আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শীতকালে নানুর বাড়ি

নিজকে নিয়ে উদাস আমি, পরকে নিয়ে কখন ভাবি...

একসময় শীতকালটাতে নানুবাড়ি না গেলে ভাল লাগত না। আদিকালের সেই জমিদারদের মতো নানুর বিশাল বাগানবাড়ি। চারপাশে আম-কাঠালের গাছ। আতাফল, লেচু, পেয়ারা, আমরা, জলপাই, বড়ই এসবেরও কমতি নেই। নানুর ছিল দুই ছেলে নয় মেয়ে।

ত্রিশ জনের মতো নাতি-নাতনি। সকলে যখন একসঙ্গে জড়ো হয় ছোট-খাট একটা মেলা যেন বসে বাড়িটাতে। নানু যতœ করে নানারকম ফল ফলাদির গাছ লাগিয়ে রাখতেন। মামারা কিনে রাখতেন বেট-বল। খালারা কিনে রাখতেন গল্পের বই।

সুন্দর সুন্দর ছড়ার বইও রাখতেন। দাঁতখানি চাল/মশারির ডাল, চিনি পাতা দই/আধাসের খই- প্রায় দুইযুগ আগের এসব ছড়া এখনো সব নাতি-নাতনির ঠোঁটেই ঘুর ঘুর করে। ছড়াগুলো কত যে ভালো লেগেছে আর কত বার যে পড়েছি তার কোনো ইয়ত্তা নেই। মেলার মত বাড়িটিতে যার যা ইচ্ছে সে তাই করত। কেউ বেট-বল নিয়ে খেলায় ব্যস্ত।

কেউ আবার আড্ডা দিত দিনভর। সিমা খালার রান্নার হাত ছিল চমৎকার। নানারকম পিঠা-পুলি বানিয়ে খাওয়াতেন আমাদের। আজ এক আইটেম তো কাল অন্য আইটেম। কেউ একটু কম পেলে সে কি কান্নাকাটি।

খর-ভূসি দিয়ে নানু বিশাল এক আগুনের কুণ্ডুলি বানিয়ে রাখতেন রাতে। সকালে সেই আগুন লাল টকটকে হয়ে থাকত। আগুনের চারপাশে বসে গরগরি পিঠা পুড়িয়ে খেতে কি যে মজা! এখনো যেন মুখে লেগে আছে। নানুর নাতি-নাতনিরা এখন বড় হয়ে গেছে। নানুবাড়ির ছোট বেলার মেলাময় আড্ডা কমই জমে।

তবে এখনো শীত এলে নানুবাড়ি যেতে ভুল হয় না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.