আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বন্ধু ছাড়া life impossible, নাকি আল্লাহ'র সন্তুষ্টি ছাড়া life impossible?????--- ইসলাম ও বন্ধুত্ত



আজ বন্ধু দিবসে আমরা বন্ধু বন্ধু বলে দুনিয়া কাঁপাচ্ছি, কিন্তু আসলেই আমাদের বন্ধু কারা হওয়া উচিত??? এই ব্যাপারে ইসলাম কি বলে??? ***আল্লাহ তায়ালা বলেন, যাদের একজন অপরজনের সঙ্গে আমার উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব স্থাপন করে, আমার উদ্দেশ্যে একজন অপরজনকে ক্ষমা করে এবং আমার জন্য একে অন্যকে সহায়তা করে, তারা আমার বন্ধু হওয়ার যোগ্য। ***আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করো এবং সৎ লোকদের সঙ্গী হও। ’ (সূরা তওবা- আয়াত---১১৯) ***"হায় আমার দূর্ভাগ্য, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। আমার কাছে উপদেশ আসার পর সে আমাকে তা থেকে বিভ্রান্ত করেছিল। শয়তান মানুষকে বিপদকালে ধোঁকা দেয়।

" (আল ফুরকানঃ ২৮-২৯) ***"বন্ধুবর্গ সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা নয়। " (আয যুখরুফঃ ৪৭) ###প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, যে দুই ব্যক্তি আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে বন্ধুত্ব স্থাপন করে, তার মধ্যে আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে অধিক ভালোবাসেন, যে আসল বন্ধুকে অধিক ভালোবাসে। ###প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘লোক তার সঙ্গীর স্বভাব-চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত। অতএব সে যেন খেয়াল রাখে কার সঙ্গে সে বন্ধুত্ব করছে। ’ ###সহিহ মুসলিম :: বই ৩১ :: হাদিস ৫৮৭৫ আবু বকর ইবন আবু শায়বা, ইসহাক ইবন ইবরাহীম, ইবন আবু উমার, মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন নুমায়র ও আবু সাঈদ আশাজ্জ (র)......আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ জেনে রাখো! কারো সঙ্গে আমার একান্ত বন্ধুত্ব নেই, যদি এমন কোন বন্ধু বানাতাম তবে আবু বকরকেই বানাতাম ।

আর তোমাদের সাথী আল্লাহর পরম বন্ধু । ###"ব্যক্তি সহজাতভাবে তাঁর বন্ধুকে(ধর্ম) অনুসরণ করে, সুতরাং বন্ধু নির্বাচনে বিবেচনা করা উচিত। " (আবু দাউদ) বই ১৮ :: হাদিস ১৭৮৯ হযরত আবু বকর (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রশংসা করল। রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেঃ তোমার ধ্বংশ হোক! তুমি চুপ থাকো। তুমি তোমার বন্ধুর ঘাড় ভেঙ্গে দিলে।

কথাটা তিনি কয়েকবার বললেন। (তিনি আরো বললেন) তোমাদের যদি কারো প্রশংসা করতেই হয় তাহলে বলো, আমি অমুক ব্যক্তিকে এইরূপ মনে করি যদি সে তার বিবেচনায় ওই রূপই হয়। তবে আল্লাহই তার প্রকৃত হিসাব গ্রহণকারী। তিনি(আল্লাহ) ছাড়া কেউ কারো ভালো (বা মন্দ) হওয়ার সম্পর্কে প্রকৃত ধারনা লাভ করতে পারেনা। (বুখারী ও মুসলিম) ###"একজন ভালো এবং একজন খারাপ সংগীর উদাহরণ হল এরূপ যে, একজন মিশক(সুগন্ধি) বহন করে এবং অপরজন উত্তপ্ত উনুনের হাওয়া উড়ায়।

যে মিশক বহন করছে সে হয় তোমাকে উপহারস্বরুপ কিছু মিশক দিবে, অথবা তুমি তার থেকে কিছু কিনে নেবে, অথবা তার থেকেই সুঘ্রাণ অর্জন করবে। কিন্তু যে উত্তপ্ত উনুনের হাওয়া উড়ায়, হয় তোমার কাপড় পুড়িয়ে দিবে অথবা এর থেকে দুর্গন্ধইই লাভ করবে" (বুখারী) ###রাসূল(সা) বলেন, "শেষ বিচারের দিন সর্বশক্তিমান আল্লাহ ঘোষণা দিবেন, 'কোথায় সে সকল ব্যক্তিরা যারা শুধুমাত্র আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একে অপরকভালোবেসেছিল? আজ আমি তাদের আমার ছায়া দ্বারা নিরাপত্তা দান করব। আজ আমার ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া নেই। (মুসলিম) ###সুহযরত সাইদ খুদরি (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুল (সা) বলেছেন তুমি মুমিন ব্যতিথ কাউকে বন্ধু বানাবেনা এবং তোমার খাদ্য উওম ও খোদাভিরু লোক ছাড়া কেউ জেন খায় না. ###প্রিয় নবীজি (সা.) একবার এক সাহাবীর সঙ্গে জঙ্গলে যান এবং সেখানে দুটি মেসওয়াক বেছে নেন। এর একটি ছিল সোজা এবং অপরটি বাঁকা।

