আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিচিত্র কয়েকজন রাজা রানী।

!!

আমাদের দুই রানীর ভাবসাব আর তাদের সাজসজ্জা দেখে যারা নিয়মিত টাসকি খান তারা এই রাজা রানীদের দেখে নিশ্চিত ভাবেই ভাববেন এদের তুলনায় আমাদের দুই রানী যথেষ্ট ভাল। আগবুলি আগবো ডেজলানি- ১৯৮৯ সালে ডেজলানি বেনিনের আবুমি প্রদেশের রাজা হিসাবে অধিষ্টিত হয়। ডেজলানি এর আগে স্থানীয় পুলিশ বিভাগে চাকরি করতেন। এ রাজা নাকে একটি রুপোর তৈরী ধুলি নিবারক পরে থাকেন। যাতে করে রাজকীয় বাহিনী কুচকাওয়াজের সময় তার নাকে ধুলো না ঢুকতে পারে।

তবে এই রাজার চরিত্র বেশ ভালই বলা চলে। কারন যেখানে অন্যান আফ্রিকান রাজারা গন্ডায় গন্ডায় বিয়ে করেন সেখানে তার বউ মাত্র তিনজন। তৃতীয় নিয়ামি কক মাবিনটস- কঙ্গোর কুবা রাজ্যের রাজা নিয়ামি। তার রাজকীয় পোশাকে রয়েছে ধাতুর ছড়াছড়ি। পোশাকের ওজন ৮৫ কেজি।

দুদিন ধরে নানা আনুষ্টানিকতা শেষ করার পর রাজাকে এই পোশাক পরাতে দুই ঘন্টার মত সময় লাগে। আমি ভাবছি এই সময় রাজামশাই এর হাগুমুগু ধরলে কি করে? রাজার প্রজাদের বিশ্বাষ তাদের রাজার আলৌকিক ক্ষমতা আছে। আলহাজ মামাদু কবির উসমান- নাইজেরিয়ার কাতসিনার আমির তিনি। উনি আবার খুব ধার্মিক মুসলমান এবং পলো খেলার ভীষন ভক্ত। অনেক আগে কাতসিনার আমিরদের কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে রাজ্যের বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ নতুন রাজা নির্বাচিত করত।

এবং তাকে কালো ষাড়ের রক্ত দ্বারা গোসল করাত। শুধু তাই নয় সাবেক রাজাকে মেরে ঐ ষাড়ের চামড়া দ্বারা মুড়ে পুতে ফেলত। ভাগ্যিস এখন আর এ নিয়ম চালু নাই। তবে এই রাজায় এমন করে মুখ ঢেকে রেখেছে কেন তা আমি বুঝতে পারছি না। কামজা জোশেপ- ক্যামেরুনের বানদজুন রাজ্যের রাজা উনি।

রাজা হওয়ার আগে তিনি ক্যামেরুনের অর্থ মন্ত্রালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তার সম্পর্কে রটনা হল সমস্ত সাহসী ও শক্তিশালী প্রানীর ভাই তিনি। এবং তার রয়েছে অশরীরি ক্ষমতা যা তিনি জীবজন্তুর উপর পরিচালনা করতে পারেন। এদের রাজা হওয়ার আনুষ্টানিকতা বেশ জটিল। ৯ সপ্তাহ ধরে প্রশিক্ষন নিতে হয় কিভাবে রাজা হতে হবে এবং কি করতে হবে এইসব হাবিজাবির।

আমার অবশ্য সন্দেহ হয় এই ৯ সপ্তাহ ধরে জাদুবিদ্যার প্রশিক্ষন নেয় তারা। উনার চারপাশটা দেখেন না কেমন ভৌতিক! জোশেপ ল্যাংগানফিন- বেনিনে সরকারিভাবে কোনও রাজা নেই। জোশেপ মূলত আবুমির রয়েল ফ্যামিলিস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট। তার দাদা অবশ্য এই রাজ্যের সত্যিকারের রাজা ছিলেন। সেই সুবাদে সেও নিজেকে রাজা বলে ঘোষনা দেয়।

মূলত সে আবুমি রাজপরিবারের প্রতিনিধি হিসাবেই বিবেচিত। চতুর্থ হাপি- ক্যামেরুনের বানা প্রদেশের রাজা সে। তাদের রাজা হওয়া নিয়ে মর্মান্তিক এক ঘটনা ঘটেছিল। দ্বাদশ শতাব্দির মাঝামাঝি সময় কিছু বিভদমান গোষ্টী নিজেদের মধ্যে সমঝোতার জন্য একটি গ্রামে মিলিত হয় যা এখন বানা নামে পরিচিত। তো তারা এক হওয়ার পর হাপির পূর্বপুরুষ মেফেং যাদুকর বলে দোষী সাব্যস্থ হয়।

