আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএসএফ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ

কি বলব

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বর্বরতা কতটা ভয়াবহ ও হৃদয় বিদারক তা ফেলানীকে নির্মমভাবে গুলী করে হত্যা করার মধ্যে দিয়েই সে চিত্র ফুটে উঠেছে। সীমান্তের ওপার থেকে মই বেয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় ভারতীয় বিএসএফ বাহিনী নির্দয় ও নিষ্ঠুরভাবে তাকে গুলী করে হত্যা করে। গুলী খেয়ে আহতাবস্থায় কাঁটাতারের ওপর ঝুলে থেকে পানি পানি বলে চিৎকার করলেও মনুষ্যত্বের সামান্য মানবতা দেখায়নি বিএসএফ বাহিনী। তাদের বেপরোয়া হত্যাযজ্ঞের ভয়ানক নৃশংসতা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। কিশোরী ফেলানী দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সাথে ইটের ভাটায় শ্রমিকের কাজ করে আসছিলেন।

তার বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ায় তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে তার বাবার সাথে সীমান্ত পাড়ি দিতে যেয়ে কাঁটাতারে আটকা পড়ে চিৎকার করলে বিএসএফ তাকে নির্দয়ভাবে গুলী করে হত্যা করে। দীর্ঘ সময় লাশ ঝুলে থাকলেও তাকে তার বাবা উদ্ধার করতে পারেনি। জীবনের অমোঘ নিয়তির কাছে তাকে ধরা পড়তে হলো। বিয়ে করে তার আর স্বামী-সংসারের ঘর করা হলো না। ফেলানী হত্যার ভয়ানক দৃশ্য যে দেখেছে তারই বিবেকের মানদন্ডে চোখের পানি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।

ফেলানীর লাশ দীর্ঘ ৩০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর সীমান্তের এপারে আসলে চলছে তখন মাতম। ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা এভাবে একের পর এক হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠলেও কার্যত দেশের শীর্ষ মহলে কোন ভাবান্তর লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সরকার সীমান্তবর্তী এলাকার সমস্যাকল্পে কোন কার্যকরি ভূমিকা গ্রহণ না করার দরুন অহরহ এ রকম নৃশংস ঘটনা ঘটেই চলেছে। ভারতীয় রক্ষীদের হাত থেকে আমাদের কৃষক থেকে শুরু করে জেলে, শ্রমিক এবং নারী ও শিশুরা পর্যন্ত তাদের নিষ্কৃতি থেকে রেহাই পাচ্ছে না। পাখি শিকার করার মতো গুলী করে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা।

ভারতের সাথে রয়েছে বাংলাদেশের দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা। আর যুগ যুগ ধরে চলে আসছে বিএসএফের অপতৎপরতা। আর এতে বলি হচ্ছে আমাদের দেশের ছিটমহলবাসী। বিএসএফ এর সাথে এখন আবার ভারতীয় খাসিয়া বাহিনীও সমান তালে অত্যাচার করে চলেছে বাংলাদেশীদের। সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু সীমান্তের ছিটমহলবাসীর সমস্যা অন্তরালেই থেকে যায়।

এ নিরীহ মানুষদের রক্ষার্থে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় না। উভয় দেশের সীমান্তে বিরাজমান অনেক সমস্যা থাকলেও শীর্ষ পর্যায়ে দু'একটি বৈঠক ছাড়া তেমন কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায় না। ভারতীয় অংশের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাঙ্গামোড়, কাশীপুর এবং ফুলবাড়িয়া সদর ভারতীয় ছিটমহলের ভেতর বাংলাদেশী চন্দ্রখানা ছিটমহল। এখানে চারশত লোক মানচিত্রের বলয়ে পড়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। আর এ ছিটমহলের আয়তন ১ শত একর।

