কিছু মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিছু মানুষ স্বপ্নটা সত্যি করার জন্য ঘুম থেকে জেগে উঠে। জীবন আপনার কাছে সেভাবেই ধরা দিবে আপনি যেরকম থাকবেন।
(খলিল সিরিজ একটা ফাজিল সিরিজ)
প্রায় দুই মাস পর খলিল সিরিজ লিখছি। এই দুইমাস কঠোর সাধনার ফলে খলিলের একটি গার্লফ্রেন্ড প্রায় হয় হয় অবস্থা।
কাহিনীর সুত্রপাত ঘটে যখন একই লিফটে খলিল আর সেই মেয়ে আটকা পড়ে। সববার তো আর লিমা দেব (খলিল-৩) থাকবেনা। দুই একবার সত্যিকারের মেয়েও থাকবে। মেয়ের নাম সানজানা। সে প্রথমে লিফটে ছিল।
তারপর খলিল উঠার পরেই লিফট বন্ধ হয়ে যায়। মেয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিল্লানো শুরু করলে লোকজন এসে খলিলকে বেদম প্রহার করে। সমস্যাটা আসলে ছিল মেয়েটা তোতলা। তার এটা বলতে অনেক সময় লাগে যে আসলে খলিল তার সাথে উলটা কিছু করার চেস্টা করেনায়। তবে সব মিলায় কিন্তু খলিলের লাভ হল।
মেয়েটার সফট কর্নার পাওয়া গেল। কাহিনীর পরের অংশ নিচে দেওয়া হল।
হিন্দি বা ইংলিশ সিনেমায় এরকম সিন দেখা যায়। খলিল-১৫-তেও খলিলের সাথে সেরকম একটা ঘটনা ঘটে গেল। খলিল বিজন বন দিয়ে হাটছিল ঠিক তখনি সে একজন মেয়ের চিৎকার শুনতে পায়।
মেয়েদের চিৎকারে খলিল ইদানিং তেমন বিচলিত হয়না তারপরেও অধিক চিৎকারে সে নিজেকে সংবরন করতে পারলনা। চিৎকার শুনে কাছে গিয়ে দেখে যে কিছু লোক পাহাড়ে উঠার চেস্টা করছে। খলিল ধাঁধা খেয়ে গেল। পাহাড় চিতকার করে কেন? তাও বলছে বাঁচাও বাঁচাও ছেড়ে দে শয়তান দেহ পাবি কিন্তু মন পাবিনা। খলিল তখনি বলে উঠল, আরে ভুল কথা, বল পাহাড় পাবি কিন্তু পাথর পাবিনা।
খলিল যখনি গুন্ডাদের উপর ঝাপিয়ে পড়তে যাবে তখনি কোথেকে কে চিৎকার করল “কাট”। ঘটনা পরিষ্কার। সিনেমার শুটিং চলছে কিন্তু খলিল ব্যাপারটা ধরতে পারেনায়। কারন- খলিল তো খলিলই। নায়িকা মুনমুন মহা ক্ষ্যাপা।
কোথেকে এই বেকুব খলিল এসে হাজির। “মহিলা কিংকং” ছবির শুটিং চলছে এর মাঝখানে খলিল এসে হাজির। শুটিং এর ব্যাঘাত।
এর মাঝখানে সানজানা নামক এক মেয়ের সাথে খলিলের সামান্য কাহিনীর কানাঘুষা শোনা গেল। এই প্রথমবারের মত কোন মেয়ে একটু আধটু আগ্রহ দেখাল কিন্তু মেয়ের সোজা কথা তার বাবাকে ইম্প্রেস করতে হবে, তাহলে সে রাজী।
দিলোয়ালে দুলাহানিয়ার মত কাহিনী। সানজানার বাবার আবার মাঝে মাঝেই নিজ গ্রামে ভ্রমনের শখ আছে। খলিলও সানজানার বাবাকে ইম্প্রেস করার জন্য ঐ গ্রামে গিয়ে হাজির। গ্রামের করিমপুর। গ্রামে গিয়ে দেখা গেল সেখানে ইম্প্রেস টেলিফিল্ম এর অধীনে নির্মিত সিনেমা “মহিলা কিংকং” এর শুটিং চলছে।
