ছুটে চলে রাতের ট্রেন। দূরে, বহূ দূরে। গন্তব্যটা জানা আছে। কিন্তূ গন্তব্যে পৌছানোর সময়টা জানা নেই। ঠিক যেন জীবনের মত।
ট্রেনের জানলাটা খোলা। ঠান্ডা হাওয়া ঢুকছে জানলাটা দিয়ে। শরীরটা একদম শীতল হয়ে যাচ্ছে। খুব একা একা লাগছে। ইদানিং জীবনটাকে খুব বড় মনে হয়।
মনে হয় সুখের শেষ মূহূর্তটাই কেন জীবনের শেষ মূহূর্ত হয় না।
রেজা ইদানিং প্রায়ই ঝগড়া করে আমার সাথে। কারনে, অকারনে। আমিও যে খুব ভালো তা না। তবে ওর ঝগড়াটা আমার কাছে খুব নিষ্ঠুর প্রকৃতির মনে হয়।
নিজের ভূল গুলো কখনই ভূল মনে করে না। ভীষন অপমান করে কথা বলে ও। তখন আমিও ছেড়ে কথা বলি না। চলে তুমুল তর্ক বিতর্ক। এটা কি কোন জীবন হল? কি করবো আমি, কাকে বলবো।
আম্মু অনেক বলেছে "ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না"। কে শোনে কার কথা।
মাত্র কয়েক দিন হলো পারিবারিক ভাবে ওর সাথে আমার এ্যাংগেজমেন্ট হয়েছে। তার আগে বছর দেড়েকের প্রেম। তখনও ওর সাথে আমার ঝগড়া হত।
তখন ঝগড়াটা ততটা তিক্ত লাগতো না,এখন যতটা লাগে। আমিও ভীষন রাগী প্রকৃতির। ও যখন আমাকে অপমান করে কথা বলে, আমিও তখন ওকে অপমান করার চেষ্টা করি। যেন দু' জন দু' জন কে ছোট করার জন্য প্রানপণ লড়াই করছি। ঝগড়া শেষে ভাবি এ কেমন ভালোবাসা!!!! আসলেই কি আমরা দু' জন দু' জন কে ভালোবাসি!!!!! নাকি দু' জন দু' জন কে আকড়ে ধরে বাচাঁর চেষ্টা করি!!! আবার মনে হয়, ভালোবাসার মানুষকে ধরেই তো মানুষ বাচাঁর চেষ্টা করে।
ওই বা আমাকে কতটা ভালোবাসে। অতিষ্ঠ লাগে এই যাপিত জীবনটাকে। মনে হয় ওকে ছাড়া আমার বেচেঁ থাকাও সম্ভভ না, আবার মরে যাওয়াও সম্ভভ না। যখন রাগ করে ফোনটা বন্ধ রাখি, তখন বুকের ভেতরটা কেমন যেন ছটফট করে। মনে হয় ওকে ছাড়া আমার সম্ভব না।
ঝগড়া শেষে যখন বার বার ফোন করে বিরক্ত করে তখন ও রাগ করে থাকতে পারি না। মনের ভাবনা গুলোর বিচিত্র চরিত্র দেখে অবাক লাগে।
আজও রাগ করে ফোন বন্ধ করে রেখেছি। ঢাকা ছেড়ে চিটাগাং নানা বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা করেছি। জানি এর জন্যেও আমাকে অনেক ভৎষনা শুনতে হবে।
বার বার অন্য কাউকে দিয়ে ফোন করিয়ে আমার ফোনটা ওপেন করতে বলবে। আর ফোনটা ওপেন করা মাত্র বার বার ফোন করে বিরক্ত করবে আর বলবে কেন এমন করেছো তাই তুমি এখন স্যরি বলবা। যখন দেখবে যে আমি স্যরি বলি না, বলবে ঠিক আছে বলতে হবে না। এমনিতেই মাফ করে দিলাম। মাঝে মাঝে এরকম অদ্ভুত কথা শুনে হাসিও পায়।
তাইতো পাগলটাকে ছেড়ে যেতেও পারি না। ভাবতে ভাবতেই কেমন যেন পাগলাটার জন্য খারাপ লাগছে। ফোনটা ওপনে না করে থাকতে পারছি না। এইতো পাগলার ফোন চলে আসছে। নাঃ রিসিভ করবনা।
করেই ফেললাম।
পাগলা : হ্যালললললললল
----- শুনছি
কই গেলা জান? তোমার ফোন বন্ধ কেনো? বললামতো মাফ করে দিছি, আর ফোন বন্ধ করলে কিন্তু মাফ করবো না।
------ তুমি মাফ করবা, নাকি আমি তোমাকে মাফ করবো। দোষ কে করছে।
------ধুর বাদ দাওতো।
ছোট আপু বলল তুমি নাকি নানা বাড়ি যাচ্ছ?
------জানিনা।
------ঠিক আছে। যাচ্ছ যেহেতু যাও। আমি পরের ট্রেনে আসতেছি। বাইই ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।