অপরদিকে ভারতীয় সীমান্তবাহিনী বিয়ানীবাজারের সুতারকান্দি সীমান্তের ১৩৬০ নম্বর পিলারের প্রায় ১৫০ গজ দূরে ১৯৮৯ সাল থেকে একটি আন্তঃরাজ্য মহাসড়কে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। এ কাঁটাবেড়ার ফলে গজুকাটা, বড়গ্রাম, সুতারকান্দি, চাতলপার, জাড়াপাড়, সারপার, লাফাকুনা, নয়াগ্রাম, ভোবারতলা, টেকইকোনা, লাঠিটিলা, বারজনি, উজিনপুর, লক্ষ্মীপুর বাজার, জামডহর, উজান জামডহর, গোডাউন, সোনাপুর, লোহার মহল, বেউরসহ ত্রিশটি গ্রামের ৪০ সহস্রাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগের শিকার পোঁহাতে হচ্ছে। তাছাড়া যে সব সীমান্ত এলাকার মধ্যে বিএসএফের সবচেয়ে বেশি অশুভ তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় সেগুলোর মধ্যে- খাসুরিয়া, বুড়িমারী, ভূরঙ্গামারী, দৌলতপুর, আটোয়ারী, গাংনি কাশিপুর, নবীনগর, ভোমরা, মহেশপুর, জৈন্তাপুর, দেবহাটা, তেঁতুলিয়া, বৌমারীর ভঙ্গুরচর, নওদাপাড়া, ডিবির হাওর, চন্দ্রখানা, সুরমা চা বাগান, গাতিপাড়া, রানী শংকৈর, বালিয়াভাঙ্গা, মকসেদপুর, ঘোনা সীমান্ত, শ্যামনগর, শ্যামকুড়া ও দাউদপুর সীমান্তের ছিটমহলবাসীর কৃষক, জেলে, রাখাল, শ্রমিক এবং গরু ব্যবসায়ীরা বিএসএফের কবলে আক্রান্তের শিকার হন সবচেয়ে বেশি। এদিকে ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির আলোকে বাংলাদেশের অদখলীয় ভূমি এবং অনির্দিষ্ট সীমানা নির্ধারণে গত নবেম্বরে দিল্লীতে যৌথ সীমানা নির্ধারণের কার্যকরি গ্রুপের (জেবিডব্লিউজি) সভায় বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারণের আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক আয়োজন করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু'দেশের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং বিডিআর ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে সীমানার সংঘাত ও মালিকানাবিহীন অপদখলীয় সম্পত্তি হস্তান্তরের প্রস্তাব করে।

এ প্রস্তাবে সীমানা নির্ধারণ করতে হলে ভারত অপতৎপরতার মাধ্যমে বেশি জমি দখল করার একটা আশংকা থেকে যায়। তথ্য মতে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের অপদখলীয় ভূমি রয়েছে ৩ হাজার ২৪ একর। আর ভারতের বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে ৩ হাজার ৫৬ একর। অপরদিকে বাংলাদেশের ভেতর থাকা ভারতের ১শত এগারটি ছিটমহলের মোট জমির পরিমাণ ১৭ হাজার ১৬০ একর। আর ভারতের ভেতর থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের জমির পরিমাণ ৭ হাজার ১১০ একর।

এদিকে দু'দেশের মধ্যে অনিত্তি সীমানা রয়েছে ছয় কিলোমিটার। তাছাড়া সিলেটের জকিগঞ্জ এলাকার সুরমা নদীর ৪০ কিলোমিটার এবং কুশিয়ার নদীর ২৬ কিলোমিটার অভিন্ন সীমান্ত নদী হিসেবে চিহ্নিত। বর্ষার করাল স্রোতে বাংলাদেশ অংশে ব্যাপক নদীভাঙনের শিকার হয়। আর শুকনো মওসুমে ভারত প্রান্তে চর জেগে উঠে ৩ হাজার একর জমি ভারত ভূখন্ডে চলে যায়। ভারতের সাথে সীমান্তবর্তী নদীভাঙন রোধ সমঝোতা থাকলেও তা মূলত কোন কার্যকর ভূমিকায় আসীন হচ্ছে না।

আর এককভাবে বাংলাদেশের কিছু করাও সম্ভব নয়। ফলে ভারতের কবল থেকে জমি উদ্ধার করতে হলে শীর্ষ পর্যায়ে রাজনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যতীত কোন মতেই সম্ভব নয়। নদী ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী দু'টির তীর সংরক্ষণ করার জন্যে কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিলেও মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন করেনি। ফলে অভিন্ন নদী সমস্যাটি গোচরেই রয়ে গেছে। ভারতীয় বিএসএফ তাদের নগ্ন থাবা যেভাবে বাংলাদেশের মানুষের ওপর বিস্তার করে চলেছে তাতে সীমান্তের এপারে লাশের পরিসংখ্যান দিন দিন বেড়েই চলেছে।