ঐ দিকে খলিল গ্রামে এসেছে এটা সানজানার বাবার কানে গিয়েছে। যদিও সানজানার বাবা খলিলকে চিনেনা। খলিল বুদ্ধি করে সিনেমার টিমে ঢুকে গেল। ডিরেক্টরকে পটিয়ে তার সাহায্যকারী হয়ে গেল। তবে সমস্যা হল মুনমুন তাকে চিনে যাওয়াতে।
এমতবস্থায় একদিন খলিলের হাতে দ্বায়িত্ব পড়ল গ্রাম থেকে গরুর দুধ যোগাড় করার। কারন বিশাল সিনেমার টিমে চা খাওয়াতে গেলে দুধ লাগবে। গ্রামের এক গোয়াল ঘরের সামনে খলিল গিয়ে গল্প জুড়ে দিল। রাখাল বালক সাদাসিধা ছেলে। তার কাছে খোশগল্প করতে লাগল খলিল।
খলিল রাখাল বালককে উপদেশ দিতে লাগল, বাঘ আসছে বাঘ আসছে এরকম করে জানি না চিল্লায়। ঈশপ এরকম করতে নিষেধ করেছেন। সত্যি সত্যি বাঘ চলে আসলে আর সাহায্য করার জন্য কাউকে পাওয়া যাবেনা। রাখাল বালক জিজ্ঞেস করল কোন সিনেমা হবে। খলিল বলল এর পরে একটা গানের শুটিং আছে।
গানের নাম, “ আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে…………………. যাব তোমায় শশুড় বাড়ি নিয়ে”। রাখাল বালক বলল, নায়িকা কি মুনমুন আপা? এই কথা বলার সাথে সাথে খুব অবাক করা ব্যাপার ঘটল। গ্রামের যত গরু আছে, সব গুলা গোয়াল থেকে পালানো শুরু করল। ঐ গ্রামে আর কোন গরু থাকলনা। সব গরু পালিয়ে পাশের গ্রামে চলে গেল।
গরু পালানোর ঘটনায় গ্রামবাসী বেশ চটে গেল। গ্রামে সালিশ বসল। মোড়ল দেখা গেল সানজানার বাবা। সিনেমার ডিরেক্টরকে তিনি আচ্ছামত ঝাড়লেন। সিনেমার ডিরেক্টর এসে খলিলকে ঝাড়া শুরু করলেন।
খলিল এখন বেকায়দাতে পড়ল। সানজানার বাবা তার উপরেই কিনা ক্ষেপে গেছে।
এরপর সিনেমার শুটিং এ আবার সমস্যা হল। ময়ুরী কলসী কাধে পুকুরে নামার সিন আছে। এই দৃশ্য শুরু হওয়ার কিছুক্ষন আগে গ্রামবাসী এসে হাজির।
কি সমস্যা? ২০০৪ সালের দিকে নাকি ইন্দোনেশিয়াতে এই দৃশ্যে মুনমুন অভিনয় করেছিলেন। সমুদ্রে ঝাপ দিয়েছিলান পরে সমুদ্রের সব পানি উঠে এসে ৮ টা দেশ ভাসিয়ে নিয়ে যায় যাকে কিনা বলে পরে নাম দেওয়া হয় সুনামি। তাই গ্রামবাসী ভয়ে আছে। খলিল দেখল এই সুযোগ। সানজানার বাবার কাছে হিরো হওয়ার।
খলিল বলল, আরে না তা কি করে হয়? মুনমুন আপা আপনি ঝাপ দেন। দেখি কি হয়। মুনমুন ঝাপ দিতে যাবে। খুব অদ্ভুত ব্যাপার ঘটল। ঝাপ দেওয়ার আগেই পুকুরের সব মাছ ডাঙ্গায় উঠে আসল।
লোকজন হৈ হৈ করে ছুটে গেল। মাছ গুলাকে ধরতে লাগল।
এরপর আবার সালিষী বসল। ঠিক হল গ্রামে আর শুটিং করতে দেওয়া যাবেনা। গ্রামে এখন দুধ দেওয়ার মত গরু নেই, পুকুরে কোন মাছ নেই।
এমন অবস্থা চলতে দেওয়া যায়না। খলিল এবার পড়ল বিপাকে। সানজানার বাবাকে তো আর বুঝতে দেওয়া যায়না যে সে সানজানার জন্য এসেছে। সানজানার বাবা তো জানে খলিল সিনেমার ইউনিটের সাথে এসেছে। ঠিক এই সময় কোথেকে একটা সাপ এসে সানজানার বাবার পায়ে কামড় দিল।
