অনেকদিন থেকেই আমার মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। কেন ইংরেজ ভাষাভাষীরা তাদের প্রত্যেকটি (প্রায়) কথায় ‘ফাকিং কিংবা ফাক’ শব্দটি যোগ করে। কোনো কিছুর তুলনা করা থেকে শুরু করে কাউকে গালি দেয়া, বিরক্তি প্রকাশ করা কিংবা মুগ্ধতায় এই শব্দটি আসতে বাধ্য। কিন্তু আমাদের মতো দেশের জনগোষ্ঠির কাছে সেই শব্দ শুনতে যারপরনাই রকমের অস্বস্তি লাগে। পরিবারের কারো সঙ্গে দেখতে বসা কোনো মুভিতে যদি এই শব্দটির পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে তো কথাই নেই।
তারা যতোটা সহজে এই শব্দটি তাদের ভাব প্রকাশে ব্যবহার করে তা আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে এবং আজন্ম বেড়ে ওঠা পরিবেশের সঙ্গে মেলে না কোনোভাবেই।
এখানে কি তবে নিজেকে ক্ষুদ্র মানসিকতার বলবো? যদি সবকিছুর বিশ্বায়নের কথা চিন্তা করি তবে তো তাই। কিন্তু আমার পরিবেশ আমার সংস্কৃতিকে তো ভুলতে পারবো না কোনোভাবেই। আসলে এই সংস্কৃতি নিয়ে যতটা আবেগ সবই যেন আমাদের মতো মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা মানুষগুলোর মধ্যে রয়েছে। এমন আবেগ সমাজের উপরের মানুষগুলোর মধ্যে নেই।
ধান ভাঙতে শিবের গীত গাইতে বসেছি। প্রশ্ন ছিলো কেন তারা এই শব্দটি ব্যবহার করে? ইংরেজদের এহেন ‘ফাকিং কিংবা ফাক’ শব্দটি ব্যবহারের প্রবণতার পিছনে আমার কিছু ব্যক্তিগত যুক্তি আছে। হতে পারে এই যুক্তি কারো কাছেই পছন্দ হবে না। কিন্তু যুক্তি তো একান্ত নিজের তাই না?
আমাদের এই দেশের সামাজিকতায় আমরা যে জিনিসটির সঙ্গে আজন্ম পরিচিত তা হলো শালীনতা, ভব্যতা। এবং আমাদের মতো শরীর নিয়ে ছুতমার্গ আর কোনো জাতির আছে বলে মনে হয় না।
তাই ছোটবেলা থেকেই এই বিষয়ে আমাদের রয়েছে নানা বিধিনিষেধ। এই বিধিনিষেধ যেমন ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তেমনি সামাজিক ভাবেও। এ কারণেই আমাদের দেশের ছেলে কিংবা মেয়ে উভয়েরই ছোটবেলা থেকে পরম আরাধ্য একটি স্বপ্ন থাকে নিজের একটি সংসারের। এটা যেমন সামাজিকতার সঙ্গে সম্পর্কিত তেমনই এর সঙ্গে শারীরিক বিষয়টিও জড়িত।
কোনো কোনো মেয়ে কিংবা ছেলেদের বিয়ের আগেই এই স্বাদটি হয়তো পাওয়া হয়ে যায় (এরকম ব্যাপার আসলে সবার জীবনে ঘটে না)।
তবে সংখ্যাগুরুরা বিয়ের পরেই দিল্লীর লাড্ডু খেয়ে থাকে। কিন্তু ঠিক এর উল্টো চিত্রটি পাশ্চাত্যে। তাদের জীবনে বেশির ভাগেরই দৈহিক মিলনের অভিজ্ঞতা হয় কৈশরে। আর যারা এই অভিজ্ঞতায় বঞ্চিত থেকে যায় তাদেরও এর প্রাপ্তিযোগ ঘটে যৌবনের শুরুতেই।
এখানেই হলো আসল বিষয়টি।
পাশ্চাত্যের সবারই একদম বাস্তবিক ‘ফাকিং’ এর সঙ্গে পরিচয় ঘটে খুব সহজেই। তাই তাদের কাছে সবকিছুর চূড়ান্ত রূপটি ঐ ‘ফাকিং’ পর্যন্তই। যে কারণে তাদের কাছে কোনো সুন্দর দৃশ্য দেখলে মনে হয় ‘ফাকিং বিউটি’। মানে হলো দৈহিক মিলনের মতো সুন্দর। তেমনি কারো উপরে রেগে গেলে কিংবা বিরক্ত হলে এই শব্দটির প্রয়োগ হয়ে থাকে খুব সহজেই।
আর এদিক থেকে আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে বিষয়টি কোনোভাবেই মেলে না। সে কারণে এই চূড়ান্ত রূপটি আমাদের দেখতে অনেকদিন লেগে যায়। তাই আর কোনো কিছুর তুলনায় ‘ফাকিং’ এর ব্যবহার অন্তত আমরা করি না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।