কিছু মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিছু মানুষ স্বপ্নটা সত্যি করার জন্য ঘুম থেকে জেগে উঠে। জীবন আপনার কাছে সেভাবেই ধরা দিবে আপনি যেরকম থাকবেন।
খলিল সিরিজ এর আগে ভাল লেগে থাকলে ফেসবুকে খলিল সিরিজের ফ্যান পেজ এ একটা লাইক দিয়েন
চলছে......
খলিল আইডেন্টিটি ও সুপ্রিমেসি এর পরে এটা শেষ অংশ।
১৯০০ সালের পৃথিবীতে যেরকম নারী জাগরনের পথিকৃত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন তেমনি ২৭০০ সালের পৃথিবী ছিলেন সোজায়লা।
তখন পৃথিবীতে নারীদের নিরাপত্তার চরম অবনতি ঘটে। পুরুষদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে বাঁচানোর জন্য নারী বিজ্ঞানী সোজায়লা সাইবট আবিষ্কার করেন। সাইবট অনেকটা ফটোকপি এর মত। মানুষের ফটোকপি। তবে চার্জ দিয়ে রাখতে হয়।
অনেকটা এরকম কোনো পুরুধের লোলুপ দৃষ্টি পরলন কোনো মেয়ের প্রতি। মেয়েটা তার একটা সাইবট বানাল। সেটাকে কোথাও ছেড়ে দিল। কোনোভাবে কোনো ছেলে সেইটাকে ছোয়া মাত্রই ঐটা যার সাইবট ছিল সে দূর থেকে রিমোট কন্ত্রোল দিয়ে শচক দিয়ে ছেলেটাকে মেরে ফেলতে পারবে। সাইবট আবিষ্কার এর পর থেকে হুলস্থুল কান্ড বেধে যায়।
সরকার এটাকে নিসিদ্ধ করতে চাইলেও এটার ব্যাবহার রোধ করতে পারেনি। সোজায়লা এটা এমন ভাবে বানিয়েছিলেন যাতে ছেলেদের সাইবট তৈরি না হয়। ছেলে-মেয়ে বিরোধ সেখান থেকেই আসলে শুরু হয়। কারন মেয়েদের দাবী সাইবট তারা ছাড়বেনা। ছেলেদের শিক্ষা দেওয়ার এটাই সব থেকে ভাল উপায়।
কিন্তু প্রতিটা টেকনোলোজি এর মিস-ইউজ হয়। সাইবট এর টাও হতে লাগল। মেয়েরা বুঝতে পারল পুরুষ শ্বাশিত সমাজটা তারা এখন চাইলেই পরিবর্তন করতে পারে। এ নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। কিন্তু আসতে আসতে দুনিয়াটা নারীদের দখলে চলে যায়।
এর পিছনে আরেকটা কারন ছিল কৃত্রিম স্পার্ম আবিষ্কার। বংশ পরম্পরা চালু রাখার জন্য তাহলে আর ছেলের দরকার নাই। ২৮০০ সালের দুনিয়াতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান নারি এলিহাস এখন ছেলেদের আর্মি-ঈণ্টালিজেন্স এর প্রধান ব্র্যাড কে নিয়ে ব্যাস্ত। বহুবছর পরে পৃথিবীতে একটা প্রেম কাহিনির আবির্ভাব হল। তারা ফুলের বাগান, ফলের বাগান, পথ, নদী, হ্রদ একসাথে ঘুরে বেরাচ্ছে আর তাদের পেছন পেছন রাজ বেহালা বাজিয়েই যাচ্ছে।
মেয়েদের ইন্টালিজেন্স এর প্রধান রোজালিনা তার সাইবট ইয়েলোনার গায়েব হয়ে যাওয়াতে বেজায় চটেছে। সাইবট রাও তাইলে বিশ্বাস ঘাতকতা শুরু করল। বারেক মানিক কে নিয়ে ফন্দি আটছে কিভাবে আবার হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পাওয়া যায়। ঠিক সেই সময় খলিলের ২৮০০ সালে আবার আগমন হল।
২৮০০ সালের পৃথিবীতে এবারের আগমনে খলিল কেউই স্বাগত জানালনা।
বিশাল মরুভুমিতে সে আর ইয়েলোনা এখন দাঁড়িয়ে আছে। হটাত ইয়েলোনা ধপ করে মাটিতে পড়ে গেল। মাটিতে পড়ে যাওয়ার আগে তার শেষ কথা ছিল, ব্যাটারী লো। ইয়েলোনা পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বাই ভার্বাল এ শব্দ করে রোজালিনা চলে আসল। রোজালিনা বলল তোমার ছবি আমি তুলেছিলাম ইয়েলোনা না।
