত। ভোজসভায় কনে আপেল কিংবা অন্য ফল খেত। এর মানে হল এখন থেকে খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দায়দায়িত্ব স্বামীর। অবগুন্ঠনবতী সন্ধ্যার আগে আগে কনে যাত্রা করত বরের বাড়ি।

তখনও কনের মুখ অবগুন্ঠনে ঢাকা। রথের ওপর কনে দাঁড়িয়ে থাকত, পাশে বর। রথের পিছন পিছন পরিবারের অন্যরা হাঁটত । তাদের হাতে উপহার। সাধারনত উপহার হত - ঝুড়ি, আসবাবপত্র, অলঙ্কার সামগ্রী আয়না এবং সুগন্ধী।

কখনও পাত্র ভরা সবুজ লতাপাতা। বর-কনের আত্বীয়স্বজন পথের দু’পাশে মশাল জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। তারা গান গাইত। এতে নাকি নবদম্পতির ওপর অশুভ দূর হয়। বরের বাড়ি বিয়ের অনুষ্ঠান (বউভাত?) আরম্ভ হত রাতে।

প্রাচীন গ্রিসের বাড়ির নকশা। গ্রিসের বাড়িঘরের এক অংশের নাম gynaikonitis. একে বলা যায় অন্দরমহল। নতুন বৌয়ের স্থান হত ওখানে। তা নতুন বউকে কি কি কাজ করতে হত? স্বামীর মন রক্ষা করে চলা, সংসারের দেখাশোনা, কাপড় বোনা, অসুস্থ কারও সেবা করা, বাচ্চা হলে ওদের লালনপালন আর পড়াশোনার দায়দায়িত্ব নেওয়া। প্রাচীন গ্রিসে বিবাহের ওপর বিধিনিষেধ ছিল।

প্রাচীন গ্রিসে বিদেশিদের বলা হত Metic । যেহেতু নাগরিকত্ব নির্ভর করত সন্তানের ওপর, সে কারণেই বিদেশিদের সঙ্গে এথেনিয় নাগরিকের বিবাহ বৈধ ছিল না। এ ছাড়া, মা ও বোন কে বিবাহ করা বৈধ ছিল না । তবে পিতার ভাইয়ের সঙ্গে বিবাহ বৈধ ছিল। এবং প্রাচীন গ্রিসে সমকামী বিবাহ বৈধ ছিল।

প্রাচীন গ্রিসে বিয়ে জিনিসটা কিন্তু এতটা রোমান্টিক ছিল না। কেননা, প্রাচীন গ্রিসে মেয়েরা ছিল প্রভূর স্ত্রী। এই সময়ের গ্রিক বিয়ে। অতীতেরই প্রতিচ্ছবি বলা যায় ... তথ্যসূত্র: Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।