২০১০ সালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা ৭৪ জন বাংলাদেশী মানুষ নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে উল্লেখযোগ্য হলো- ২ জানুয়ারি লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থল বন্দরের ৮৪৩ নম্বর পিলারের কাছে শাহজাহান আলীকে বিএসএফ গুলী করে হত্যা করে, ৫ জানুয়ারি ২৮৯ নং পিলারের কাছে কৃষক জমিতে কাজ করার সময় ভারতের আগ্রা ক্যাম্পের বিএসএফ অজ্ঞাত একজনকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে যায়, ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর আব্দুল শেখকে গুলী করে লাশ নিয়ে যায়। পরে পতাকা বৈঠক করে লাশ ফেরত আনে। ১২ জানুয়ারি বেনাপোল সীমান্তে আলাউদ্দিন নামের একজনকে গুলী করে লাশ টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যায়। এদিন পঞ্চগড়ের আটোয়ারী সীমান্তে আনারুল ইসলাম নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে ধরে নিয়ে যায়।

উভয়পক্ষের মধ্যে পতাকা বৈঠকের পর তাকে ফেরত দিয়ে যায়। অপরদিকে ১১ জানুয়ারি শার্শার গোগা হরিশচন্দ্র সীমান্তে হযরত নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে হত্যা করে। ১৬ জানুয়ারি মেহেরপুর গাংনীর কাজীপুর সীমান্তের ১৪৫/৪-এর পিলারের কাছে গেলে শহিদুল সর্দারকে (২৮) গুলী করে হত্যা করে এবং দু'দিন পর তার লাশ বিএসএফ ফেরত দেয়। ২২ জানুয়ারি মেহেরপুর উপজেলার নবীনগর এলাকার মুবারক গরু আনতে গেলে তাকে গুলী করে হত্যা করে বিএসএফ। একই তারিখে ভোমরা সীমান্তে এক গরু ব্যবসায়ীকে গুলী করে হত্যার পর তার লাশ ফেলে গেলে ভারতীয় পুলিশ হাসপাতালের মর্গ থেকে ৪ মাস পর তার লাশটি ফেরত দেয়।

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খোশালপুর সীমান্তের ৬০ নং পিলারের কাছে পানি আনতে গেলে কবির হোসেনকে ধরে নিয়ে যায়। পরে পতাকা বৈঠকের পর তাকে ফেরত দেয় ভারতীয় বিএসএফ। ২৩ জানুয়ারি সিলেট জেলার জৈন্তাপুর সীমান্তে জমি থেকে ফেরার পথে মেঘালয় রাজ্যের লালাখান এলাকায় খাসিয়ারা এক বাংলাদেশীর ওপর আক্রমণ চালিয়ে তাকে হত্যা করে। ২৬ জানুয়ারি দেবহাটা উপজেলার সীমান্ত বিএসএফ হুমায়ুন কবির নামের একজনকে নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ ইছামতি নদীতে ভাসিয়ে দেয়। তারা এ সময় বিনা উস্কানিতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলী ছোঁড়ে।

৫ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলার ডিবির হাওড় সীমান্ত পিলার নং ১২৮৪-এর কাছে টহলরত বিডিআর সদস্যদের গুলী করে নায়েক সুবেদার মুজিবর রহমানকে ধরে নিয়ে যায়। তাকে নির্মম নির্যাতনের পর ভারতীয় বিএসএফ পতাকা বৈঠকের পর ফেরত দেয়। এ সময় উভয় সীমান্তে গোলাগুলি শুরু হলে শ্রীপুর, ননজুরি, লালাখান, তামাবিল, ঘিলার চর, ডিবির হাওড় ও কেন্দ্রীয় গ্রামের লোকজন আতঙ্কে বাড়ী ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। ৬ ফেব্রুয়ারি তেঁতুলিয়া সীমান্তেও ৪৪৩ নং পিলারের ১৯৪ ব্যাটালিয়নের হাফতিয়া ও সদর মুড়িখাওয়া ব্যাটিলীয় ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা গুলী ছুঁড়ে সারিয়াল জোত গ্রামের গরু ব্যবসায়ী ফরিদ হোসেনকে হত্যা করে। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিএসএফ বাংলাদেশ ডিবির হাওড় সীমান্তে প্রবেশ করে পাথর শ্রমিক আম্বিয়া বেগম (৬০), পিকনিক সেন্টারের ম্যানেজার রাশেদ মিয়া এবং গাড়ীচালক আব্দুর রহমানকে বিএসএফ হত্যা করে।