সে অবাধ্য হয়ে গিয়েছিল ২৮০০ সাল থেকে পালানোর জন্য ঐসব নাটক করছিল। আর পৃথিবীর অবস্থা এখন ভাল না। কোনো যোগ্য নেতৃত্ব নেই। খলিল বলল, কই যে ফাসলাম!! চল ২০১০ তে আমরা চলে যাই। রোজালিনা বলল, বোকার মত কথা বোলোনা।
পৃথিবীতে সাইবট সব ধংশ করতে হবে। যাতে আর কোনো সাইবট না তৈরী হয়। এই সাইবট ধংশ করতে পারবে একমাত্র তুমি আর রাজ। ২৭০০ সালের পরে যারা আছে তারা শক খাবে। আগেররা না।
খলিল খুশিতে গদগদ হয়ে গেল। তাইলে ইয়েলোনা এর চার্জার দাও। আমি ওরে নিয়ে চলে যাই। রোজালিনা বলল, কোনো লাভ হবেনা। কাজের কাজ কিছু করতে পারবানা।
এর থেকে সাইবট ধংশ করে দাও। ২৮০০ সালের ২০০০ সালে পারোনাই, ২৮০০ সালে যদি কাউকে পটাইতে পার দেখ। খলিল বলল, সাইবট ধংস করব কিভাবে? সাইবট তৈরির একটাই যন্ত্র আছে। মেয়েরাও এখন কয়েক ভাগে বিভক্ত। কেউ সাইবট এর পক্ষে কেউ বিপক্ষে।
সাইবট এর পাসওয়ার্ড একমাত্র জানে এলিহাস। তার কাছে পাসওয়ার্ড তা জেনে উলটা করে দিলেই সাইবট ধংস হয়ে যাবে।
খলিল আর রোজালিনা খুঁজে খুঁজে রাজ, এলিহাস আর ব্র্যাড কে খুঁজে বের করল। সাইবট এর যন্ত্রটাও যোগাড় হল কিন্তু এলিহাস এর কাছ থেকে পাসওয়ার্ড টা আর পাওয়া গেলনা। খলিল বার বার এলিহাস কে বুঝাতে লাগল পৃথিবী টিকে থাকতে হলে এই যন্ত্র রাখা জাবেনা।
এলিহাস ও বলতে লাগল আরে মোর জ্বালা পাসোয়ার্ড টা যে ভুলে গেসি। খলিল চিন্তা করতে লাগল পাসওয়ার্ড-টা কি হইতে পারে। ঐদিকে রাজ বেহালা বাজাইতে আছে বাজাইতেই আছে। ঠিক এই সময় মানিক আর বারেক লেজারগান নিয়ে আসল। এলিহাস জিজ্ঞেস করল কি ব্যাপার তোমাদের।
বারেক বলল, আমি পৃথিবী দখল করে নিয়েছি। তখন রোজালিনা বলল, পৃথিবি এখন কেউ দখল করবেনা। পৃথিবীতে নতুন শ্বাসন ব্যাবস্থা আসবে। খলিল পাসোওয়ার্ড টা দিলেই হবে। এলিহাস বলল, চারটা দশ অক্ষ্ররের পাসোয়ার্ড এর ৭ টা মনে পরেছে।
শেষের ৩ টার একটা কম্বিনেশন বানাইতে হবে। খলিল বলল আরে ব্যাপারনা। খলিল পাসোয়ার্ড দিল। মেশিন টুং করে আওয়াজ করল কিছু হলনা। এলিহাস বলল, এহ হে ভুল পাসওয়ার্ড।
খালিল আবার খলিল আবার কম্বিনেশন বানাল। মেশিন এবার ধরাম করে আওয়াজ হল তাও কিছু হল না। খলিল শালার মেশিন বলে একটা লাথি মারল। সমগ্র পৃথিবীর সকল সাইবট আর ঐ মেশিন ধংশ হয়ে গেল।
পৃথিবী এখন আনন্দ মুখর অবস্থা।
সমগ্র পৃথিবীতে এখন খলিলের জয় জয়কার। মেয়েদের জগতেও খলিল হিট। খলিল রাজ কে নিয়ে রোজালিনা এর কাছে গেল। রাজ কে বলল রাজ তুমি বেহালা বাজাও আমি রোজালিনা কে প্রপোজ করব। রাজ বেহালা বাজাল।
খলিল গান গাওয়া শুরু করল, ২৮০০ সালের পৃথিবিতেও খলিলের ভাগ্যের কোনো চেঞ্জ হলনা। রোজালিনা রাজ এর প্রেম এ পরল। এটা দেখে দেখে পৃথিবীর অর্ধেক খলিল ভক্তরা খেপে গেল। পুরা পৃথিবীতে খলিলের ন্যায় বিঁচার চেয়ে যুদ্ধ বিগ্রহ অবস্থা। ঠিক এই সময় খলিল বুঝল আর এখানে থাকা যাবেনা।
আরো বড় গ্যাঞ্জাম লাগবে। সে রাজ আর রোজালিনা কে নিয়ে লেজার টাইম মেশিন এর ঐখানে গেল। টাইম মেশিন অন করল। কিন্তু টাইম মেশিন এর টাইম টা ঠিক করা হয়নায়। ওইদিকে মানিক দৌড়ায় এসে দেখে খলিল রোজালিনা আর রাজ মোট ৩ জন থাকার কথা টাইম মেশিন ৫ জন দেখাচ্ছে কেন!!
