আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোরের কাগজ- এর লাইফ স্টাইল ৮ পৃষ্ঠার ট্যাবলয়েড - "ফ্যাশন "( ১৬-০১-২০১১ সংখ্যা ) বিয়ে সংখ্যা



পুরো ফ্যাশন প্রিন্ট প্রিভিউ অন লাইনে দেখতে পাবেন http://www.bhorerkagoj.net এই ঠিকানাতে। আর ফেসবুকে Fashion ( lifestyle tabloid at bhorer kagoj ) এই ঠিকানাতে বিয়ে দুটি হৃদয়ের বন্ধন কাভার মডেল : শার্লিন ও সাঈদ, পোশাক : ওটু, বনানী, উত্তরা, বসুন্ধরা। ব্রাইডাল ফ্যাশন বিয়ের আসরে বরকনে বসে থাকটা কিন্তু কম কষ্টের কাজ নয়। বিশেষ করে আসর ভর্তি মানুষের দৃষ্টি যখন তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে। তারপরও রয়েছে হালের ফ্যাশন স্টেটমেন্টের চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে সদাতৎপর উচ্চকণ্ঠি আন্টি আর অ্যাটিচুডঅলা বান্ধবীর গ্যাঙ।

কাজেই ট্রেন্ড আর ট্রাডিশনের হালচাল না জেনে উপায় আছে? তাই আপনার বিয়ের পোশাকটি যদি এখনো না কিনে থাকেন, তাহলে জেনে নিন চলতি মৌসুমের প্রাইডাল ফ্যাশন ট্রেন্ড। ফিউশন বর্তমান প্রাইডাল ফ্যাশনকে মোটামুটি মাপের ধাক্কা দিতে প্রস্তুত ফিউশন ব্রাইডাল পোশাকগুলো। এই উপমহাদেশে বিয়ের পোশাকে ফিউশনের প্রচলন সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য না হলেও উৎকর্ষের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বৈকি। সালোয়ার বা লেহেঙ্গার সঙ্গে লং কোট বা শাড়ির সঙ্গে কিমোনোর যুগলবন্দি আজ থেকে দুবছর আগেই দেশের স্বনামখ্যাত ডিজাইনার আনিলা হক আমাদের উপহার দিয়েছেন। কিন্তু এই মৌসুমেও নতুনত্ব প্রকাশ পেতে পারে বৈচিত্রের সহযোগে।

শাড়ির সঙ্গে এখনকার ফিউশনভিত্তিক ট্রেন্ড হচ্ছে গাউনের লেসের সংযোজন। সঙ্গে করসেট চপস বা রতœাকারী ব্লাউস জুড়ে দিলেই হয়ে যেতে পারে একটি ওয়েস্টার্নএথনিক ব্রাইডাল আউটফিট। এমনকি কাট, প্যাটার্ন আর সিলওয়েটেও এ মৌসুমে প্রাধান্য পাবে ফিউশনের ব্যাকরণ। চলতি মৌসুমে বিয়ের ফিউশনধর্মি পোশাকের বেসিক ম্যাটেরিয়াল হিসেবে ট্রেন্ডি ফ্যাব্রিকগুলো হচ্ছে জ্যাকার্ড, টাফেটা, টেক্সচারড সারফেস আর গর্জিয়াস ভেলভেট। জমিন অলঙ্করণ মাধ্যম হিসেবে ফিউশনের সানন্দ সঙ্গী হতে পারে জারদৌসি, গোটাপাত্তি আর সূক্ষ্ম এম্ব্রয়েডারি।

প্ল্যানিং ওয়ারড্রব সরাসরি ছাদতলায় গিয়েই কার্যসিদ্ধির প্ল্যানিং থাকলে রেডি টু ওয়্যার কালেকশন ছাড়া গতান্তর নেই। তবে এ ক্ষেত্রে এবার শাড়ির রাজত্ব মেনে নিতেই হবে। মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ কম্বিনেশন অর্থাৎ শাড়ির উল্টো ররঙের ব্লাউস এবারের হট ট্রেন্ড। সিক্যুইনড মসলিন শাড়ি, লেস দেয়া সিল্ক শাড়ির সঙ্গে এবারের বাজার গরম করতে আসছে স্লিমফিট ড্রেপ স্টাইল আর ওয়াইড নেক ব্লাউস। এ ক্ষেত্রে শাড়ির পরার স্টাইলের ওপর ভিত্তি করে আঁচল পছন্দ করাটাই বুদ্ধমানের কাজ।

শাড়ির সিক্যুইনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ট্রেন্ড বলছে কন্ট্রাস্ট রঙের চুমকি আর ডলার ব্যবহারের কথা। সঙ্গে প্যাচওয়ার্কের লেসও উপমহাদেশীয় ট্রেন্ড হিসেবে জায়গা করে নিতে পারে আপনার বিয়ের শাড়ির জমিনে। গ্ল্যামারাস অ্যান্ড গর্জিয়াস যারা শাড়ির ধারণাকে বদলে নিতে চান তাদের জন্য য়েছে বিয়ের পোশাকের আরেকটি নব্য বিকল্প। বলিউড নায়িকাদের মতো করে বউ সাজতে চাইলে এবারের মৌসুমে বিয়ের পোশাক হিসেবে বেছে নিন মাল্টিলেয়ার্ড বা মারমেইড কাটের লেহেঙ্গা। একই রঙের শেড বা কন্ট্রাস্ট রঙের দুটি অথবা তিনটি লেয়ার দিয়ে তৈরি হয় লেয়ার্ড লেহেঙ্গা।

সঙ্গে যোজিত হয় ফ্রিল আর বর্ণিল লেস। আর মারমেইড কাট এখন ইন ফ্যাশন কোমর এবং নিতম্ব থেকে ফিটেড হয়ে নেমে আসা এই লেহেঙ্গার নিচের ঘের অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত। যার জন্য মৎস্যকন্যার লেজের মতোি একটি শেপ পাওয়া যায় এতে। সঙ্গে যোগ হতে পারে পিনটাক নেক অথবা আসিমিট্রিক কাটের চোলি আর ড্যাজলিং চুনরি। ক্লাসিক ফ্যান্টাসি বিয়ের রঙ ভিন্নতা পায় সংস্কারের বিচারে; নৃতাত্ত্বিক কারণে কখনো তা সাদা আবার কখনো লাল টুকটুকে।

