সামুতে অর্থহীন অশুদ্ধ বাংলা ও বাংলিশ শব্দ পরিহার করি
গতকাল থেকে রাজধানীতে মিটার ছাড়া অটোরিকশা চলবে না এমন ঘোষণা থাকলেও নির্ধারিত ভাড়ায় এবং মিটারে সিএনজি অটোরিকশা চলাচলে আইনের কোন প্রভাব পড়েনি। আইনের প্রয়োগে কোন কড়াকড়ি না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করায় অটোরিকশা চালকদের সাথে যাত্রীর যাত্রীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।
সরেজমিন ঢাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, এ আইনটির কোন তোয়াক্কা করছে না চালকরা। আগের মতোই যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া দরদাম করেই তারা চালাচ্ছেন দেদারছে। চালকরা গন্তব্য ভেদে আগের মতোই যাত্রীদের কাছে ইচ্ছেমতো তিন/চার গুন ভাড়া হেঁকেছেন, চলেছেন মিটার ছাড়াই।
সূত্র মতে, সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া সর্বশেষ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল। সে সময় সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারিত হয়েছিল ১৮ টাকা। রাজধানীতে প্রায় ১৩ হাজার সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে। যা রাজধানীর জনসংখ্যার অনুপাতে খুব কম।
চালকদের দৌরাত্ম্যে সিএনজি অটোরিকশা এবং ৪-স্ট্রোকের যানবাহনের জন্য করা নতুন এ আইনটির বাস্তবায়ন নিয়ে শুরুতেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
একই আইন চট্টগ্রাম মহানগরীতে এক মার্চ থেকে কার্যকর করার কথা রয়েছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সিএনজি চালকদেরকে মিটার ছাড়াই অটোরিকশা চালাতে দেখা গেছে। চালকরা এ আইন সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না এবং সিএনজিতে মিটার স্থাপনের ব্যাপারে মালিককে দোষারোপ করে।
ঢাকার পুরানা পল্টন, মুক্তাঙ্গন, গুলিস্তান, প্রেসক্লাবসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এমন মিটারবিহীন সিএনজিকে দেখা গেছে। তবে দায়িত্বরত কোন ট্রাফিক পুলিশকে তেমন তৎপর দেখা যায়নি।
যদিও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এবং বিআরটিএ প্রথম থেকেই এ আইনটি বাস্তবায়ন করার জন্য হাঁকডাক দিয়ে আসছিল। নতুন আইন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এক পক্ষকাল ধরে সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে নতুন ভাড়া ও জমার হার জানানো হয়েছে বলে বিআরটিএ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিল। বিআরটিএ'র সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি। সমিতির নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে এ পদক্ষেপটি বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারকে তাদের সহযোগিতার কথা জানায়। সমিতি শনিবার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের সহযোগিতার আশ্বাস এবং চালক-মালিকদের এ আইন বাস্তবায়নের আহ্বান জানায়।
মিটার ছাড়া বা নষ্ট মিটার নিয়ে কোন অটোরিকশা রাস্তায় নামবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সমিতির নেতারা।
এদিকে ঢাকা মহানগর সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি বরকতউল্লাহ বুলু দাবি করেছেন সমিতির নেতারা গতকাল রোববার সকাল থেকেই মাঠে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ব্যাপারে পুলিশের কঠোর সমালোচনা করে তিনি জানান, মালিকরা সুযোগ নিতেই চাইবে; কিন্তু পুলিশ কেন এ সুযোগ দিচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরও কঠোর হতে হবে। কারণ মালিক সমিতির সঙ্গে তারাও চুক্তিবদ্ধ।
তবে এজন্য সচেতনতা তৈরি হতে কিছু সময় লাগবে।
নতুন ভাড়া বিষয়ে গত ৯ জানুয়ারি সরকার, অটোরিকশা মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১৫ জানুয়ারি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া প্রথম দুই কিলোমিটারের জন্য ২৫ টাকা করা হয়েছে। পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৬ টাকার স্থলে করা হয়েছে ৭ টাকা। এছাড়া বিরতিকালের জন্য প্রতি মিনিট ১ টাকার পরিবর্তে ১ টাকা ২৫ পয়সা করা হয়।
সিএনজি অটোরিকশা মালিকের দৈনিক জমা ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৬০০ টাকা। এ নিয়মের বাইরে গেলে চালক ও মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিআরটিএ এবং পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। যাত্রীর অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে চালকের জরিমানা অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল অথবা তার বিরুদ্ধে মামলা করার কথা উল্লেখ আছে চুক্তিতে। একইভাবে চালকদের কাছ থেকে বেশি জমা আদায় করলেও মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।