i`m what i`m. একটা প্রশ্ন একটু আগে থেকেই ঘুরপাক খাচ্ছে মাথার মধ্যে। আসলে কতবার কতজনের এমন ঘটনা ঘটেছে? হিসাবটা বের করতে পারছি না। মেলবোর্নে স্টিভ ওয়াহকে দেখেছি। ট্রেন্টব্রিজে শচীন টেন্ডুলকারকে দেখেছি। সাইদ আনোয়ার যেদিন চেন্নাইতে ১৯৪ রান করলেন সেদিনও টিভিতে দেখেছি।
হ্যামেস্ট্রিং ইনজুরি নিয়ে এ তিনজনই শুধু নন। তিন অংকের ইনিংস খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে খেলতে দেখেছি মেলা। বোলারদের বেলায় সেটা বলার উপায় নেই। কারণ হ্যামেস্ট্রিং এমন এক ঝামেলা যা চাইলেই ম্যাজিক স্প্রে দিয়ে ততক্ষণাত সারানো সহজ নয়। কিন্তু একজন বোলারের হ্যামেস্ট্রিং ইনজুরি এমন কি মারাত্মক সমস্যা যা হাতে সাত দিন থাকার পরও, তাকে মূল স্কোয়াড থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে?
প্রশ্নের উত্তরটা খুঁজতে শুরু করলাম।
বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে গিয়ে যোগাযেোগ করতেই তারা নিজেরাও খুব সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলেন না। তবে সাতদিন মেলা সময় সেটা স্বীকারও করে নিলেন। কিন্তু এনামুল হক জুনিয়র যখন ২০০৯এর জুলাইয়ের পর আবারো জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্নটা সত্যি করার পথে হাঁটছিলেন, তখন এই সাত দিন সময়ের বেনিফিট অব ডাউটটা কি তিনি পেতে পারতেন না? এখানে কি প্রশ্নটা স্বাভাবিক হয়ে ওঠে না যদি তিনি সাকিব হতেন, তবে কি তাকে রেখে দিয়ে ইলিয়াস সানীকে শ্রীলঙ্কায় পাঠানোর সাহস দেখাতো বিসিবি? দুর্ভাগ্য হতে পারে। বিধাতা কড়া চাহনি দিয়ে রোষ দেখাতে পারেন। কিন্তু এখানে আকরাম খানের প্রধান নির্বাচক হওয়ার যোগ্যতা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
একজন প্রধান নির্বাচক একটা দল গঠনে বড় ভূমিকা রাখেন। তার কাছে মনে হয়েছে এনামুল হক জুনিয়রকে নিয়ে এই মূহুর্তে লঙ্কায় উড়াল দেবার ভালো সময় নয়। যদি না ঠিক হয়? তাহলে তো স্বয়ং অধিনায়ক মুশফিকের হ্যামেস্ট্রিংয়ের যে সমস্যা, তা আবারো তাকে ছিটকে ফেলতে পারে টেস্ট সিরিজের আগের প্রস্তুতি ম্যাচেই। সে জন্য কি তাকে বাদ দেয়া যেতো? এমন অনেক ইনজুরি নিয়ে ১৫ জনের দলের অনেকেই যাচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। কিন্তু এনামুল হক জুনিয়রকে সুযোগটা দেয়া গেলো না।
বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে রওনা দেবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। এই ব্লগ যখন লিখছি তখন হাতে আরো তিনদিন বাকী। তারপর প্রস্তুতি ম্যাচ তিন দিন পর। তার মানে খুব খারাপ হলে প্রস্তুতি ম্যাচটাই মিস করতে পারতেন এনামুল জুনিয়র। কিন্তু এই পাটিগনিত আকরাম খানদের কে বোঝাবে? ফিজিও বলেন সমস্যা তেমন প্রবল নয়।
টিম ম্যানেজমেন্ট ভাবে সমস্যা এতোটাই ভয়াবহ যে, মাত্রই মূল স্কোয়াড থেকে বাদ দেয়া ইলিয়াস সানীকে দলে ফেরাতে নিজেদের উগলে দেয়া বমিটা আবারো খেয়ে নিলেন আকরামরা। কি কারণে ইলিয়াস সানী বাদ সানী নিজেও সেটা জানেন না। আবার কি কারণে তাকে ডাকা হলো সেটার উত্তরও হয়তো তার জানা নেই! যেমন করে মূল টেস্ট স্কোয়াডে বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান বেশি খেলানোর অযুহাতে মার্শাল আইয়ুবকে বাদ দেয়ার পর, নাইম হাসানের ইনজুরির জন্য তাকে আবারো ডাকা হলো। প্রথমবার চূড়ান্ত স্কোয়াডে জায়গা পেলেন তিনি। কিন্তু সাকিব না থাকায় একজন বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান কম পাওয়ার আক্ষেপটা আকরাম খানদের ঘুচানোর জন্য কি আর কেউ ছিল না? বেচারা মার্শাল।
এতোটাই নরম মনের যে, জোরে ধমক দিলে চোখ ছলছল করে দিতে পারে। মনে পড়ে ১৯৯৭ এ তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে আমার দল আম্বালা স্পোর্টসের বিপক্ষে ছোট্ট সেই মার্শাল তার ছোট কব্জীতে ঘুরানো বলে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছিল। সেই মার্শালকে ২০১০ এর প্রিমিয়ার ক্রিকেটে মিরপুরে নাইম হাসানের ব্যাট থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটে টানা ছয় ছক্কা খাওয়ার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক আমিই! কিন্তু ব্যাটসম্যান মার্শাল! এক কথায়, তার প্রতি দিন দিন করে আসা অবিচারের জন্য এই জায়গা করে দেয়াটা বিসিবির জন্য ফরয ছিল। আর কত?? কতদিন ধরে ঝুড়ি ঝুড়ি রান করে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে দিতে হবে? আমাকে কেউ অযোগ্য বলতেই পারে, কিন্তু আগে যোগ্যতা প্রকাশের জায়গাটা দিয়ে ব্যর্থ হলে পরেই না! তার আগে কিভাবে ২০০৯ থেকে মার্শালদের মন খারাপ করে দেয়া হয় প্রাথমিক দলে জায়গা পাওয়ার পর বাদ দিয়ে দিয়ে, সেটা মার্শাল, মেহরাব, শামসুর শুভ বা মাহবুব রবিনদের সঙ্গে কথা না বললে বোঝা যাবে না। তবে এই বাদ পড়াদেরও অনেকের কাছে বড় আইকন হয়ে যাওয়া এনামুল হক জুনিয়রকে যখন টেলিফোনের অন্য প্রান্তে প্রায় কাঁদো কাঁদো অবস্থায় পাওয়া যায় ভাগ্যের নির্মম প্রহসনে (!), তখন ভাগ্যাহতদের নতুন নেতার খোঁজ করতেই হয়।
দেখি নির্বাচক পর্ষদ জিম্বাবুয়ে সফরের আগে এমন আর কি কি ঘটনার জন্ম দিতে পারেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।