অবশ্য এই উপমহাদেশে মেয়েদের বিয়ের পোশাক মানেই লাল। চলে আসছে যুগ-যুগ ধরে। কিন্তু হালে এসব বদলে যাচ্ছে ফ্যাশনেবল তরুণীরা কালার প্যালেটে পাচ্ছেন অনেক অপশন। এ বছর উপমহাদেশীয় ট্রেন্ড রিচ আর পাস্টেল শেডনির্ভর। সোনালি শেড, সফট পিঙ্ক, পেল গ্রিন, মেলো ইয়েলো আর পিচ টোন চলতি মৌসুমে ডমিনেট করবে।

সহযোগী রঙগুলোর তালিকায় থাকছে অরেঞ্জ, ওয়াইন শেড, টার্কোয়েজ, রোজ পিঙ্ক এবং জুয়েল শেড। এ ছাড়াও সফট রঙ হিসেবে বেইজ এবং ক্ল্যাসিক ক্রিমের ব্যবহারও দেখা যেতে পারে। সুপাত্রের উত্তরীয় বরের পোশাকে এবারের হট ট্রেন্ড স্লিম ফিটেড শেরওয়ানি। যাকে বলে কি না একেবারে মাসল ফিট। কলিদার এই শেওয়ানির সঙ্গে সংযোজন করা যেতে পারে চুড়িদার পাজামা।

রাজস্থানি লং কুর্তার সঙ্গে পাঠানি সালোয়ারও এবারের ট্রেন্ডসেটারদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পছন্দ। এবারের বাজারে গতানুগতিক পাগড়ির উপস্থিতি থাকলেও, হাটে বাঁধা পাগড়ির ট্রেড এখন হট। বিশেষ করে টিস্যু বা মসলিন দিয়ে পাগড়ি বাঁধা যেতে পারে। এটা এক কথায় ম্যাগনিফিসেন্ট। মখমলের শেরওয়ানি এই মৌসুমে ইন ট্রেন্ড।

বর্তমানে আচকান কাটনিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চলছে সবখানে। সব মিলিয়ে এবারের বিয়ের পোশাকের জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ট্রেন্ড রিডিং। শুধু দরকার সচেতনতা। ফ্যাশন ডিজাইনারদের পাশাপাশি বিয়ে-সংশ্লিষ্ট সবার। বিয়ে নামের দিল্লি কা লাড্ডু না হয় খেয়েই পস্তানো গেলো, কিন্তু পোশাকের ট্রেন্ড বিচারে আফসোসেরও সুযোগ পাওয়া যাবে না, যখন আগামী প্রজন্ম দেখবে পূর্বজদের ফ্যাশন সচেতনতা।

শাহনাজ খান ডিজাইনার ক্রে-ক্রাফট বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রধান ৩টি অনুষ্ঠানের জন্যই আমরা আলাদাভাবে পোশাকের ডিজাইন করে থাকি। প্রথমেই আসে হলুদ। হলুদের শাড়িতে প্রথাগতভাবেই হলুদ, কমলা, বাসন্তী, সবুজÑ এ রঙগুলো প্রাধান্য পেয়ে থাকে। কনেরা হলুদের ক্ষেত্রে সুতি শাড়িটা বেশি পছন্দ করলেও এখন অনেকেই সুতি না পরে সিল্ক, মসলিনও পরছে। হলুদে বর আর পোশাকের ক্ষেত্রে হলুদ, কমলা, বাসন্তী, লাল পাঞ্জাবিতে অরনামেন্টাল কাজ অথবা প্রিন্টের সঙ্গে হাতের কাজ করা থাকে এবং উত্তরীয় তো থাকছেই।

বিয়ে অথবা বৌভাতে বরের জন্য জারদৌসি এবং কারচুপির ভারী কাজ করা শেরওয়ানি, সঙ্গে মেলানো পাগড়ি, নাগরাও পাওয়া যায়। শেরওয়ানির ভেতর পরার জন্য অফ-হোয়াইট, মেরুন, সবুজ, লালের ওপর কাজ করা বিয়ের পাঞ্জাবিও আছে। কনের জন্য মসলিন অথবা সিল্কের ওপর এম্বব্রয়ডারি, কারচুপি করা পুরো শাড়িজুড়ে ভারী কাজের শাড়ি রয়েছে যাতে লাল, গোলাপি, মেজেন্টা, অফ-হোয়াইট রঙকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। শাড়ির সঙ্গে মেলানো ব্লাউজ পিস আর দোপাট্টাও রয়েছে বিয়ের শাড়িতে। এছাড়া কেউ যদি নিজেদের মনমতো ডিজাইন দিয়ে বর-কনের পোশাক বানাতে চায় তারও ব্যবস্থা রয়েছে।

১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আর এর মাঝেই অর্ডার দিয়ে বানানো যাবে বিয়ের পোশাক। শাহীন আহমেদ ডিজাইনার অঞ্জনস আমাদের দেশে বিয়ে একটি ঐতিহ্যবাহী প্রথা বলা যায় তাই বিয়ের ক্ষেত্রে হলুদ,বিয়ে,বৌভাত যাই হোকনা কেন অনেক বছরধরে পোশাকের ডিজাইন বা রঙের খুব বেশী পরিবর্তন হয়নি। হলুদে ছেলেদের জন্য কটন, এন্ডিকটন,সিল্কের উপর হাল্কা কাজ করা হলুদ,লাল,কমলা রঙের পাঞ্জাবি মানানসই। আর শেরওয়ানী ছাড়াতো বিয়েতে বরের আমেজই থাকেনা। দুপিয়ান সিল্কের উপর মেশীনে এম্ব্রয়ডারী অথবা কারচুপী করা ভারী কাজের শেরওয়ানী বিয়েতে মানায়।

