নিরপেক্ষ আমি
খর্বাকৃতি বৃক্ষের উৎপাদন ও বৃদ্ধির শিল্পই বনসাই শিল্প। বনসাই শিল্পে ব্যবহৃত বৃক্ষগুলো বংশানুক্রমে খর্বাকৃত নয়। শিকড় এবং শাখাগুলো কেটে এবং তার দিয়ে বেঁধে শাখাগুলো একটি নিয়মে আবদ্ধ করার পদ্ধতি দ্বারা গাছগুলো খর্বাকৃতি করা হয়। ১ হাজার বছর আগে চীনে এ শিল্পের উদ্ভব হয়। কিন্তু দ্বাদশ শতাব্দীতে জাপানিরা এ শিল্পপন্থা অনুসরণ করে এবং বনসাই শিল্পে উন্নতি সাধন করে।
বস্তুত বনসাই একটি জাপানি ভাষার শব্দ। যার অর্থ হলো 'ট্রের মধ্যে ফলানো'। দ্বাদশ শতাব্দীতে পশ্চিমারা বনসাই শিল্পের প্রশংসা করে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত পশ্চিমা বিশ্ব এ শিল্পে পারদর্শী ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বনসাই শিল্প পশ্চিমা বিশ্বে জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং শীঘ্রই পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বনসাই সমিতি গঠিত হয়।
বর্তমানে জাপান বিশ্বজুড়ে জাঁকালো বনসাই ব্যবসা পরিচালনা করছে। বস্তুত প্রকৃতি থেকেই বনসাই শিল্পের প্রেরণা আসে। উচ্চ পর্বতমালায় জন্মানো গাছগুলো জন্মলগ্ন থেকেই খর্বাকৃত হয়। নার্সারি থেকে পাত্রে রক্ষিত গাছগুলোকে বাছাই করে এনে সঠিকভাবে কেটে এবং তাদের আকৃতি ও বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য শাখাগুলোকে তার দিয়ে বেঁধে বনসাইয়ে রূপ দেওয়া যেতে পারে। প্রতি এক বছর থেকে পাঁচ বছর পরপর বনসাইকে অন্য পাত্রে নতুনভাবে রোপণ করতে হয়।
এটি গাছের বিশেষ শ্রেণী এবং শিকড়ের বৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে। পরবর্তী বছরগুলোতে পুনরায় রোপণের সময় ক্রমশ এবং ধারাবাহিকভাবে শিকড়গুলো ছাঁটাই করার ফলে মাটির গোলাটির আকৃতি ছোট হয়। শেষ পর্যন্ত বৃক্ষটি প্রয়োজনমতো ছোট এবং অগভীর পাত্রে রক্ষিত হতে পারে। অন্যান্য গাছের মতো এ গাছেও বারবার পানি ঢালতে হয়। এ গাছে তরল সার ব্যবহার করা হয় এবং গাছের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডাল কাটা ও শিকড় ছাঁটাই কাজও চালিয়ে যেতে হয়।
যে পাত্রে বনসাই লাগানো হয়, বৃদ্ধির জন্য সে পাত্রটি বনসাইয়ের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। বনসাইয়ের পাত্রগুলো সাধারণত মাটির পাত্র হয়। সেগুলো গোলাকৃতি, ডিম্বাকৃতি, সমচতুর্ভুজ, সমকোণী চতুর্ভুজ, অষ্টকোণী বা অসম আকৃতির হতে পারে। তলার দিকে একাধিক পানি নিষ্কাষণের ব্যবস্থা থাকে। অতি ক্ষুদ্রাকৃতি বনসাই দুই ইঞ্চি পর্যন্ত উঁচু হয় এবং বড় হতে তিন থেকে পাঁচ বছর লাগে।
ছোট বনসাই দুই ইঞ্চি পর্যন্ত উঁচু হয় এবং বাড়তে পাঁচ থেকে দশ বছর সময় লাগে। মাঝারি আকারের বনসাই ৬ থেকে বার ইঞ্চি পর্যন্ত উঁচু হয় এবং তিন বছরের মধ্যে জন্মানো যেতে পারে। এক শতাব্দী বা তার চেয়ে বেশি দিনও বনসাই জীবিত থাকতে পারে এবং পরিবারের একটি বিশেষ সম্পদ হিসেবে পুরুষানুক্রমে হস্তান্তরিত হতে পারে। জাপানে এটি একটি জাঁকালো ব্যবসা। বর্তমানে বনসাই ব্যবসায় জাপান সবচেয়ে লাভবান দেশ।
এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতেও মাঝারি আকারের বনসাই ব্যবসা বেশ জনপ্রিয়।
প্রীতম সাহা সুদীপ
Ref: Click This Link
http://digitalvillagebd.blogspot.com
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।