সে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য তার মার শিরোচ্ছেদ করে এবং প্রমাণ করে সে কোনো জাদুকর নয়। প্রতিশোধ নিতে সে তার চার সন্তানের সহায়তায় অন্য গোত্রপতিদের মার শিরোচ্ছেদ করে এবং নিজেকে রাজা হিসাবে ঘোষনা দেয়। জুলু রাজা- আফ্রিকান গোষ্টীদের মধ্যে জুলুরাই মনে হয় সবচেয়ে বিখ্যাত। যোদ্ধা হিসাবে রয়েছে তাদের বিশেষ খ্যাতি। জুলুদের বর্তমান রাজার নাম গুডউইল জুয়েলতিনি।

তার রয়েছে ৬টি বউ ও ২৭ টি সন্তান। সে আবার বেশ বিলাসী। রয়েছে মার্সিডিস গাড়ি। আবার সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রিধারী ও তিনি। ও ভাল কথা জুলুদের বাস হল সাউথ আফ্রিকাতে।

তৃতীয় ওসিডীজো আডো ডানকোয়া- উনি ঘানার অ্যাকোয়াপ্যাম রাজ্যের রাজা। আডো আবার লন্ডন ইউনিভার্সিটির স্নাতক ডিগ্রিধারী। ঘানা সরকারের একজন অর্থনৈতিক উপদেষ্টাও বটে। রাজার সামনে যে পিচ্চিটা বসে আছে সেই কিন্তু আসল জিনিস। তাদের বিশ্বাষ এই বালকের মধ্যে রাজার আত্মা রয়েছে! এবং তাকে ডাকা হয় "ওকরা" নামে।

এই ওকরা রাজাকে সকল বিপদ আপদ,রোগ এমনকি মৃত্যু থেকেও রক্ষা করবে । সে সকল জাদু ও অপশক্তি যা রাজার প্রতি ধাবিত তা নিজের উপর ঠেনে নিয়ে রাজাকে রক্ষা করবে। রাজ্যের বাসিন্দাদের বিশ্বাষ রাজা কখনই অসুস্থ হবেন না এবং যদি হন তার মানে হল রাজ্যে ভয়ানক কোনো বিপদ আসন্ন। আমি বুঝি না লন্ডন থেকে গ্যাজিউয়েট একজন লোক কিভাবে এত কুসংষ্কারচ্ছন্ন হয়! জিমি মক্সন- আফ্রিকায় কি শুধু কালোদের বসাবাস? না। ওখানে শ্বেতাঙ্গ যেমন আছে তেমনি বিশ জনের মত শ্বেতাঙ্গ রাজাও আছে।

তবে তাদের প্রায় সবাই নাইজেরিয়া ও ঘানায় বসবাস করে। এই রাজার বাড়িও ঘানাতে। ক্যামব্রিজের সাবেক ছাত্র এই রাজা বেশ ভাল ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি অবশ্য উত্তারাধিকার সূত্রে রাজা নন। ঘানার সরকার তাকে ১৯৬৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নানা কফি অবনায়া রাজ্যের রাজা হিসাবে নিযুক্ত করে।

ওবা জোসেপ এডকোলা- ইনি নাইজেরিয়ার আউ রাজ্যের রাজা। তার সাজসজ্জা দেখার মত বটে। তবে আমি উনার সম্পর্কে বিস্তারিত তেমন কিছু জানি না। আইভরিকোস্টের আকান গোত্রের রাজা ইনি। চোখে পড়া খাটি সোনার তৈরী চশমা।

যা আকানদের ট্র্যাডিশন্যাল অনুষ্টান চলাকালে তাকে পড়তে হয়। আমার মাথায় ঢুকছে না এটা পড়ে উনি চোখে দেথেন কিভাবে! রানী পঞ্চম মডজাজি- এবার আসুন একজন রানীকে দেখি। উনার নাম মডজাজি। দক্ষিন আফ্রিকায় বসাবাস এই রানীকে বৃষ্টির রানী ডাকা হয়। তার ভক্তদের বিশ্বাষ বৃষ্টির উপর তার সম্পুর্ন নিযন্ত্রন রয়েছে।

একে ডাইনী বা জাদু বিদ্যার অধিকারী বলেও বিশ্বাষ করা হয়। এমনকি যোদ্ধা জুলুরা পর্যন্ত তাকে ভয় করে। নিযমানুসারে এই রানী কোনও পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে না। যদিও তার রয়েছে ৩৩ জন সহচরী। এত সহচরী দিয়ে এই মহিলা করে কি!তবে কি এই রানী...? সন্দেহের যথেষ্ট কারন আছে।

এই রানী নিজেই অবৈধ্য সম্পর্কের ফলে জন্ম নিয়েছেন। এবং তাদের বংশধারা প্রথম থেকেই ইনচেষ্ট সেক্স এর নোংরামীতে কলংকিত। বি:দ্র: এই লেখার কিছু তথ্য ম্যাগাজিন ও পত্রিকা থেকে নেওয়া। ছবি এবং কিছু তথ্য আমি নীচের দুটি লিংক থেকে নিয়েছি। সূত্র-১ সূত্র-২


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।