ইখতিয়ার মুহম্মদ বখতিয়ার খলজি ভারত বর্ষ জয় করতে যাচ্ছিলেন।
১৭ জন সৈন্য নিয়েই তিনি জয় করে ফেলবেন তার বিশ্বাস। কিন্তু পেছন থেকে কে জানি চেঁচামেচি করছে। তিনি বেশ বিরক্ত হলেন। পিছনে তাকিয়ে দেখলেন তার ঘোড়া এখন ১৮ টা। ১৮ নম্বর ঘোড়াতে খলিল হাতে তলোয়াড় নিয়ে মহব্বত বহব্বত বলে চিল্লাচ্ছে।
ঘটনাটা ১২০৬ সালের।
কলম্বাস তার জাহাজ এর অগ্রভাগে এসে দাড়িয়েছেন। আর একটু পরেই জাহাজ তীরে ভীড়বে। তিনি দূরবিন লাগিয়ে দেখলেন কে জানি ঐখানে দাঁড়িয়ে আছে আর হাত দেখাচ্ছে। তার হাতে একটা কাগজ আর সেখানে লেখা, “এখানে কোনো মেয়ে মানুশ নাই কিন্তু এ্যানাকোন্ডা আছে।
কাজেই ভয় নাই চইলা আসেন”। কলম্বাস তার নাবিক দের বললেন দূর এটা তো কোনো নতুন জাইগা না। আমাদের মনে হয় আরো পশ্চিমে যেতে হবে। পেন্ডুলাম টা কেউ আন তো!!!
নেইল আরমস্ট্রং আসতে আসতে স্পেশশীপ থেকে নামছেন। কলিন্স লুনার থেকে সব কিছু খেয়াল করছেন।
নেইল আরমস্ট্রং পা রাখলেন। তারপর বললেন, "That's one small step for man, one giant leap for mankind"। তারপর তিনি থতমত খেয়ে গেলেন। চাঁদের বুকে কে জানি লিখে রেখেছে, “ This is a good place. There is no girl here- Khalil”
সাইবট এর যন্ত্রে কখনো ভুল পাসোয়ার্ড দিতে হয়না। দুইটা ভুল পাসোয়ার্ড এ দুইটা খলিল তৈরি হইসে এখন মোট তিনটা খলিল।
কিন্তু আসল খলিল যে কোনটা এখনো বুঝা যাচ্ছেনা। কারন কোনটাই যে ২০১০ এ আসেনায়।
(৮,৯,১০ মিলে ট্রাইলোজি এখানেই শেষ। এমনিতে খলিল সিরিজের প্রতি পর্বে নতুন গল্প থাকে। )
আগের গুলার লিঙ্ক
খলিল ও তার গার্লফ্রেন্ড উইশ (খলিল সিরিজ- ১)
খলিল ও তার ম্যাজিক আপেল (খলিল সিরিজ-২)
খলিল ও তার লিমা দেব (খলিল সিরিজ-৩)
খলিল গেল ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল ও কলেজ (খলিল সিরিজ-৫)
খলিলের হইতে হইতেও হইলনা (খলিল সিরিজ-৬)
খলিল ও লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার (খলিল সিরিজ -৭)
খলিল আইডেন্টিটি (খলিল সিরিজ -৮)
খলিল সুপ্রিমাসি (খলিল সিরিজ -৯)
খলিল সিরিজ এর আগে ভাল লেগে থাকলে ফেসবুকে খলিল সিরিজের ফ্যান পেজ এ একটা লাইক দিয়েন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।