শীতের সকালে হঠাত ঝরঝর করে বৃষ্টি হচ্ছে--ব্যাপারটা হয়ত অনেকেই দারুনভাবে উপভোগ করেন। ব্যাপারটা উপভোগ করার মতই আসলে। আমিও দারুন এনজয় করি এই বৃষ্টিটা। আর আপনারা হয়ত জানেন শীতের সিজনে বৃষ্টি কিন্তু সচরাচর হয়ও না। একবার ভেবে দেখুন তো--শীতের সকালে বৃষ্টি হচ্ছে আর আপনি লেপ কম্বল মুড়ু দিয়ে আরাম করে ঘুমাচ্ছেন।
অন্যরকম একটা ভালো লাগা অনুভূত হচ্ছেনা? আর যারা বিবাহিত, তাদের কথা আর কি বলব!! এই রকম একটা আবহাওয়ায় প্রিয়তমা স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকার যে কি সুখ--বিবাহিত না হলেও যে কিছুটা অনুভব করতে পারিনা তা বলব না!
আজ ছিল সেরকমই একটা দিন। তবে দিনটা আমার জন্য মোটেও ফেবারেবল ছিল না। ভার্সিটিতে পরীক্ষা চলছে তাও আবার সেমিস্টার ফাইনাল। লেপ কম্বল মুড়ূ দিয়ে ঘুমিয়ে থাকা কি আর আমার সাজে? সকাল সকাল নাস্তা খেয়ে বাসা থেকে বের হলাম। আমার বাসা থেকে মেইনরোডের দুরত্ব একদম কমও না।
এদিকে কোনো রিকশার নাম গন্ধও পাচ্ছিলাম না। রাস্তাঘাট কাঁদা পানিতে একাকার। এই অবস্থায় হেটে হেটে মেইনরোড পর্যন্ত যেতে হবে। বড়ই কষ্টকর এবং বিরক্তিকর একটা কাজ। কিন্তু কিছু তো করারও নেই।
ফাইনাল পরীক্ষা বলে কথা! মিস হয়ে গেলে সর্বনাশ! কষ্টেবিষ্টে মেইনরোডে আসার পর দেখি অল্পের জন্য ভার্সিটির বাসটাও মিস করে বসে আছি। কেন যেন আজকের দিনটার উপরেই মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। যাই হোক এরপর শাহবাগ পর্যন্ত গেলাম। বারডেম হাসপাতাল থেকে যখন রাস্তা ক্রস করে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিলাম, পথিমধ্যে এক অপুর্ব রুপবতী রমনী আমার চোখে পড়ল। আপনারা কি স্বর্গের অপ্সরী তিলোত্তমার নাম শুনেছেন? তিলোত্তমা ছিলেন সর্বাঙ্গ সুন্দরী এক রমনী।
তিনি নাকি এতই সুন্দরী ছিলেন যে স্বয়ং ব্রহ্মা-ই(স্রষ্টা হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী) তিলোত্তমার প্রেমে পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। মেয়েটিকে দেখে আমার মনে হচ্ছিল স্বয়ং তিলোত্তমাই বোধ হয় আজ ধরণীতে নেমে এসেছে। মেয়েটির অপূর্ব সুন্দর মুখশ্রী দেখে আমি মোহিত হয়ে গিয়েছিলাম। বৃষ্টিতে মেয়েটি ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছিল। ভেজা শরীরে মেয়েটিকে যে অপূর্ব সুন্দর লাগছিল আমি আপনাদের বলে বোঝাতে পারবনা।
হঠাত একসময় মেয়েটির সুউচ্চ, সুঢৌল পর্বতসম বক্ষ দুটি আমার চোখে পড়ল। মনে হচ্ছিল স্বর্গের সবচেয়ে সুমিষ্ট ফল দুটি সে তার বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিধাতার হাতের নিখুত স্পর্শ ছাড়া এরকম সুন্দর সেইপ দেয়া অসম্ভব। মনে মনে ভাবছিলাম বিধাতা হয়ত অনেক সময় নিয়ে এবং অনেক যত্ন করে মেয়েটিকে তৈরী করছেন। মেয়েটির বক্ষ দর্শন করতে করতে যখন রাস্তা পার হচ্ছিলাম ঠিক সেই সময় একটা গাড়ী আমাকে প্রায় ধাক্কা দিয়েই দিয়েছিল।
আল্লাহর রহমতে বেচে গিয়েছি। যদি মারা যেতাম আল্লাহর কাছে কি জবাব দিতাম? তাছাড়া একটা মেয়ের বক্ষ দর্শন করা অবস্থায় মৃত্যুর মত লজ্জাজনক মৃত্যু আর কিছু হতে পারে বলে আমার মনে হয় না। ছিঃ ছিঃ...
কিন্তু কুকুরের লেজ কি আর কখনো সোজা হয়? রাস্তা পার হয়ে যখন ক্যাম্পাসের দিকে ঢুকছিলাম তখনও মেয়েটির মাখনের মত দেহটা থেকে চোখ সরাতে পারছিলাম না। একটা সময় মেয়েটার চোখে চোখ পড়ে গেল। মেয়েটি খুব বিরক্তির দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো এবং ওড়নাটি আগের চেয়ে একটু গুছিয়ে নিল।
আমি এক মূহুর্তের জন্য চোখ সরিয়ে পুনরায় যখন মেয়েটির দিকে তাকালাম...দেখলাম সে মুখ টিপে হাসছে। মেয়েটার হাসি দেখে আমার হার্টবিট এত বেড়ে গেল যে মনে হচ্ছিল হার্টটা এখন খুলেই বেড়িয়ে আসবে। হঠাত মেয়েটির সাথে কল্পনার রাজ্যে হারিয়ে গেলাম। কল্পনা করা শুরু করলাম আমি মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরে বৃষ্টির মাঝে হেটে যাচ্ছি। মেয়েটিও আমাকে পরম মমতায় আলিঙ্গন করে আছে।
আমরা একে অপরের শরীরের উত্তাপ বিনিময় করছি। ঘোর কাটতেই দেখলাম মেয়েটি আমার চোখের সামনে একটা রিকশা করে হনহন করে চলে যাচ্ছে। বোকার মত তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আমার আর কী-ই বা করার ছিল?? কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। নিজের উপর কেন জানি খুব রাগ হচ্ছিল। ঠিক তখন-ই একটা ঐশ্বরিক বাণী আমার কানে আসল...”"যাহা ভোগ করিতে পারবিনে তাহার দিকে অযথাই লোভাতুর দৃষ্টিপাত করিসনেরে হতচ্ছাড়া!!”"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।