এছারা চাইলে বৌভাতেও সিল্ক,এন্ডিকটনের উপর কাজ করা পাঞ্জাবি পরা যেতে পারে। কনের প্রতি বরাবরই সবার নজর থাকে তাই কনের শাড়ীতে রঙের উজ্জলতার ব্যপারটা মাথায় রেখেই ডিজাইন করা হয়। হলুদে সাধারনত কটটন, এন্ডিকটনের উপর ব্লক অথবা এম্ব্রয়ডারির কাজ করা হয় । এছাড়া এখন কাতানের পাড় বসানো শাড়ীও জনপ্রিয় । আর বিয়েতে রাজশাহী সিল্ক বা মসলিনের উপর সিকোয়েন্সের কাজ , কারচুপী ছারাও কাতানের পাড় ও আচলের সংমিস্রনে শাড়ী খুব চলছে এখন।

সাথে মেলানো সিল্ক বা মসলিনের ওড়না এবং ব্লাউজ থাকে। শাহরুখ আমিন টিংকু ডিজাইনার আলতামিরা হলুদের কনে সবসময় হলুদ রঙের শাড়ি পরলেও এখন সেই চিরচেনা হলুদ রঙ থেকে একটু সরে এসে অফ হোয়াইট, সবুজ, লাল, ম্যাজেন্টার কন্ট্রাস্টে ক্রেপ, এন্ডি-সিল্ক এবং মসলিনের ওপর কাজ করা শাড়িটাই চলছে বেশি। আর বিয়ের শাড়ির ক্ষেত্রে লাল রঙের ছোঁয়া থেকে বেরিয়ে ফিরোজা, সবুজÑ এ রঙগুলোর ধুপিয়ান, সিল্কের ওপর আ্যান্টিকের কাজ করা শাড়ি অনেক বেশি পরা হচ্ছে আজকাল এবং চাইলেই সেই সঙ্গে মেলানো ওড়না এবং হাতের কাজ করা ব্যাগও পাওয়া যাবে। ছেলেদের শেরওয়ানিতেও আ্যান্টিকের কাজ বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। ব্রাউন, কফি এসব রঙের শেরওয়ানিগুলোর সঙ্গে নাগরা, পাগড়ি এবং উত্তরীয় থাকছে।

বর-কনের মনের মতো করে অর্ডার দিয়েও পোশাক বানানো সম্ভব। ১৫ হাজার থেকে ৩৫,০০০ টাকা খরচ পড়বে। অনুলিখন : নুজহাতুল কাওনাইন বিয়ের আগের প্রস্তুতি তানজীমা শারমীন মিউনী বিউটি এক্সপার্ট, হেয়ারোবিক্স সৌন্দর্যচর্চা কোনো তাৎক্ষণিক ব্যাপার নয়। এর কোনো ইমিডিয়েট এফেক্টও নেই। বহুযতেœর পর দেহ যেমন সুগঠিত হয়, তেমনি শুধু শ্রম ও সময় নয়, দীর্ঘ পরিচর্যার পর সৌন্দর্যের সার্বিক বিকাশ হয়।

কিছু সাবধানতা ও প্রচেষ্টায় মানুষের স্বাভাবিক সৌন্দর্য বিকশিত হয়। যেমন-ঘুম, স্বভাবতই যে কোনো বড় ঘটনার আগেই মানসিক যে উত্তেজনা হয় তাতে সর্বপ্রথম ঘুম কমে যায়। আর পর্যাপ্ত ঘুম না হলে তার ছায়া চোখেমুখে পড়তে বাধ্য। চোখেমুখে সতেজতা আনতে ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। এ সময় রোদে বেরুতে হলে অবশ্যই সানগ্লাস পরবেন।

রোদে শুধু যে রং কালো হয় তা নয়, স্কিনে একটি রুক্ষভাব আসে। সানগ্লাস সবসময় একটু বড় মাপের হওয়া ভালো। যাতে চোখের পাশটাও ঢেকে রাখে। না হলে সূর্যের তীব্র আলো সানগ্লাসের ধার দিয়ে চোখ ও চোখের পাশের স্কিনে লাগলে চোখ ছোট দেখায় ও স্কিনে বলিরেখা পড়ে। বিয়ের একমাস আগে থেকেই কিছু নিয়ামবলী মেনে চলা প্রয়োজন।

নতুন জীবনে প্রবেশ করার আগে শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নেয়া দরকার। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমে একগ্লাস গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করুন। খাবারের দিকে নজর দিন। এই একটি মাস অন্তত তেলেভাজা খাবার পরিহার করার চেষ্টা করুন। প্রচুর স্যালাড, ফল, সবজি, দই খান।

মুরগির মাংস মাছ খাবেন। রেডমিট না খাওয়াই ভালো। চুল : চুলের যতœ : চুলের যতেœ প্রথম ও শেষ কথাই হচ্ছে পরিষ্কার পরিছন্নতা। প্রত্যেকের চুলের ধরন এক নয়। তাই চুলের ধরন অনুযায়ী যতেœর প্রয়োজন।

শুষ্কচুল : শ্যামপুর ২/৩ ঘণ্টা আগে পুরো মাথায় উষ্ণ হেয়ার অয়েল লাগিয়ে আলতোহাতে ম্যাসাজ করুন ১৫/২০ মিনিট। ডিমের সাদা অংশ, এক-চামচ আমলকীর গুঁড়া, ১ চামচ মোমগুঁড়ো, দু-চামচ টকদই, ২ চামচ মধু, একটি জবাফুল বাটা, একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে পুরো চুলে এক ঘণ্টা লাগিয়ে রেখে, ভেষজ কোনো শ্যামপুর সাহায্যে ধুয়ে ফেলুন। আর খুশকি থাকলে প্যাকটির সঙ্গে লেবুর রস মেশান। শুষ্কচুলে কোমলতা ও মসৃণতা ফিরিয়ে আনতে পাকা কলা, পাকা পেঁপে ও মধু একসঙ্গে পেস্ট করে প্যাক বানিয়ে মাথায় লাগিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত চুল : শ্যামপুর আগের রাতে রিঠা, শিকাকাই, আমলকী ভিজিয়ে রেখে পরেরদিন ফুটিয়ে সেই পানিতে চুল ধুয়ে ফেলুন।

