নিজের জন্য লেখি, নিজের কথা লেখি।
আমরা যেদিন জুমার নামাজ পড়ি আরবের পূর্বাঞ্চলের দেশগুলোতে সেদিন চাদের হিসেবে শুক্রবার নয় বরং বৃহস্পতিবার।
সূর্যের হিসাবে ঠিক কখন বা কোথায় দিন আরম্ভ হয় বলা কঠিন। মানুষে সুবিধার জন্য প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম তীর হতে দিন গণনা করা হয়। কিন্তু চাঁদের হিসাবে একটা দিন বা তারিখ কখন বা কোথায় আরম্ভ হবে তা সুস্পষ্ট।
জ্যোতির্বিজ্ঞান বিশ্লেষণে দেখা যায় যে চাঁদের তিথি আরব উপত্যকায়ই প্রথম দৃশ্বমান হয়। অর্থাৎ চাঁদের হিসাবে তারিখ বা বার আরম্ভ হয় আরব উপত্যকা থেকে।
যেমন: এই বছর(২০১৩) ১লা শাওয়াল আরবেই প্রথম চাদ দেখা গেছে এবং এই চাদের সাথে যে দিনটি আরম্ভ হয়েছে তা বৃহস্পতিবার। এরপর পৃথিবীর আবর্তনের কারনে এর ২১ ঘন্টা পরে বাংলাদেশেও চাদ দেখা যাবে, ঠিক তখন থেকেই এখানে হিজরি তারিখ অনুসারে ১লা শাওয়াল গননা করা হবে। এখন যেহেতু আরবের ২১ ঘন্টা পরে বাংলাদেশে কোন হিজরি তারিখ আরম্ভ হয়, সেহেতু হিজরি বারও কি বাংলাদেশে আরবের ২১ ঘন্টা পরে আরম্ভ হওয়া উচিৎ না? বাস্তবে আমরা আরবের ২১ ঘন্টা পরে(-২১) বার আরম্ভ না করে আরবের ৩ ঘন্টা আগে(+৩) বার গননা আরম্ভ।
ফলে আমাদের সময় =৩-(-২১)=২৪ ঘন্টা এগিয়ে যাচ্ছে। আমারা বৃহস্পতিবারেই শুক্রবার মনে করে জুমার নামাজ পড়ছি।
সূর্যের হিসাবে জাপান থেকে দিন, তারিখ বা বার গণনা আরম্ভ করা হয়। আরবের পূর্বে জাপান পর্যন্ত দেশগুলোতে সময় আরব থেকে এগিয়ে(+) গণনা করা হয়, বাস্তবে ইসলামিক তারিখ এমনকি বার ঠিক রাখতেও আরবের পূর্বে জাপান পর্যন্ত দেশগুলোতে সময় আরব থেকে পিছিয়ে(-) গণনা করতে হবে। যে দেশগুলোকে আরবের পূর্বে ধরা হয় সেগুলো আসলে আরবের দূর পশ্চিমের দেশ।
সূর্যের হিসাবে বাংলাদেশ, আরব থেকে ৩ ঘণ্টা এগিয়ে মালয়েশিয়া ৫ ঘণ্টা এগিয়ে আর আমেরিকায় ৯ ঘণ্টা পরে দিন, তারিখ বা বার আরম্ভ হয়। আর চাঁদের হিসাবে আমেরিকায় আরব থেকে ৯ ঘণ্টা পরে, মালেশিয়ায় ১৯ ঘণ্টা আর বাংলাদেশে ২১ ঘণ্টা পরে দিন, তারিখ বা বার আরম্ভ হ্য় (২/১ ঘণ্টা কমবেশি হতে পারে)। আমরা বাংলাদেশ আরব থেকে ৩ ঘণ্টা আগে মালয়েশিয়া ৫ ঘণ্টা আগে বার (যেমনঃ শুক্রবার) আরম্ভ করি। কিন্তু চাঁদের হিসাবে মালয়েশিয়া বা বাংলাদেশে শুক্রবার আরম্ভ হতে তখনও যথাক্রমে ১৯ ও ২১ ঘণ্টা বাকি।
জাপান থেকে সময়ের সূচনা ধরায় আমেরিকায় যখন শুক্রবার তখন বাংলাদেশে শনিবার ছুটি, আর আরব থেকে দিনের সূচনা ধরা হলে বাংলাদেশে শুক্রবার দুপুর ১২টার সময় আমেরিকায় শনিবারের ছুটি আরম্ভ হবে।
অনেক মুসলমানই সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ করার দাবি করেন। আনেকেই চাঁদ দেখা না গেলেও আরবের সাথে মিল রেখে প্রচলিত একই দিনে ঈদ উদযাপন করে থাকেন। শুধু তাই নয়, মালয়েশিয়া সহ দূর প্রাচ্যের কয়েকটি দেশেও চাঁদ দেখা ছাড়াই আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করা হয়। অথচ আরব থেকে সময় গণনা করা হলে এমনিতেই সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ পালিত হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।