আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোয়ান্টাম ইলেক্ট্রোডাইনামিক্সের ছোট্ট দুর্বলতা? (পর্ব - ৫)



পর্ব - ১ পর্ব - ২ পর্ব - ৩ পর্ব - ৪ The supreme task of the physicist is the discovery of the most general elementary laws from which the world-picture can be deduced logically. But there is no logical way to the discovery of these elemental laws. There is only the way of intuition, which is helped by a feeling for the order lying behind the appearance, and this Einfühlung [literally, empathy or 'feeling one's way in'] is developed by experience. -Albert Einstein অটো ফ্রিশের SWEEPNIK- বিশ বৎসরের বেশী সময় নিউক্লিয়ার রিসার্চের কাজে পার করে অবশেষে Otto Robert Frisch ১৯৪৭ সালে ক্যাভেন্ডিশের নিউক্লিয়ার ফিজিক্স গ্রুপে যোগ দেন। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি তৈরীর গভীর আগ্রহের ফলে তিনি লেজার এবং শক্তিশালী computing technology ব্যবহার করে আয়নিত কণার গতিপথ ট্র্যাক করার নতুন যন্ত্র তৈরী করেন। যার নাম ছিলো Sweepnik। এটা ছিলো খুব দ্রুত ট্র্যাক মেজারিং ডিভাইস। খুব দ্রুত কণার গতিপথ বোঝার জন্য বড় ধরণের ডিটেক্টর দরকার।

এদিক দিয়ে ক্লাউড চেম্বার ছিলো খুবই ছোট। তাই নতুন ধরণের ডিটেক্টরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। অবশেষে ১৯৫২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানে কর্মরত Donal Arthur Glaser বাবল চেম্বার আবিষ্কার করেন। এটাতে বিকিরণের ফলে উদ্ভুত ionising event গুলোর ট্র্যাক তৈরী হয় অতি তপ্ত তরলের মাঝে সাড় বাধা খুব ছোট ছোট বুদবুদের মাধ্যমে। যখন অতি তপ্ত তরলে হঠাৎ প্রসারণ ঘটানো হয় তখন আয়নিত কণায় তরল গুলো টগবগিয়ে ফুটতে থাকে।

চার্জড্ পার্টকেল গুলোর চলার পথে আয়নের উদ্ভব ঘটে ফলে সেই আয়নগুলোতে তরল ফুটে যাওয়ায় বুদবুদের উৎপত্তি হয়। এই বুদবুদের সাড়ি দেখে বেগবান চার্জড্ পার্টিকেলের গতিপথের সন্ধান পাওয়া যায়। Bubble Chamber এর আকৃতি অনেক বড় করা সম্ভব ছিলো, এছাড়াও এতে বাড়তি কিছু সুবিধাও ছিলো। এখানে আরও শার্প ট্র্যাক তৈরী হতো কারণ এর লিকুইড মিডিয়াম ক্লাউড চেম্বারের গ্যাস মিডিয়ামের চেয়ে স্টেবল। যেহেতু এটা খুব ছোট টাইম ইন্টারভ্যালের রেকর্ড করতো তাই এতে অপ্রয়োজনীয় ট্র্যাকের ঝামেলা কমে যেতো।

এছাড়াও এটা পরবর্তী ইভেন্ট রেকর্ড করার জন্য খুব দ্রুত রিসেট করা যেত। ১৯৭০ সালে CERN এ বাবল্ চেম্বার বসানো হয়। François Rabelais এর লেখা গল্পের চরিত্র Gargantua'র মায়ের নাম অনুসারে এর নাম দেয়া হয় Gargamelle (বৈজ্ঞানিকেরাও রসিক হন বৈকী)। ১০০০ টন ওজনের ৪ মিটার লম্বা ২ মিটার ব্যাসের এই যন্ত্র ১৮ টন লিকুইড ফ্রীয়ন ধারণ করতো। এটা মূলত নিউট্রিনো ডিটেক্ট করার জন্য তৈরী হয়েছিলো।

