_________________সেলাই গাছের কারখানা _______________________________________
মানুষ ধরো, মানুষ ভজো, শোন বলি-রে পাগল মন
মানুষের ভেতরে মানুষ করিতেছে বিরাজন । ।
___________________বাউল রশীদ উদ্দিন
আজ সারা বিকেলটা নিজের জন্য রেখেছিলাম! কাজের যাঁতাকলে কখন যে বিকেল আসে, হারায়, জানি না। বিকেলকে নিজের ভাবতে পারি না। মাঝে-মাঝে ক্লান্তি লাগে।
ভাবি আর কত এখন থামা দরকার… প্রবোধ দিয়ে কত পোষ মানাই মনপাখিকে। চেতনার সব রঙ স্থির হয়ে গেছে পরবাসে… অস্থিরতা বেড়েছে জেনে মুখের চেনা ভাষাও ভুলে গেছে কথা। ঠাণ্ডা চেপে ধরছে ঢেকে রাখা বুকে। সূর্যাস্তপর্ব কবে দেখেছি মনে নেই। শরীরে মাটির গন্ধ পাই না।
পথে-ফুটপাতে হাঁটি কাদা, মাটি, জল নেই, নেই শুকনো পাতা কিংবা ডাল… চোখে পড়ে শুধু উঁচা-উঁচা দালান, সোডিয়াম লাইট, গাড়ির হর্ণ, কৃত্রিম ফুলের টব, পোষাকুকুর, হাইহিল জুতার টুং টাং আওয়াজ, খোলা-খোলা বুক…
তবুও প্রতিনিয়ত ধ্বংসের ভেতর মানুষের বসবাস। অথচ এ ধ্বংসই কখনো-কখনো ঠেলে নিয়ে যায় আবেগঘন হাওয়া ভরে অনিবার্য ভোগপরায়ণ সমাজ-বিবর্তনের দিকে। ফলে আমরা নির্ণয় করতে পারি না জীবন, আমরা নির্দিষ্ট করতে পারি না আয়ূকাল…। যে কারণে আমাদের আগ্রহ, অনুভব, অভিমান, ভাঙন ও নির্মাণের ভেতর বেড়ে ওঠে, পথ চলে… জীবনের সারাৎসার খুঁজে ধ্বংস ও নির্মাণ ঠেলে মানুষ স্বপ্ন দেখে আগামীর, অ-দেখা জগতভ্রমে পাওয়া না-পাওয়ার দোলাচলে সমস্তসঞ্চয় বিশ্বাসে সাজিয়ে রাখে
স্বপ্ন ও আশায় মানুষ বাঁচে; এই অল্প পরিসরে চলতে চলতে মানুষ তাঁর শ্রেষ্ঠ সময়কে ধারণ করে আপন মহিমায়; সৃজনশীলতায়। চেতনাবোধ নিজস্ব সত্তায় আবদ্ধ হবার বাসনায় স্মরণস্মৃতি সারাক্ষণই সাহায্য করে, যতটা সম্ভব ক্রিয়াশীল হতে হতে স্নেহ-কোমল-আত্মা ঘুরে।
নিজ সীমাবদ্ধতা কাউকে জবাব দিতে চায় না, জিজ্ঞাসাও দায়হীন, আত্মপ্রেরণাহীন। আশা মাঝে মাঝে ফুর্তি করে, উদ্দেশ্যহীনতার ছলে। মানুষ তাঁদের নিজস্ব ধ্যান-ধারণা, দৃষ্টিভঙি থেকে কি ভাবে?… প্রতিটি মুহূর্ত তাঁকে প্ররোচিত করে সার্বিক সময়েও অভিজ্ঞতা ঘিরে
মানুষ এ প্রকৃতির অংশ। পৃথিবীর সকল আরোহণ, গ্রহণ, বর্জন, গঠন, প্রকাশ ও প্রতিফলন মোহের দিকে টানে। মানুষের চিন্তা সারাক্ষণই আধুনিক, ইচ্ছা প্রস্তুতি পর্বের মতো আশা বুনে রাখার পালা।
জীবনপ্রবাহের প্রতিটি স্পর্শানুভব সে লিখে রাখতে চায় নিজস্ব চিন্তাশৈলী ও অভিজ্ঞতার ভেতর। সন্দেহ নেই প্রতিটি মানুষ তাঁর মনের ভেতর রোমান্টিক কবি; সে রোমান্টিকতার ভেতর নিজেকে তরঙ্গের মতো ভাসায় কল্পনার স্বপ্নপাহাড় সাজায়। আমি মনে করি বেঁচে থাকার প্রতিটি মুহূর্ত্ব কবিতার মতো; কবিতাই পারে যাপিতজীবন বদলে দিতে। কবিতার আবেগ আছে, অনুভব আছে, আগুনে ঝলসে ওঠার ক্ষমতা আছে, যেমনি আছে কবিতায় ক্লান্তি, হতাশা, বিরক্তিও...