তিনি সোজা মেসওয়াকটি সাহাবীকে দিয়ে দিলে সাহাবী আরজ করলেন, আমার তুলনায় আপনি এর অধিক হকদার। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, যে ব্যক্তি তার বন্ধুর সঙ্গে এক মুহুর্তও থাকে, তাকে সৎসর্গের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে যে, সে এতে আল্লাহ তায়ালার হক আদায় করেছিল কি না? এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, সৎসর্গে স্বার্থত্যাগ করা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার হক আদায় করা। ###নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো জাতির বেশভুষা ও চালচলনের অনুকরণ করবে, সে সে জাতিরই অন্তর্ভূক্ত হবে। কিয়ামতের শেষ বিচারের দিন হাশর হবে তার বন্ধুর সঙ্গে। ##হযরত আবু বকর (রা.) অন্তিমকালে উপদেশ দিয়ে বলেন, সর্বাপেক্ষা দুর্ভাগা সেই ব্যক্তি, যার কোনো নিষ্ঠাবান বন্ধু নেই।

অথবা সামান্য মতপার্থক্য দেখা দিলেই বন্ধুর সঙ্গে যে সম্পর্ক ছিন্ন করে। ##হযরত লোকমান তাঁর পুত্রকে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন, ‘বৎস! একজন জ্ঞানী ও চরিত্রবান লোক খুঁজে বন্ধুত্ব করো। কেননা, চরিত্রবান জ্ঞানী ব্যক্তি ফলবান বৃক্ষের মতো। এর ছায়ায় দাঁড়ালে শরীর শীতল হয় এবং ওপরে আরোহণ করলে ফল লাভ হয়. ##ুহাল্লাব বিন আবি সুফরাহ (রহ.) বলেন, বুদ্ধিমানকে তিন ব্যক্তির বন্ধুত্ব থেকে দূরে থাকা উচিত; আহম্মক, মিথ্যাবাদী ও ফাসেক। কারণ আহম্মক কখনো সুপরামর্শ দিতে পারবে না।

অন্যায়ে বাধা দানের আশাও তার দ্বারা করা যায় না। ফলে আহম্মকের নীরবতা বাকচাতুরি থেকে উত্তম। তার থেকে দূরে অবস্থান তার নৈকট্য অপেক্ষা কল্যাণকর। আর মিথ্যাবাদীর দ্বারা কখনো তোমার সুখ লাভ হবে না। তোমার কথা অন্যদের কানে দেবে।

তোমার ও তাদের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি করবে। আর ফাসেক তার অপকর্মগুলোকে মনোরম আকারে তোমার কাছে প্রকাশ করবে। কোনো দ্বীনি কাজে তোমার সহযোগিতা করবে না। ##শেখ সাদি (রহ.) বলেন, ‘গোপন কথা কোনো বন্ধুকে বলো না। কেননা সে তো কোনো সময় তোমার শত্রুতেও পরিণত হতে পারে।

তেমনি শত্রুকেও সীমাতিরিক্ত কষ্ট দিও না। কেননা কোনো সময় সে তোমার বন্ধুও হতে পারে। তিনি আরো বলেন, দুই ব্যক্তির মধ্যে যদি শত্রুতা শুরু হয়, তবে তাদের মধ্যে তোমার ভূমিকা এমন হওয়া উচিত, যেন আগামীতে কখনো এরা শত্রুতা ভুলে যদি পরস্পর বন্ধুতে পরিণত হয়, তবে যেন তোমাকে তাদের কারো সামনে লজ্জিত হতে না হয়। ##হযরত আলী (রা.) অমূল্য বাণীতে বলেন, দুষ্ট লোকদের কোনো সৎকর্ম দেখে ধোঁকায় পড়ো না। কেননা, এর পেছনেও কোন অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

অনুরূপ, সৎলোকের কোনো এক দুটি মন্দ কাজ দেখেই তার প্রতি বিরূপ ধারণা পোষণ করতে শুরু করো না। কেননা, ভুলত্রুটি মানুষমাত্রেই হতে পারে। ##হযরত আলী (রা.) এক কবিতায় বলেন, ‘সেই তোমার সত্যিকার বন্ধু, যে তোমার সঙ্গে থাকে। তোমার কল্যাণের জন্য নিজের ক্ষতি করে। হঠাৎ করে তোমার অবস্থা শোচনীয় হলে সে নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে তোমাকে সুখ দান করে।