এই গার্গামেলে কর্মরত পদার্থবিদরাই প্রথম উইক নিউট্রাল কারেন্ট দেখতে পান। ১৯৭৩ সালের জুলাই মাসে তার ঘোষণা দেয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১০ বৎসর পর CERN এর অন্য দু'টি এক্সপেরিমেন্টে (UA1 এবং UA2) W আর Z বোসন ধরা পড়ে যারা ইলেক্ট্রোউইক ফোর্সের ক্যারিয়ার পার্টিকেল। ১৯৩৭ এ রাদারফোর্ডের মৃত্যুর পর ক্যাম্ব্রীজের নিউক্লিয়ার ফিজিক্স কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। 'Rutherford's boys' নামে খ্যাত অনেক বৈজ্ঞানিকই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দলপ্রধানের ভূমিকায় চলে যান।

প্রকান্ড নিউক্লিয়ার অ্যাক্সেলারেটর তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থাও আর হয়নি। আশা করা হয়েছিলো Frisch এর মত তৎকালীন স্বনামখ্যাত বৈজ্ঞানিকের মাধ্যমে ক্যাম্ব্রীজ তার হৃত গৌরব ফিরে পাবে। এই ফ্রিশই ১৯৩৯ সালের Nature magazine এর এক ইস্যুতে প্রথমবারের মত নিউক্লিয়ার 'fission' শব্দ ব্যবহার করেন। Los Alamos এর বিখ্যাত Manhatten Project এও তিনি কাজ করেছেন। ফ্রিশ অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে দরখাস্ত লেখালেখির চেয়ে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কারে খুবই আগ্রহী ছিলেন।

তাই ক্যাম্ব্রীজের ফান্ড কালেকশান আর হয়নি। তিনি দেখলেন যে বিভিন্ন ডিটেক্টর যেমন বাবল চেম্বার থেকে যে সব ছবি তোলা হয় তা হাতে পরিমাপ করা খুবই কঠিন। তিনি এমন সব কাউন্টার তৈরী করার চেষ্ট করলেন যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই্ গণনা আর পরিমাপ সম্ভব হয়। ১৯৪৭ সালের দিকে গামা-রে ডিটেক্ট করার জন্য scintillation counter ব্যবহার শুরু হয়। এর আগে পদার্থবিদেরা বহু কষ্ট করে ফ্লুরোসেন্ট স্ক্রীনের ওপর ছোট্ট ছোট্ট বিন্দু ম্যানুয়ালী পরিমাপ করতেন।

ফ্রিশ একটা 'Kick Sorter' তৈরী করেন যাতে করে এ ধরণের কাউন্টার থেকে পাওয়া পালসের শক্তি পরিমাপ করা যেতো। এর ডিজাইন ছিলো খুব সহজ। Polystyrene ব্লক কেটে তৈরী করা বিভিন্ন চ্যানেলে বল-বেয়ারিংয়ের বল গিয়ে পড়তো। বলগুলো 'kick' খেয়ে চ্যানেলে গিয়ে পড়তো। কিকের শক্তি কম হলে কাছের চ্যানেলে পড়তো আর যত বেশী হতো তত দূরের চ্যানেলে গিয়ে পড়তো।

এতে করে একটা অটোমেটিক হিষ্টোগ্রাম তৈরী হতো, অর্থাৎ এমন একটা চার্ট যা থেকে সহজেই কোন এনার্জি লেভেলের কয়টা পালস জেনারেট হয়েছে তা দেখা যেত। যাহোক ১৯৫৫তে ফ্রিশ Ann Arbor, Michigan এ গিয়েছিলেন। যদিও ক্যাভেন্ডিশ ল্যাবরেটরীতে আর অ্যাক্সেলারেটর তৈরী হয়নি, কিন্তু ফ্রিশের আমেরিকা সফরও মাঠে মারা যায়নি। সেখানে তার সাথে গ্লেসারের দেখা হয়। গ্লেসার তাকে বললেন যে হাই-এনার্জি কলিশন থেকে পাওয়া অনেক ছবিই বাবল্ চেম্বারে তোলা হচ্ছে, সেকেন্ডে একটি বা তার চেয়েও দ্রুত।