সানজানার বাবা আউউ আউউ করা শুরু করল। খলিল বুঝল এই শেষ সুযোগ। খলিল কোথেকে একটা বীন এনে বাজানো শুরু করল। যাতে সাপের সঙ্গী এসে বিষ তুলে নিয়ে যায়। খুবই আজব করা ব্যাপার।
একটা সাপ আসার কথা। হাজার হাজার সাপ কোথেকে আসতেসে কিন্তু সাপগুলার কোন কিছুর প্রতি আগ্রহ নেই। কেমন জানি পালাতে পারলেই বাঁচে!! কি ব্যাপার?? জানা গেল সাপগুলা আসলে খলিলের বীন শুনে আসেনায়। পাশের গ্রামে ইভা রহমানের একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের শুটিং নাকি কিছুক্ষনের মধ্যেই শুরু হবে। সবাই তাই পালাচ্ছে।
খলিল সানজানার বাবাকে কোলে করে নিয়ে বার নদী, তের খাল বিল পার হয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার সানজানার বাবাকে বাঁচাল। সুস্থ করে তুলল। সানজানার বাবা দেখা গেল হাইলি ইম্প্রেস। তিনি বললেন, আজ যদি আমার কোন মেয়ে থাকত তাইলে তোর সাথে বিয়ে দিতাম।
খলিল বলল, আব্বাজান সানজানার সাথে বিয়ে দেন। সানজানার বাবা বলে যাকে এতক্ষন আমরা সবাই মনে করছিলাম তিনি বললেন, সানজানা নামে তো আমার কোন মেয়ে নেই!! তবে এক ভাগ্নী আছে। আরে গাধা তুই তো সানজানার নানা বাড়ি চলে আসছিস। এই গ্রামের নাম করিমপুর। সানজানার দাদাবাড়ী রহিমপুর।
খলিলের মাথায় হাত। খলিল চিল্লাইতে লাগল, আমি এখন রহিমপুর যামু ক্যামনে। সানজানার মামা যাকে এতক্ষন সানজানার বাবা বলা হচ্ছিল তিনি বললেন, লাভ নাইরে খলিল। তুই আর সানজানা যেই লিফটে আটকা পড়ছিলি তোদের পিছনে আরেকটা চেংরা ছিল। শুনলাম সে এখন রহিমপুর আর তার কাজ সে করে ফেলসে।
কি আর করার- খলিল তো খলিল ই।
আগের গুলার লিঙ্ক
খলিল ও তার গার্লফ্রেন্ড উইশ (খলিল সিরিজ- ১)
খলিল ও তার ম্যাজিক আপেল (খলিল সিরিজ- ২)
খলিল ও তার লিমা দেব (খলিল সিরিজ-৩)
খলিল গেল ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল ও কলেজ (খলিল সিরিজ-৫)
খলিলের হইতে হইতেও হইলনা (খলিল সিরিজ-৬)
খলিল ও লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার (খলিল সিরিজ -৭)
খলিল আইডেন্টিটি (খলিল সিরিজ -৮)
খলিল সুপ্রিমাসি (খলিল সিরিজ -৯)
খলিল আল্টিমেটাম (খলিল সিরিজ-১০)
খলিল ও আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল (খলিল সিরিজ-১১)
খলিল প্রমান করিল আইন্সটাইন ভুল বলেছিলেন। (খলিল সিরিজ-১২)
খলিল ও সিরিয়াল কিলার (খলিল সিরিজ -১৩)
খলিল ও শাইশানিক (খলিল সিরিজ -১৪)
ফেসবুকে খলিল সিরিজের ফ্যান পেজ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।