##হযরত আলী (রা.) তাঁর আরো একটি কবিতায় বলেন, তুমি আমার কথা মেনে মূর্খের বন্ধুত্ব থেকে দূরে থাকো। মূর্খের বন্ধুত্ব জ্ঞানীকে বরবাদ করে দেয়। মূর্খের সঙ্গে বন্ধুত্বের পরিণামস্বরূপ মানুষ তোমাকে মূর্খ বলে স্মরণ করবে। ##হযরত হামেদ না’আফ (রাহ.) নামক এক বুজুর্গ বলতেন, কেউ তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে এগিয়ে এলে সহজে তার কাছে নিজের কোনো প্রয়োজনের কথা বলো না কারণ এতে বন্ধুত্বে ফাটল সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে। ##হযরত ওয়াইজ করনি (রহ.) বলতেন, ন্যায়নিষ্ঠা ও সততার ওপর প্রতিষ্ঠিত মুমিন ব্যক্তির বন্ধুর সংখ্যা খুবই সীমিত হয়ে পড়ে, বরং অধিকাংশ মানুষই তার সমালোচনা করতে শুরু করে।

সাধারণ মানুষকে ন্যায়ের প্রতি উদ্বুদ্ধ ও অন্যায়ে বাধাদান করতে গেলে তার আর শত্রুর কোনো সীমা-পরিসীমা থাকে না। ##হযরত ইমাম জাফর সাদেক (রহ.) বলেন, পাঁচ ব্যক্তির সঙ্গ অবলম্বন করো না। ১. মিথ্যাবাদী। তুমি তার কাছে প্রতারিত হবে। মরীচিকাসদৃশ দূরবর্তীকে তোমার নিকটবর্তী করবে এবং নিকটবর্তীকে দূরবর্তী।

২. নির্বোধ। তুমি তার কাছ থেকে কিছুই পাবে না। সে তোমার উপকার করতে চেয়েও নির্বুদ্ধিতাবশত অপকার করে বসবে। ৩. কৃপণ। তুমি তাঁর প্রতি মাত্রাতিরিক্ত মুখাপেক্ষী হলে সে তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিন্ন করবে।

৪. ভীরু কাপুরুষ। সে বিপদমুহূর্তে তোমাকে ছেড়ে চম্পট দেবে এবং ৫. ফাসেক। সে এক লোকমা অথবা এর কমের বিনিময়ে তোমাকে বিক্রি করে দিবে। লোকমার কম কী, জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, লোকমা আশা করার পর তা না পাওয়া। **‘যে ব্যক্তি কথায় কথায় রাগ ঝাড়তে থাকে, তার বন্ধু পাওয়া কঠিন।

’-বুআলী সিনা **যে ব্যক্তি প্রতিশোধ স্পৃহার আগুনে জ্বলতে থাকে, তার অন্তরের রক্তক্ষরণ কখনো বন্ধ হয় না। -বুআলী সিনা **যে ব্যক্তি নির্দোষ বন্ধুর তালাশে থাকে চিরদিন তাকে বন্ধুহীন থাকতে হবে। -কায় সার-খসরু **কাউকে তোমার সামনে অন্যের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করতে দেখলে তৎক্ষণাৎ তাকে বন্ধুর তালিকা থেকে দূরে সরিয়ে দিও। -মামুনুর রশীদ **যার ক্রোধ বেশি, এরূপ ব্যক্তির ভাগ্যে অন্যের বন্ধুত্ব কমই জুটে থাকে। -হযরত ফুজায়েল ইবনে আয়াজ (রহ.)।

*কোনো বন্ধু যদি তোমার গোপন কথা প্রকাশ করে দেয়, তবে সেজন্য তাকে দোষ না দিয়ে নিজেকে শাসন করো। কেননা, নিজের গোপন কথা তুমি তার কাছে প্রকাশ করলে কেন? **বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর অন্তিম উপদেশ আমাদের আলোড়িত করে। তিনি বলেন, যারা কোনো স্বার্থের বশবর্তী হয়ে তোমার কাছে আসে, পরীক্ষা না করে তাদের বন্ধুত্বের প্রতি আস্থা স্থাপন করো না। যাকে তুমি ঘৃণা করো, তাকে ভয় করে চলো। **বীরের পরীক্ষা হয় যুদ্ধের ময়দানে, বন্ধুর পরীক্ষ হয় বিপদের সময় এবং বুদ্ধিমানের পরীক্ষা হয় ক্রোধান্বিত অবস্থায়।

-(ইমাম জমখশরী (রহ.) এর বাণী) **শত্রুর চেয়ে বন্ধুকে হাজার গুণ বেশি ভয় করো। কেননা বন্ধু যদি কখনো শত্রুতে পরিণত হয়, তবে শত্রুতা উদ্ধার করার হাজার পথ তার সমানে খোলা থাকে। -জনৈক বুজুর্গ *#*মহানবী (সা.) এ জন্যই ইরশাদ করেছেন- ‘অসৎ সঙ্গীদের চেয়ে একাকিত্ব ভালো। আর একাকিত্বের চেয়ে সৎ সঙ্গী উত্তম। ’ Click This Link আল্লাহতালা আমাদেরকে উত্তম বন্ধু দান করুন।

আমীন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.