অর্থাৎ প্রাপ্ত তথ্যের পরিমাণ এত বেশী যে তা পরিমাপ করাই ছিলো সমস্যা। ফ্রিশ আর গ্লেসার বুঝলেন যে অন্তত কোন সেমি-অটোমেটিক যন্ত্রের প্রয়োজন। ১৯৬০ সালে এক পেপারে ফ্রিশ 'TARA (Track Analysing and Recording Apparatus)' সম্পর্কে বর্ণনা দেন। বাবল চেম্বার থেকে পাওয়া দু'টো ছবিকে নীচ থেকে এমনভাবে একটা স্ক্রীনের ওপর ফেলা হতো যেন মনে হতো ত্রিমাত্রিক। একটা ক্রস-হেয়ার স্ক্রীনের ওপর থাকতো আর ফিল্মেগুলোকে নাড়িয়ে ক্রস-হেয়ারের নীচে আনা যেত।

ছবিগুলোকে ১৩ গুণ বড় দেখা যেত আর প্যান্টোগ্রাফের সহায়তায় খুব ধীরে সূক্ষ্মভাবে নাড়ানো যেত। এরপর অপারেটর একটা সুইচ টিপলে একটা পাঞ্চটেপে কো-অর্ডিনেটগুলো চলে যেত। এই টেপটিকে আবার সেসময়ের কম্পিউটার EDSAC পরিমাপ করতো। যদিও এ যন্ত্রের ফলে কাজ অনেকগুণে কমলো তবুও এটা পুরো সয়ংক্রিয় ছিলোনা। অপারেটরের চোখে চাপ পড়তো আর ফিল্ম অ্যালাইন করতে সময় নষ্ট হতো।

তাই ফ্রিশ নতুন কিছুর চেষ্টা করলেন। তিনি বেশ কয়েক বৎসর ধরে বাবল চেম্বারের ট্র্যাক মাপার নতুন নতুন যন্ত্র বের করলেন, কোন কোনটা আগের গুলোর চেয়ে ভাল কাজ করতো আবার কোন কোনটি একেবারেই কাজ করেনি। তিনি বলেছিলেন- 'if an expert is one who has made every conceivable mistake, I became very expert in this field.' ১৯৬৪ সালে তিনি ম্যানটেষ্টারের ফিজিকাল সোসাইটির এক্সিবিশনে তার কিছু ব্যর্থ য্ন্ত্র দেখাচ্ছিলেন। খুব অল্প দর্শকই তা দেখতে আগ্রহী ছিলো। তাই তিনি বসে বসে নতুন যন্ত্রের কথা ভাবছিলেন।

এখানেই তার মাথায় নতুন যন্ত্রের আইডিয়া এলো যাতে কোন অপারেটরকে ক্রস-হেয়ারের নীচে কোন ফিল্ম নড়াবার দরকার নেই। বরং একটা আলোর রশ্মি নিজে নিজেই সেই ট্র্যাক ফলো করবে। দু'টো আয়নার সাহায্যে লাইট বীমটিকে ফিল্মের ওপর দিয়ে স্টিয়ার করা হবে; একটা তাকে আনুভূমিকভাবে নড়াবে আরেকটি খাড়াখাড়িভাবে। ফ্রিশ একটা আলোর বিন্দুর পরিবর্তে একটা সরল রেখার ইমেজের চিন্তা করলেন। সরলরেখাটিকে বৃত্তাকারভাবে ঘোরানো যাবে যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটা যে ট্র্যাকটি ফলো করা হচ্ছে সেটার খুব কাছাকাছি ফিট করে যায়।

এভাবে সেই যন্ত্রে ট্র্যাকটির গতিপথ লিপিবদ্ধ হবে। তিনি এর নাম দিলেন সুইপনিক। এর সরলরেখার ইমেজটি circular sweep এর মত ঘুরবে, যেন- 'flitting around the film like a little Sputnik' রাশিয়ার কৃত্রিম উপগ্রহটি পৃথিবীকে প্রতি ৯৮ মিনিটে একবার প্রদক্ষিণ করতে পারতো, আর সুইপনিকের ছোট্ট আলোর বীমটি সেকেন্ডে প্রায় পঞ্চাশবার ঘুরতো। বাবল চেম্বারের ট্র্যাক ফলো করার জন্য সুইপনিকের ট্র্যাকের গতিপথ জানার দরকার। ছোট্ট একটা আলোর রেখা ফিল্মটির ওপর ফেলে এটে বার করা হতো।