এমন চুলে তেল ও কন্ডিশনারের ব্যবহার না করলেও চলে। দুচামচ ভিনেগার, একটা ভিটামিন ই-ক্যাপসুল। এক চামচ লেবুর রস, একটি ডিমের কুসুম মিশিয়ে প্যাকবানিয়ে ৩০-৪০ মিনিট পুরো মাথায় লাগিয়ে রেখে হার্বাল শ্যামপুতে চুল ধুয়ে ফেলুন। শেষে একমগ পানিতে চায়ের লিকার, ভিনেগার ও বিথার মিশিয়ে পুরোচুল ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের তেলতেলে ভাব, প্রাণহীনতা দূর হয়ে ফিরে আসবে বাউন্স, যা চুল আছে দেখাবে তার থেকে অনেক বেশি।

খুশকির সমস্যা থাকলে এক চামচ নিমপাতা রস, আধা চামচ তুলসিপাতার রস, দু-চামচ মেথিকাটা, এক চামচ ভৃঙ্গরাজ, এক চামচ ভিনেগার ও এক চামচ পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পুরোচুলে আধাঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। যেদিন প্রথমের প্যাকটি লাগাবেন তার দ্বিতীয়দিন দ্বিতীয় প্যাকটি লাগাবেন। স্বাভাবিক চুল : উজ্জ্বলতা বাড়াতে সপ্তাহে দুদিন, দুচামচ ক্যাস্টর অয়েল, এক চামচ কেশুতপাতা বাটা, দুচামচ মধু, এক চামচ আমলা, ও ব্রাক্ষীতেল, এক চামচ ভিনেগার, আধা চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন চল্লিশ মিনিট। এরপর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগান। চুলের চিকনতা বাড়াতে মেথি ও লেটুসপাতা ফোটানো পানিতে ১ চামচ ভিনেগার, ১/২ কাপ চায়ের লিকার দিয়ে চুল ধরে ফেলুন।

চুল ভালো রাখতে কিছু নিয়মাবলী : * ভিজা চুল আঁচড়াবেন না বা বাঁধবেন না। চুল আঁচড়াবেন ধীরে ধীরে। বিয়ের আগে চুল স্ট্রিম করুন। * প্রয়োজনে শ্যামপু করুন প্রতিদিনই। চুল ধোবেন প্রচুর পানি দিয়ে।

যাতে শ্যামপু চুলে থেকে না যায়। ময়লাচুলে তেল দেবেন না। এতে চুল বেশি পড়ে। * নিজের চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। * কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট (চুলে কালার বা পার্ম) করালে চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারিয়ে যায়।

সেক্ষেত্রে প্রয়োজন চুলের বাড়তি যতেœর। * ব্যবহৃত হেয়ার ব্রাশ বা চিরুনি নিয়মিত পরিষ্কার রাখবেন। * ২ মাসে একবার অন্তত চুলস্ট্রিম করানো ভালো। বেশি হেয়ার ড্রায়ারের ব্যবহার চুলের জন্য ক্ষতিকারক। * ভিটামিন বি,সি,ই ও প্রোটিন যুক্ত খাবার খেলে চুলের জন্য ভালো।

* পানি বেশি পরিমাণে খান। শাকসবজি ও ফলে চুলের চিকনতা বাড়ে। রাতে টানা অন্তত আটঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। * শ্যামপুর এক দুঘণ্টা আগে মাথায় তেল লাগিয়ে আলতো হাতে ম্যাসাজ করুন। গরম পানিতে টাওয়েল ভিজিয়ে পানি নিংড়ে মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন।

কয়েকবার করুন, তারপর শ্যামপু করে ফেলুন। চায়ের লিকারে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে নিন। শ্যামপুর পরে এই মিশ্রণে মাথা ধুলে চুলের মসৃণতা ফিরে এসে চুল পড়াও বন্ধ হবে। * ক্লিপ, হেয়ার ব্যান্ড ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখবেন সেগুলো চুলের গোড়ায় টান সৃষ্টি না করে। এতে চুল ছিঁড়ে বা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

* সূর্যতাপে চুল রুক্ষ হয়। তাই রোদে বেরুলে ছাতা বা স্কার্ফ ব্যাবহার করুন। বৃষ্টির পানিতে চুল ভিজলে শ্যাম্পু করে নিন। ত্বকের যতœ : হবু কনেকে ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে একটুকরো কাঁচা হলুদের রস ও এক চামচ কাঁচা আমলকীর রস একত্রে মিশিয়ে খান। নিয়মিত পার্লারে গিয়ে ফেশিয়াল করান।

একজন বিউটি এক্সপার্টের কনসালটেন্সি গ্রহণ করুন এবং সেই অনুযায়ী আপনার ত্বকের যতœ নিন। চুলের মতোই ত্বকের যতœও নেয়া উচিত ধরন অনুযায়ী। তৈলাক্ত ত্বক : ত্বক অবশ্যই সব সময় পরিষ্কার রাখবেন। সুযোগ পেলেই পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে নেবেন। এক চামচ মুলতানি মাটি, নিমপাতা বাটা, লবঙ্গবাটা ২টি, কাঁচা হলুদবাটা ১ চামচ, তুলসীপাতা বাটা এক চামচ, এর সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে মুখ-গলা-ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন।

শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন। ব্রনের সমস্যা থাকলে এক চামচ নিমপাতাবাটা, এক চামচ হরীতকী বাটা, এক চামচ চন্দন বাটা, ডাবের পানি এক সঙ্গে মিশিয়ে ব্রনের ওপর লাগান উপকার পাবেন। ব্রনের ওপর হাত দিবেন না। এ থেকে মুখে দাগ হতে পারে। ব্রনের দাগ দূর করতে ডাবের পানি ও কাঁচা দুধ মিশিয়ে লাগান।

শুষ্ক ত্বক : মধু ও একটি পাকা কলা একসঙ্গে মিশিয়ে সারামুখ ও গলায় লাগিয়ে রাখুন। আধাঘণ্টা পরে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নারিকেলের দুধ, বাদাম বাটা ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বকের শুষ্কভাব দূর হবে। শীতের সময় যতটা পারবেন কমলালেবু, গাজর খান ও একই সঙ্গে মুখে মাখুন। শুষ্কত্বক শীতে আরো বেশি রুক্ষ হয়ে যায়।

