একটি অনিয়মিত লিটল ম্যাগাজিন
নিজস্ব সংবাদদাতা, সুন্দরগঞ্জ(গাইবান্ধা), ৪ জানুয়ারী \
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে হাতুড়ে কবিরাজদের দৌরাত্ন্য বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসার নামে চলছে এসব হাতুড়ে কবিরাজদের অপচিকিৎসার রমরমা ব্যবসা। এ ধরনের হাতুড়ে কবিরাজদের মিথ্যা চটকদার কথার ফাঁদে পড়ে গ্রাম-গঞ্জের সহজ সরল মানুষ প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে।
উপজেলার মীরগঞ্জ বাজার, শোভাগঞ্জ, বেলকা, বামনডাঙ্গা, ধোপাডাঙ্গা, চৌধুরীবাজার, পাঁচপীর বাজার, মজুমদারহাট, হাসানগঞ্জ বাজার, স্কুলের বাজার ও ফলগাছা বাজার সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব হাতুড়ে কবিরাজদের চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার রমরমা ব্যবসা। তারা সাধারন মানুষকে আকৃষ্ট করতে নিজেদের নামের পাশে নানা উপাধি ও ডিগ্রী জুড়ে দিয়ে সাইন বোর্ড ঝুলিয়েছেন।
এসব হাতুড়ে কবিরাজরা বিভিন্ন হাট-বাজারে লোক জমায়েত করতে মাইক বা টেপ রেকর্ডার বাজিয়ে গানের আসর জমায়। এসব গানের আসরে ভাড়াটিয়া নারী শিল্পী এনে গান পরিবেশন করে গ্রাম গঞ্জের সাধারন মানুষকে আকৃষ্ট করা হয়। এসব গানের আসরের মধ্যে হাতুড়ে কবিরাজ বা হেকিম হাজির হয়ে মিথ্যা চটকদার কথায় নিজের তৈরী সালসার গুনাগুন বলতে শুরু করেন। তিনি সালসার বোতল তুলে ধরে পেটের ব্যাথা, গ্যাষ্ট্রিক, আলসার, বাত, আমাশয়, মেহ, প্রমেহ, ডায়াবেটিস, সর্দিকাশি, আযমা ও যৌন রোগসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগের মত যাবতীয় রোগ নিরাময়ের শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে ওষুধ বিক্রি করছে। এসব হাতুড়ে কবিরাজ মানুষকে আকৃষ্ট করতে এমবিবিএস চিকিৎসকদেরকেও চ্যালেঞ্জ করতে দ্বিধাবোধ করেন না।
গ্রাম অঞ্চলের সহজ সরল মানুষও খুব সহজে এদের কথায় বিশ্বাস করে ওষুধ কিনছে।
উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা মশিউর রহমান জানান, এক মাস আগে ফলগাছা বাজার থেকে এক কবিরাজের মিথ্যা চটকদার কথার ফাঁদে পড়ে ১২০ টাকা দিয়ে একটা সালসার বোতল নিয়েছিলাম। কিন্তু ওষুধ খাওয়ার পর কোন কাজই হয়নি। দহবন্দ ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, মীরগঞ্জ বাজার থেকে যৌন রোগের জন্য ওষুধ কিনে তা সেবনের পর কাজ তো দূরের কথা উল্টো আমি বেশী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। গত শনিবার মীরগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা যায় আবুল হোসেন নামের একজন হাতুড়ে কবিরাজ গানের আসর জমিয়ে সালসা বিক্রি করছেন।
কবিরাজ আবুল হোসেন জানান, আগে আমি হাট-বাজারে সাপের খেলা দেখিয়ে তাবিজ কবজ্ব বিক্রি করতাম। আমাকে এক নামেই সাপুড়িয়া আবুল বলে সবাই চিনে। এখন আমি হেকিম হয়েছি। বর্তমানে আমি হাট-বাজারে মানুষের বিভিন্ন রোগের জন্য সালসা বিক্রি করি। তার দাবি আমার সালসায় কোন ভেজাল নেই।
এগুলো বিভিন্ন গাছ গাছড়ার শিকড় ও বাকল দিয়ে তৈরী যা বিভিন্ন রোগের কাজ করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিউল হোসেন জানান, এসব হাতুড়ে কবিরাজের চিকিৎসা নিয়ে অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এসব অপচিকিৎসা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আমাদের কোন ক্ষমতা নেই। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।