ঐ আলোর রেখার জন্য helium-neon লেজারবীমকে একটা astigmatic lens এর ভেতর চালানো হতো। Astigmatic lensটি আলোকে একটা রেখায় ফোকাস করতো। এরপর আলোর রেখাটিকে একটা Dove prism এর ভেতর দিয়ে চালানো হতো। ডাভ প্রিজম কাঁচের তৈরী, এর দুইপ্রান্ত ৪৫ ডিগ্রীতে ছুঁচলো। বাকী ধারগুলো সমকৌণিক।

আলো প্রিজমের একপ্রান্ত দিয়ে ঢুকে প্রিজমের ভেতরেই রিফ্লেক্টেড হয়ে অবশেষে অন্যপ্রান্ত দিয়ে বার হতো। ডাভ প্রিজমকে একবার ঘোরালে আলোর রেখাটির দ্বিগুণ রোটেশান হতো। ডাভ প্রিজম থেকে পাওয়া রৈখিক ইমেজটি ঘড়ির কাঁটার মতো সেকেন্ডে ৪৮ বার ঘুড়তো। ঘূর্ণনের কৌণিক মান ডাভ প্রিজমের সাথে লাগানো একটা কোডেড ডিস্কের সাহায্যে খুব সূক্ষ্মভাবে মাপা যেত। Dove prism থেকে ঘূর্ণায়মান আলোর ইমেজটিকে ফটোগ্রাফিক ফিল্মের ওপর খুব সূক্ষ্মভাবে ফেলার জন্য একজোড়া আয়নার সাহায্য নেয়া হতো।

একটা আনুভূমিকদিক আরেকটা উল্লম্বদিক নিয়ন্ত্রণ করতো। লাইন ইমেজটি এগ্জ্যাক্টলি কোথায় আছে তা মিরর দু'টোর এগ্জ্যাক্ট পজিশন থেকে বার করা হতো। দু'টো মিররের সাথেই ছোট্ট দু'টো প্রিজম লাগানো থাকতো যেগুলোতে আলাদাভাবে লেজার বীম ফেলা হতো। লেজারবীম এই দুই প্রিজমের ভেতর দিয়ে সরলরেখায় বার হবার সময় রেফারেন্স বীমের সাথে ইন্টারফিয়ারেন্স তৈরী করতো। এই ইন্টারফিয়ারেন্সের ফলে fringe এর সংখ্যা গণনা করে আয়নাগুলোর মুভমেন্ট, লেজারের একক ওয়েভলেংথ পর্যন্ত মাপা যেত।

এভাবে খুব ছোট দূরত্ব মাপার পদ্ধতিকে interferometry বলা হয়। এর ফলে লাইন ইমেজটিকে বাবল চেম্বার থেকে পাওয়া ফিল্মের যে কোন বিন্দুর ওপর ০.০০১ মি.মি. সূক্ষ্মতায় ফেলা যেতো। ঘূর্ণায়মান লেজার বীমের ছোট্ট সরলরেখাটি ফিল্মের ভেতর দিয়ে পাস করার পর একটা ফটোমাল্টিপ্লায়ারের ভেতর প্রবেশ করতো। Photomultiplier আলোকে electrical signal এ রূপান্তরিত করে। যদি বেশি আলো পাস করে তবে বড় সিগনাল তৈরী হবে আর কম আলো হলে ছোট সিগনাল।

ফিল্মের ওপর বাবল ট্র্যাক যেখানে আছে সেখান আলো আটকে যায়। ফলে ছোট সিগনাল তৈরী হয়। যদি আলোর রেখাটি ট্র্যাকের সাথে পুরোপুরি মিলে যায় তবে একটা শার্প ডিপ তৈরী হয়। এটা তখনই হতো, যখন আলোর রেখাটি সঠিক পজিশানে আর সঠিক কোণে অবস্থান করতো। প্রতিবার ফটোমাল্টিপ্লায়ার এই ডিপ ধরার পর, সুইপনিক যেদিকে লাইনটি ঘুরছে সেদিকে বীমটিকে এক মিলিমিটার এগিয়ে দিতো।