তাই আমন্ড বাটা, সামান্য দুধ, মধু ও পাকা পেঁপে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন। আমন্ড, পাকা পেঁপে ত্বকের হারানো আর্দ্রতা ফিরিয়ে দিতে পারে। পাকা পেঁপের একটি ছোট্ট টুকরা সামান্য চটকে নিয়ে গোসলের আগে ও রাতে আলতো করে মুখে ম্যাসাজ করে নিন। এটি ত্বক ময়েশ্চারাইজ করার সঙ্গে সঙ্গে পিগমেন্টেশনের সমস্যার সমাধান ঘটায়।

শীতে ফাটা ঠোঁটের সমস্যায় গোলাপ ফুলের পাপড়ি মিহি করে বেটে পেট্রোলিফস জেলি মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। বিয়ের আগে থাকে হাজার রকমের কাজ। কাজের চাপে ত্বক কেমন যেন কালচে নি®প্রভ হয়ে যায়। এর থেকে রেহাই পেতে আমন্ড বাটা মধু, গাজারের রস, আলুর রস, টোম্যাটোর রস, শশার রস ও গোলাপ জল মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন।

চোখের যতœ : বিয়ের কনেদের হাজারো চিন্তা থাকে এবং বিয়ের আয়োজনেও কাজ করতে হয়। তত্ত্বসাজানো, বিয়ের লিস্ট, মেনু ঠিক করা বড়দের সঙ্গে শপিং এবং নতুন পরিবেশে নিজেকে কিভাবে মানিয়ে নেবে এসব হাজার চিন্তা কাজ ও টেনশনের কারণে ক্লান্তিভাব দেখা দেয়। চোখের নিচে পড়ে কালি, আলুর রস, শশার রস, মোচার রস, আমন্ড ও কর্পূর একসঙ্গে মিশিয়ে তুলোয় করে চোখের ওপর দিয়ে শুয়ে থাকুন। দেখবেন চোখের ক্লান্তি সরে গিয়ে নিজেকে তরতাজা লাগবে। হাত ও পায়ের যতœ : হবু কনেকে মাসে অন্তত ২/৩ বার পেডিকিওর ও মেনিকিওর করানো জরুরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও কোমল হাতপায়ের জন্য।

এ ছাড়াও নিয়মিত বাড়িতে হাত পায়ের যতœ নেয়া জরুরি, হাত পায়ের অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে ওয়াক্সিং করুন। হাত পায়ে কালো ছোপ পড়লে ফেয়ারপলিশ করে পেডিকিওর মেনিকিওর করুন। পুরোনো নেইল পলিশ হাত পায়ের নখ থেকে তুলে নেল-কাটারের সাহায্যে নখগুলো সুন্দর শেপ করে কেটে ফাইল করে নিন। একটি পাত্রে উষ্ণগরম পানি নিয়ে তাতে শ্যামপু মিশিয়ে পর্যায়ক্রমে হাত পা ডুবিয়ে রাখুন। ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করুন।

ঠাণ্ডা পানিতে হাত পা ধুয়ে ভালোভাবে মুছে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ম্যাসাজ করুন। হাত ও পায়ের আঙুলের ফাঁকেও ভালোভাবে মুছে নিন। এবার আপনার পছন্দ মতো নেইল পলিশ লাগাতে পারেন। হাত ও পায়ের যতেœÑ * রাতে গোলাপজল দুহাতে লাগিয়ে রাখুন ৫ মিনিট। এতে ত্বক কোমল হবে।

* কাজের প্রেশারে হাতে ক্লান্তিভাব বা ব্যথা অনুভব করলে গোলাপজলে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার মিশিয়ে লাগান। সপ্তাহে অন্তত একদিন হাতে ও পায়ে মাক্স লাগান। এক টুকরো পাকা পেঁপে এক চামচ গ্লিসারিন, এক চামচ গোলাপজল, একচামচ মধু, দু চামচ চন্দনের গুঁড়ো এক চিমটে সল্ট একসঙ্গে মিশিয়ে হাত পায়ে লাগিয়ে রাখুন ৩০/৪০ মিনিট। ধুয়ে ফেলুন, নিজেই অনুভব করবেন আপনার হাত-পায়ের কোমলতা। * হাত-পায়ের নখ ভেঙে গেলে লেবুর রস মিশ্রিত পানিতে আপনার হাত পায়ের আঙুল ডুবিয়ে রাখুন।

এতে নখ শক্ত হবে। * কুনইয়ের কালো দাগ দূর করতে এক চামচ লেবুর রস, এক চামচ আলুর রস, এক চামচ দুধের সর, ১ চামচ কাঁচা হলুদবাটা ১ চামচ টোম্যাটের রস, চন্দনবাটা ও গোলাপজল মিশিয়ে লাগান। শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করলে কনুইয়ের কালচেভাবতো দূর হবেই সঙ্গে সঙ্গে হয়ে উঠবে আপনার হাতের ও পায়ের ত্বক অনেক বেশি কোমল মসৃণ। আলোকচিত্র : ওয়েডিং ডায়েরি পরামর্শ আফরোজা কামাল, বিউটি এক্সপার্ট, রেড বর-কনেকে বিয়ের সময়টাতে যেন সুস্থ ও সুন্দর দেখায় তার জন্য বিয়ের তারিখ পাকাপাকি হওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের প্রস্তুতি নিতে হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানে যেহেতু বর ও কনেই প্রধান আকর্ষণ তাই বিয়ের অনুষ্ঠানে বর-কনেকে সতেজ দেখানো এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকার জন্য কাউন্সেলিং করা যেতে পারে। কারণ বিয়ের আগেই নিজেকে গুছিয়ে নেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। বর-কনেকে একসঙ্গে কাউন্সেলিংয়ের জন্য যে কোনো ভালো সেলুনে যোগাযোগ করতে পারেন। যারা একটু বেশি স্কিনি তারা ক্রিমডেট খাবার বেশি করে খাবেন। যারা একটু বাল্কি তারা এক মাস আগে থেকে ৪৫ মিনিট করে হাঁটাহাঁটি করবেন সকালে ও রাতে দুই গ্লাস দুধ খেতে পারেন, তাতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।

বেশি করে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাবেন। বেশি করে পানি পান করবেন ও ফল খাবেন। ড্রেসের ডিজাইনার সিলেক্ট করে ২/৩ মাস আগে বিউটি সেলুন বুকিং দিয়ে রাখবেন। এতে আপনার বিয়ের সাজটা পারফেক্ট হবে। বিয়ের এক সপ্তাহ আগ থেকে ফেসিয়াল, পেডিকিওর, মেনিকিওর, ওয়াক্সিং, থ্রেডিং, হেয়ার স্টাইলসহ যাবতীয় কিছু ঠিক করে নিতে হবে।

