যাদের ত্যাগ ও সাধনার বরকতে ভারত উপমহাদেশে আজ ইসলামের আগমন ঘটেছে তাদের মধ্যে চিশতিয়া তরিকার বুজুরগানে দীনের নাম সবিশেষ উল্লেখ্য এবং সর্বপ্রথম যার মাধ্যমে আমাদের দেশে এই বরকতময় তরিকার আগমন ঘটেছে তিনি হলেন হজরত খাজা আবু মুহাম্মদ চিশতি (রহ.)। তাঁর মাধ্যমে ইসলামের প্রচার প্রসার ও প্রতিষ্ঠার যে শুভ সূচনা হয়েছিল তারই আলোকময় বাস্তবায়ন ঘটেছিল হজরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.)-এর হাতে। রুহানি জগতের খাঁটি সাধক হজরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.)-এর জন্ম সিস্তানের গনজন পল্লীতে। তাঁর বাবা খাজা গিয়াসউদ্দীন ছিলেন একাধারে আল্লাহভক্ত আবেদ ও বিত্তশালী এবং পরহেজগার। হজরত চিশতি (রহ.) ছিলেন আরবের সুবিখ্যাত কুরাইশ বংশোদ্ভূত হজরত আলী (রা.)-এর বংশধর।
মাতৃ ও পিতৃ উভয় দিক দিয়েই সত্যের সৈনিক শেরে খোদা হজরত আলীর সঙ্গে তাঁর বংশলতিকা জড়িত। তাঁর জন্ম তারিখ নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে বেশ মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। ‘সিয়ারুল আওলিয়া’ নামক গ্রন্থে ১৪ রজব সোমবার ৫৩৭ হিজরির বর্ণনা রয়েছে এবং কারো মতে ৫৩০ হিজরিতে গনজন পল্লীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
একটি কথা জেনে রাখা অতীব জরুরি, হজরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতি (রহ.) ছিলেন একজন পূর্ণাঙ্গ দায়ী-মুবাল্লিগ এবং আলিমে দ্বীন। শরিয়তের যথাযথ অনুসারী একজন আবেদ।
শরিয়তের সঠিক শিক্ষার আলোকে পুরো মানবসমাজকে ঢেলে সাজানোই ছিল তাঁর জীবনের মূল লক্ষ। কিন্তু আমাদের সমাজের মারিফাতপন্থী বলে কথিত একটি শ্রেণী হজরত খাজা চিশতিকে (রহ.) এমনভাবে উপস্থাপন করেন যেন, পবিত্র শরিয়তের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্কই ছিল না। অধিকন্তু তারা নিজেদের পাপ-কুমতলবকে ঢাকার জন্য শরিয়ত ও মারিফাত নামে ইসলামকে দুটি ধারায় বিভক্ত করে সরলপ্রাণ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে রীতিমতো ধোঁকা দিয়ে চলছে অথচ নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রই তাদের এসব মনগড়া জীবনযাপন ব্যবস্থাকে সমর্থন করে না। হজরত চিশতি (রহ.) বলতেন, মাওলার সান্নিধ্য লাভের প্রকৃত পথ হলো নামাজ। নামাজই মুমিনের মিরাজ।
৬ রজব সোমবার ৬২৭ হিজরিতে এশার নামাজ আদায় করার পর সুফি সম্রাট হজরত খাজা চিশতি (রহ.) তাঁর স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী হুজরায় গমন করেন এবং ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। ফজরের সময় আগের নিয়মানুযায়ী তিনি আর জাগ্রত হননি। মুরিদানরা দরজা ভেঙে ঢুকে দেখেন সুফি সম্রাট ইহলোক ত্যাগ করে মাহবুবের সান্নিধ্যে পাড়ি জমিয়েছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।