এরপর আবার এর পুনরাবৃত্তি ঘটানো হতো। এভাবে সুইপনিক পুরো একটি ট্র্যাক মাপতে পারতো। যেহেতু এটা ছিলো স্বয়ংক্রিয়, তাই এটা সেকেন্ডে পঞ্চাশটি পয়েন্ট মাপতো আর পাঁচ সেন্টিমিটার করে এগিয়ে যেতো। যখন সুইপনিক কোন ট্র্যাকের শেষ মাথায় পৌছাতো, তখন এটা উল্টোপথে ঐ ট্র্যাক বরাবর আবার ফিরে আসতো যেন অরিজিনাল স্টার্টিং পজিশান ঠিক থাকে। এক মিলিমিটারের এই লেজার বীমের মাধ্যমে ট্র্যাক ফলো করার ক্ষেত্রে precise match ফলো করা হতো।

যদি দু'টো ট্র্যাক ক্রস করতো তবে একটা gate এর মাধ্যমে সুইপনিক তার অরিজিনাল ট্র্যাক চিনতে পারতো। ব্যাপারটা এরকম, প্রথমে gate এর মান হতো ১৮০ ডিগ্রী। অর্থাৎ প্রথম ট্র্যাকটিকে পাওয়ার জন্য সুইপনিক বেশ বড় মান ব্যবহার করতো। যেই ট্র্যাকিং শুরু হতো তখন এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে হতো ৪৫ ডিগ্রী। এরপর ঐ ট্র্যাক বরাবর কিছুদূর গেলে gate এর মান কমে হতো ২২.৫ ডিগ্রী।

এই gate এর বাইরে যেকোন match সুইপনিক ignore করতো। যেহেতু বাবল চেম্বারের ট্র্যাক বেশীরভাগই সরল রৈখিক বা স্থির বক্রতার অধিকারী তাই সুইপনিকের কোন সমস্যা হতোনা। যদি কোন দু'টো ট্র্যাক সত্যি সত্যিই প্রায় overlap করতো তখন সুইপনিক দু'টোরই পরিমাপ করতো তবে স্থির বক্রতা অনুযায়ী এগিয়ে যেতো। এর ফলে এক সময় একটি ট্র্যাক gate এর বাইরে পরে যেতো। যদি সত্যি সত্যিই সুইপনিকের ভুল হতো, তবে অপারেটর reverse button চেপে ভুলের জায়গায় নিয়ে যেত, এরপর যে ট্র্যাকটি ফলো করতে হবে তা ঠিক করে দিতো।

যদি সুইপনিক নিজে কোন ট্র্যাক খুঁজে না পেতো তখন এটা অপারেটরের নির্দেশের অপেক্ষা করতো। এর দ্রুত গতি ছাড়াও সুইপনিকের আরও কিছু সুবিধা ছিলো। যেমন photomultiplier এর উচ্চমানের signal-to-noise ratio'র জন্য খুব ক্ষীণ ট্র্যাকও মাপা যেত। প্রতিটি পয়েন্ট খুব সূক্ষ্মভাবে মাপা যেত আর শস্তায় তৈরী করা যেত। ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে ফ্রিশ এবং আরও দু'জন মিলে Laser Scan Limited প্রতিষ্ঠা করেন।

পরের বৎসর International Conference on Nuclear Measuring Techniques এ এটা প্রদর্শিত হয়। ১৯৭২ সালের দিকে এটা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্রী হয়। আজকাল বিভিন্ন দানবীয় collider এ যেসব মাল্টি-মিলিয়ান ডলারের লেজার স্পেক্ট্রোমিটার ব্যবহার করা হয়, সুইপনিক ছিলো তাদেরই পূর্বসুরী। বড় বড় বৈজ্ঞানিকের নাম সবাই কম বেশী জানে। কিন্তু অনেক বৈজ্ঞানিক আছেন যারা প্র্যাক্টিকাল ফিল্ডে অবদান রাখার পরও ইতিহাসের পাতায় চাপা পড়ে যান।

অটো রবার্ট ফ্রিশও তেমনি এক বিজ্ঞানী। ক্রিটিক্যাল মাস তৈরী জন্য কতটুকু ইউরেনিয়াম দরকার তা নির্ণয়ের জন্যও তার অবদান রয়েছে। এছাড়া অ্যাটমিক বম্বের থিওরেটিক্যাল ডেটোনেশান ডিভাইসের কাজের জন্যও তিনি পরিচিত। এই পোস্টটি মূলত একটি বড় পোস্টের ২য় অংশ। ৩য় অংশে পোস্টটি শেষ হবে।

সে সাথে ক্লাসিকাল মেকানিকসের আলাপও শেষ হবে। পর্ব - ৬

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.