ওয়াক্সিংটা অনুষ্ঠানের একদিন আগে করাই ভালো। বিয়ের অনুসঙ্গ বিয়ে মানেই বিশাল কর্মযজ্ঞ। টুকিটাকি কোনো বিষয়ই এ সময় এড়ানো যায় না। বিয়ের সময়টায় খরচ সংকোচনের জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি নজর। তা না হলে অনেক অপ্রয়োজনীয় খরচ হিসাবের খাতাকে করে তুলবে দীর্ঘ।

বিয়ের সময় অনেক কিছুই রয়েছে যেসব খরচ একটু ভেবেচিন্তে করলে অনুষ্ঠান শেষে বাড়তি ঝামেলাও থাকে না। চাই ডিজে আনন্দমুখর বিয়ের অনুষ্ঠানে পূর্ণতা পেতে চাই নাচ-গান। অতীতে সানাই বিয়ের অনুষ্ঠানে অপরিহার্য ছিল। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে আধুনিকতার স্পর্শে সানাই ছাড়া বাঙালির বিবাহ সংস্কৃতিতে জায়গা করে নিয়েছে পপসঙ্গীত। সেই সঙ্গীতও এখন ধীরে ধীরে সেকেলে হয়ে যাচ্ছে ডিজের দাপটে।

এ নগরের এখন বিবাহ, জন্মদিনসহ যে কোনো ধরনের অনুষ্ঠানে দেখা যায় ডিজেদের আধিপত্য। এর কারণ জানতে চাইলে ডিজে রাহাত জানান, একজন সঙ্গীতশিল্পীর পক্ষে ইচ্ছা হলেও সব ধরনের গান একটি অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা সম্ভব নয়। কিন্তু একজন ডিজে ইচ্ছা করলেই শ্রোতাদের চাহিদা অনুযায়ী মিউজিক প্লে করতে পারেন। এ কারণেই আসলে ডিজেদের বিয়ের অনুষ্ঠানে এতো জনপ্রিয়তা। যে কোনো অনুষ্ঠানে ডিজের খরচও খুব বেশি নয়।

মাত্র ২ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে। বিয়ের বাহন বাঙালির বিয়ে সংস্কৃতির সঙ্গে বিয়ের যানবাহন বিশেষভাবে জড়িত। পালকি থেকে এখনকার বিলাসবহুল গাড়ি কিছুই বাদ যায় না বিয়ের আয়োজনকে আড়ম্বর করতে। দুভাবে বিয়ের গাড়ি ভাড়া দেয়া হয়। জ্বালানি খরচসহ অথবা জ্বালানি খরচ ছাড়া।

বরের জন্য ছোট গাড়ি একদিনের জন্য ভাড়া ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা। সে ক্ষেত্রে জ্বালানি খরচ নিজেদের দিতে হবে। মাইক্রোবাস ভাড়া বেশির ভাগ সময় আসনের ওপর নির্ভর করে। আসন বেশি হলে ভাড়া বেশি, আর আসন কম হলে ভাড়া কিছুটা কম দিতে হয়। বিলাসবহুল গাড়ির ক্ষেত্রে প্রতি ১০ ঘণ্টার জন্য সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা দিতে হয়।

ঢাকাতে বিয়ের গাড়ি ভাড়া নেয়ার অন্যতম স্থান হলো ঢাকার মুক্তাঙ্গন মাঠ। বরের পোশাক বরের বিয়ের আয়োজনকে জাঁকজমক করতে হলে প্রয়োজন হয় শেরওয়ানি, পাগড়ি। বরের গায়ে শেরওয়ানি-পাগড়ি থাকলেই বিয়ের আসল আমেজ ফুটে ওঠে। বিয়ের সময় অনেকেই এই পোশাকগুলো ভাড়া নিয়ে থাকে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে শেরওয়ানির ভাড়া ২ থেকে ৫ হাজার টাকা।

পাগড়ির ভাড়া ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা। তবে বিয়ের পোশাক একসঙ্গে প্যাকেজ আকারে নিলে ভাড়া কিছু কম লাগে। গাড়ি সাজাতে বিয়ে হলে সবাই বরের গাড়িটি সাজিয়ে থাকেন। তবে যারা সাজায় তারা বাসায় গিয়ে সাজালে খরচ কিছুটা বেশি দিতে হয়। বরের গাড়ি ৩ হাজার টাকার মধ্যে সাজাতে পারবেন।

অতিথিদের গাড়ি সাজাতে প্রতি গাড়িতে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা লাগে। ডেকোরেটর যারা নিজ বাড়িতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান করতে চান তারা ডেকোরেটর থেকে জিনিস ভাড়া নিতে পারেন। ডেকোরেটরে প্রতিটি জিনিস এক দিনের হিসাবে ভাড়া দেয়া হয়ে থাকে। বিয়েতে প্লেট প্রতিটি ৫ টাকা। এভাবে গ্লাস ৩ টাকা, জগ ১০ টাকা, বোল বা রাইস ডিশ ১০ টাকা, হাফ প্লেট ৩ টাকা, চামচ ২ টাকা, তামার হাঁড়ি ১০০ টাকা।

অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি ৮০ টাকা, হামান দিস্তা ৫০ টাকা, ড্রাম ৫০ টাকা। বেসিন ৩০০ টাকা, চুলা ৫০ টাকা, টেবিল ১০০-১৫০ টাকা, প্যান্ডেল ওয়াটার প্র“ফ প্রতি বর্গফুট ৬ টাকা। সাধারণ কাপড় প্রতি বর্গফুট ৪ টাকা। গেট ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। বরের স্টেজ সাধারণ ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।

অনেকে বিয়েতে শতরঞ্জি ব্যবহার করে থাকে। শতরঞ্জি প্রতি ফুট ২ টাকা। চাদর প্রতিটি ৪০ টাকা, ভিআইপি চেয়ার ৮০০ টাকা, প্লাস্টিক চেয়ার ৬ টাকা, ফোম চেয়ার ২০ টাকা, টেবিল কভার ২৫ টাকা। আলোকসজ্জা বিয়ে বাড়িতে আলোকসজ্জা বাড়তি আনন্দ দেয়। ফুটিয়ে তোলে সৌন্দর্য।