মার্চ মাসে বিনাউস্কানিতে বিএসএফ ফাঁকা গুলী ছুঁড়তে থাকলে সীমান্ত জুড়ে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। এপ্রিল মাসে দিনাজপুর উপজেলার দাউদপুর সীমান্তের ২৯০/৩২ নং সীমানা পিলারের কাছে গরু আনতে গেলে ৫৭নং ক্যাম্পের বিএসএফ শহিদুল ইসলামকে গুলী করে হত্যার পর তার লাশ টেনে-হেঁচড়ে ভারতে নিয়ে যায়। পরে পতাকা বৈঠক হলে তার লাশ ফেরত দেয়। মে মাসে ঠাকুরগাঁয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রত্নাই বারসা গ্রামের কৃষক পরিবারের ছেলেমেয়েরা নাগর নদী পাড়ে গরু চড়াতে যায়। এ সময় রত্নাই সীমান্তের ৮২/২ সাব পিলারের কাছে মুজিবর রহমানকে গুলী করে হত্যার পর তার লাশ টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যায়।

অপর ঘটনায় পারুল আক্তারকে গুলী করে হত্যা করে। জুন মাসে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কালিন্দি নদীতে মাছ ধরতে গেলে এক জেলেকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়। অপরদিকে ঝিনাইদহের মহেশপুরের শ্যামকুড়ের দু'কৃষককে ধরে নিয়ে গেলে তাদের আর কোন সন্ধান মেলেনি। জুলাই মাসে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ভাইগড় সীমান্তে ২৯১/১৩ পিলারের কাছে ভারতের ৫৭ ব্যাটিলিয়নের সদস্যরা একজনকে গুলী করে হত্যা করে। আগস্ট মাসে সাতক্ষীরা উপজেলার ঘোনা সীমান্তের মেইন পিলারের কাছে এক গরু ব্যবসায়ীকে হত্যা করে লাশ ফেলে যায়।

পরে বশির হাট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সেপ্টেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপজেলার মকসেদপুর সীমান্তে বাংলাদেশী পিলারের কাছে গরু চরাতে গেলে বিএসএফ তাকে ধরে নিয়ে নির্দয়ভাবে মার-ধর করলে তার দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় সে মারা যায়। অক্টোবর মাসে ভারতীয় অধিবাসীরা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রমজান নামের একজনকে হত্যা করে তার লাশ মাটি চাপা দিয়ে রাখে। যাওয়ার সময় তারা ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ের রানী শংকৈর উপজেলার সীমান্তে নাগর নদীতে মাছ ধরতে গেলে ২৩ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মারজুল ইসলামকে গুলী করে হত্যা করে। নবেম্বর মাসে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াভাঙ্গা উপজেলার বেউরবাড়ী সীমান্তে নাগর নদীতে মাছ ধরতে গেলে ভারতীয় বিএসএফ তাকে ধরে নিয়ে যায়। অপরদিকে সাতক্ষীরা গাংনী গ্রামের শরিফুল ইসলামকে সীমান্তের মেইন পিলারের সাব ৮নং পিলারের কাছে হত্যা করে। এদিকে গরু ব্যবসায়ী বজলুর রহমানকে পুটখালী সীমান্তের বিপরীত আংরাইল বিএসএফের সদস্যরা ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। অপরদিকে আওলিয়া হাটের মোক্তার হোসেনকে গুলী ছুঁড়ে হত্যা করে বিএসএফ।

ডিসেম্বর মাসে বেনাপোলের গাতিপাড়া সীমান্তে আমির হোসেনকে পিটিয়ে ও খুঁচিয়ে নির্দয়ভাবে তাকে হত্যা করে। তার আগে তার বড় ভাই সমির হোসেনকেও একইভাবে বিএসএফ পিটিয়ে হত্যা করেছিল। ভারতের বিএসএফের হাতে এভাবেই বাংলাদেশের ছিটমহলবাসী অকাতরে জীবন দিচ্ছেন। বর্তমান সরকারের আমলে ভারত ট্রানজিট বিষয়ে অনেক দূর এগুলেও ভারতের সাথে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অভাবে আমাদের সীমান্তবাসীরা তাদের অন্তহীন সমস্যার জালে বন্দি হয়ে আছেন। ফেলানী হত্যাকান্ডসহ সমস্ত হত্যাকান্ডই বিএসএফ নির্মমতার মাধ্যমে ঘটিয়েছেন।

কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে সরকার তাদের জন্য কোন প্রতিরোধ তো দূরের কথা সামান্য প্রতিরোধ পর্যন্ত পাঠায়নি। আমরা আশা করবো বিএসএফের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ভাষায় এর প্রতিবাদ পাঠাবেন এবং সমস্যা সমাধানে অগ্রগতির লক্ষ্যে কাজ করে সীমান্তবর্তী মানুষজনকে বিএসএফের হাত থেকে রক্ষা করবেন আর দেশের সাধারণ মানুষ এমনটাই প্রত্যাশা করেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.