তবে কবিতা আমার কাছে নারীপ্রেম কিংবা নারীস্পর্শের চাইতেও অধিক তৃপ্তিদায়ক বস্তু। কবিতার ভেতর দিয়ে কবি নিজেই পরিশুদ্ধ হচ্ছে! (যিনি কবিতা লিখছেন) কৃত্রিম বা কল্পনার ক’টি শব্দ নির্বাচন করে মিশালেই কবিতা হয় না।
কবিতা হচ্ছে মনের গভীর থেকে তুলে আনা প্রেরণা...। ‘শোকাচ্ছন্ন হাসির উপর দাঁড়ানো কান্না...’
ওসব বললে তুমিই বলবে এতো লজিক্যাল কথা! তোমার কথা আমার যত দুশ্চিন্তা... আমি কি মিথ্যা বললাম? যদি ব্যতিক্রম ভাবো— বড়জোর আমাকে বলতে পারো মনোরোগী। আমি তো জানি মিথ্যা কথারা 'বড়ই সামাজিক' হয়। তুমি দু'পা এগুলেই পেয়ে যাবো নতুন সিকোয়েন্স, অন্য কৌতূহল। আমি ঠিক বুঝি আমাকে টেনে রাখে নীল বাড়ির স্বপ্ন, মনখারাপের শেষসীমা, কারো ইমোশনাল ভাব আর...
আমি ছায়া ধরে হাঁটি, ছায়ার দেখে জাগি, ছায়ায় দেখি পুরো জগৎ সংসার।
ছায়াসম্পর্ক হলে ক্ষতি কী?... হউক না এই সব সম্পর্ক ভার্চুয়াল। আমার ছায়ারা চারিদিকে একাকী হাঁটে আর ইচ্ছেরা ঢালি পেতে দাঁড়ায় দূর পাহাড়ের চূড়ায়
ওই চূড়ায় একা বসে থাকা মানে জীবনের অন্য আশ্রয়স্থল, ফলে ছায়া ও পাহাড় আমাকে বোবাদর্শক বানায়। ইচ্ছে হলে সামনে এসো, প্রসারিত করো হাত, দেখবে প্রথমপ্রেমিকা ওইছায়া,শেষপ্রেমিকাও সে। বয়সেও আমাদের সমান। চেহারায়ও মিল।
সারাক্ষণ আমরা পাশাপাশি থাকি সুখ-দুঃখ-হাসি-বেদনা ভাগাভাগি করি। সে অর্ধেক ঘুমিয়ে নেয়, আমিও অর্ধেক ঘুমাই। যখন আসে না ঘুম, পাশাপাশি বসে আকাশ দেখি, ছায়াকে প্রশ্ন করি, তুমি কি বলতে পারো : পাশের মানুষ দেখতে আসলেই কেমন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।