দৈনিক ভাড়ার ভিত্তিতে হ্যালোজেন ১০০ টাকা, টিউবলাইট প্রতিটি ২৫ টাকা, মেটাল লাইট ৫০০ টাকা, এনার্জি লাইট ৫০ টাকা, পারকান ২০০ টাকা, স্ক্যানার ১৮০০ টাকা, ফগ লাইট ৮০০ টাকা, মুভিং হেড ৮০০ টাকা, লেজার ৮০০ টাকা, এসপ্যারো ৩৫০ টাকা। বিয়েতে পুরো বাড়ি সাজানোর জন্য মরিচ বাতির বিকল্প নেই। সাধারণ মরিচ বাতি প্রতি হাজার ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। বিয়ের কার্ড বিয়ের কার্ড দিয়ে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণের রীতি অতি প্রাচীন। মোবাইল এসএমএসের যুগেও বিয়ের মাধ্যমে একটি সামাজিক কাজ সম্পন্ন করতে নিমন্ত্রণপত্র বিতরণ করা জরুরি।

আগে নিমন্ত্রণপত্র হিসেবে পরিচিত ছিল ভাঁজ করা মোটা কাগজের কার্ড, কার্ডের ওপরে থাকতো সুন্দর নকশা আর ভাঁজ খুললে পত্রের মূল অংশ। আর এতে যুক্ত করা হতো রিবন, স্বচ্ছ কাগজ, ফিতা ইত্যাদি। কার্ডের ওপরে পাত্র-পাত্রীর ছবিও যুক্ত করা হতো কখনো কখনো। পরে আসে ভাঁজহীন নিমন্ত্রণপত্র। এ ধরনের নিমন্ত্রণপত্রে তথ্য থাকে কার্ডের সামনের দিকে।

আর তখন দেখা যায় তিন ভাঁজবিশিষ্ট নিমন্ত্রণপত্র, এটি বেশ জনপ্রিয়। ডিজাইনে কলসি, কুলা, পালকি, বরযাত্রীর ছবি ব্যবহার বেশ পুরোনো হলেও তা নতুন রূপে ফিরে এসেছে। আপনি কী ধরনের নিমন্ত্রণপত্র চান এবং বাজেটে হবে কি-না, তা নিশ্চিত হয়েই কার্ডের ডিজাইন নির্বাচন করুন। নিমন্ত্রণপত্রে আপনি বাংলা বা ইংরেজি দুই ধরনের ভাষাই ব্যবহার করতে পারবেন। ডাবল প্যানেল কার্ডে পত্রের মূল অংশ থাকে ডানদিকে আর অনুষ্ঠানের তথ্য থাকে বাঁ দিকে।

আমাদের দেশে বিয়ের কার্ড তৈরির বেশকিছু প্রতিষ্ঠান আছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের ক্যাটালগ থেকে পছন্দসই ডিজাইন বেছে নিতে পারেন কিংবা নিজের ডিজাইনেও কার্ড তৈরি করে নিতে পারেন। বিয়ের কার্ড তৈরির জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আজাদ প্রোডাক্টস (৯৫৫৯৩৯৯, ০১৭১৭৭০৩৭০৩ ), আইডিয়াল প্রোডাক্টস (০১৭১৪১০০৭২৬) উল্লেখযোগ্য। প্রয়োজনে ব্যাংক লোন প্রয়োজনে ব্যাংক লোন বিয়েÑ দুটি সত্তার মেলবন্ধন। গুরুত্বপূর্ণ এ উপলক্ষ সঠিক সময়ে ও সঠিক সিদ্বান্তেই করে থাকে পরিপূর্ণ বয়সের তরুণ-তরুণী।

কিন্তু এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজন হয় প্রয়োজনীয় সামর্থ্যরে। বিয়ের বিবিধ আনুষ্ঠানিক খরচ বহনে আপনি সাহায্য নিতে পারেন বেসরকারি ব্যাংকগুলোর। সরাসরি বিয়ের জন্য বা ব্যক্তিগত কনজ্যুমার ব্যাংক লোনের অধীনে আপনি এই সুবিধা পেতে পারেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটিতে দুই ক্যাটাগরিতে কনজ্যুমার লোনের অধীনে লোন দেয়া হয়। আবেদনকারী চাকরিজীবী হলে তার মাসিক আয় ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা হতে হবে।

৫ বছরের কিস্তি পরিশোধের ভিত্তিতে বিয়ের খরচের জন্য সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে। এখানে সুদের হার ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ব্যক্তিগত লোনের আওতায় এ ব্যাংক থেকে লোন নিতে হয়। সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এখানে বিয়ের জন্য লোন দেয়া হয়ে থাকে। প্রসেসিং ফি ঋণের পরিমাণের দুই শতাংশ।

আবেদনকারীর আয় ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা হতে হবে। ১ থেকে ৫ বছরের মধ্যে এ ঋণ পরিশোধ করতে হয়। এইচএসবিসি ব্যাংক ব্যাংক লোনের জন্য আবেদনকারীর বয়স ২৩ থেকে ৬০ বছর হতে হবে। এ ব্যাংকে ঋণ পেতে চাকরিজীবী হলে তার আয় কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে আয়ের প্রমাণসাপেক্ষে ৫০ হাজার টাকা হতে হবে। যদি আবেদনকারী অটো পে অথবা সেপস গ্রাহক হন, তবে মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা হতে হবে।

যদি আপনি অটো পে গ্রাহক হয়ে থাকেন, তবে মাসিক আয়ের ছয় গুণ এবং সেপস গ্রাহক হয়ে থাকেন, মাসিক আয়ের ১০ গুণ পর্যন্ত ঋণ নেয়া যাবে। সুদের হার ১৯ শতাংশ। প্রতিটি ঋণই মাসিক কিস্তিতে ৪ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। ইস্টার্ন ব্যাংক ইস্টার্ন ব্যাংকে পারসোনাল লোনের এনি পারপাসের আওতায় বিয়ের জন্য ঋণ দেয়া হয়। আবেদনকারীর বয়স ২২ থেকে ৬০ বছর হতে হবে।

আবেদনকারী চাকরিজীবী হলে তার আয় ১৫ হাজার এবং ব্যবসায়ী হলে তার আয় ২৫ হাজার টাকা হতে হবে। সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এ ঋণ দেয়া হয়ে থাকে। সুদের হার ১৫ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১ থেকে ৫ বছর। সিটি ব্যাংক এ ব্যাংক থেকে বিয়ের উদ্দেশ্যে আপনি ঋণ নিতে পারেন সিটি সলিউশনের মাধ্যমে।

ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১২ থেকে ৬০ মাস। সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে কোনো গ্যারান্টার লাগবে না। প্রসেসিং ফি ১ দশমিক ৫ শতাংশ। আবেদনকারী চাকরিজীবী হলে তার মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা।

আত্মকর্মসংস্থানকারী হলে তার আয় ২৫ হাজার টাকা এবং ব্যবসায়ী হলে তার আয় ৩০ হাজার টাকা হতে হবে। প্রাইম ব্যাংক প্রাইম ব্যাংক তিন বছর মেয়াদি সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়। সুদের হার ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ। এ ঋণ পেতে আবেদনকারী চাকরিজীবী হলে তার মাসিক আয় ১০ হাজার টাকা এবং আত্মকর্মসংস্থানকারী হলে তার মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকা হতে হবে। ট্রাস্ট ব্যাংক অভিভাবক বা বিবাহযোগ্য পাত্র-পাত্রী উভয়ই এই ব্যাংকে তিন বছর মেয়াদি লোনের জন্য আবেদন করতে পারে।

অভিভাবকদের আয়ের উৎসের ওপর ভিত্তি করে এ ঋণ দেয়া হয়। আর যিনি বিয়ে করবেন, তিনি নিজে আবেদনকারী হলে বিয়ের যেকোনো ধরনের প্রমাণ (এগ্রিমেন্ট) এ ক্ষেত্রে লাগবে। ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা। সে ক্ষেত্রে সুদের হার ১৭ শতাংশ। ঋণগ্রহীতা চাকরিজীবী এবং ব্যবসায়ী হলে তার আয় ন্যূনতম মাসিক ২০ হাজার টাকা হতে হবে।

মালিহা তাসমীন মুন ফ্রেমবন্দী থাকুক সুখস্মৃতি বিয়ে বোধকরি মানুষের আদিমতম ও সবচেয়ে সচল একটি প্রতিষ্ঠান। এটি পরিবার নামক প্রতিষ্ঠানটিকে সবচেয়ে সংহতি দেয়, এটি তৈরি করে বন্ধন। তাই এ আয়োজনে থাকবে উৎসব মুখরতাÑ এ যেন এক চিরায়ত প্রথা। তাই বিয়ের দিনের স্মৃতি ধরে রাখতে চায় প্রত্যেকেই। কিছু মধুর মুহূর্তই ফ্রেমবন্দী থাকলে শেষ জীবনে তা এনে দিতে পারে প্রশান্তি আর স্মৃতি রোমন্থনের আয়েশ।

তাই বিয়ের সময়কার মুহূর্তগুলোকে ছবি বা ভিডিওর মাধ্যমে ডিজিটাল বলয়ে বন্দী করতে পারলে ভবিষ্যৎ বিশেষ সময়ে স্মৃতি রোমন্থনের সুযোগ থাকবে প্রবল। যা আনন্দদায়কও বটে। খরচ আলোকচিত্রীর অভিজ্ঞতানুযায়ী খরচ নির্ধারণ হয় এবং তা হয় শিফট ভিত্তিক। বিয়ের সময় নূন্যতম তিন-চার ঘণ্টা ছবি তুলতে খরচ পড়বে ৩ থেকে ১২ হাজার টাকা। বিয়ের সারা দিন পুরো অনুষ্ঠানের ছবি তুলতে খরচ পড়বে ৬ থেকে ১৫ হাজার টাকা।

এছাড়া আরো বড় পরিসরে একাধিক চিত্রগ্রাহক দিয়ে ছবি তুলতে খরচ পড়বে ১০ থেকে ১৮ হাজার টাকা। অনুষ্ঠানে যদি ভিডিও করতে চান তাহলে ভিডিও সম্পাদনাসহ খরচ পড়বে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। অনেক বর কনেই বিয়ের পর স্টুডিও সেশন বিভিন্ন সময় বর-কনে বিয়ের পর আলাদাভাবে স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তুলতে চাইলে খরচ পড়বে ৭ থেকে ২০ হাজার টাকা। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের ছবি তুলতে পারেন, এতে খরচ পড়বে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। বিয়ের ছবি তোলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সাধারণত ১০০টি ছবি অ্যালবামসহ প্রিন্ট করে দেয় ও বাকি ছবি ডিভিডিতে রাইট করে দেয়।

তবে আপনার চাহিদা আরো বেশি থাকলে সে ক্ষেত্রে দামের কিছুটা হেরফের হতে পারে। এখন অনেকেই ডিজিটাল ডায়েরি বা ফটোবুকে ছবি সেট করে নেন। বিয়ের ছবি সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ঠিকানা নিচে দেয়া হলো। ওয়েডিং স্টোরি বিডি, অপূর্ব আবদুল লতিফ বাড়ি : ২৭, রোড : ৪৪, গুলশান ২, ঢাকা। ফোন : ১৯১১৯৯৯৮৮৮ চঞ্চল মাহমুদ ফটোগ্রাফি রোড-২, বাড়ি-১, ধানমণ্ডি, ঢাকা।

ওয়েডিং চ্যাপেল ফোন : ০১৭১৬-৪৮০৫০৩ ডেভিড বারিকদার ফটোগ্রাফি ধানমণ্ডি (রাইফেলস স্কয়ারের পাশে) ঢাকা। আশীষ সেনগুপ্ত ফটোগ্রাফি পুরানা পল্টন লাইন, কুষ্টিয়া সমিতি বিল্ডিং, শান্তিনগর, ঢাকা। ফোন : ০১৭১১৫৩৮৬১৯ আবু নাসের : ০১৭১১২০৯৬৫৬ সাফাওয়াত খান সাফ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।