চাঁদের দিকে হাত বাড়ালে তার আলো কিছুটা লেগে যায় চিত্তে
সবকিছুই যেন স্থবির হয়ে আছে। বাড়ির পাশে খেলারমাঠটাতে সমবয়সী বন্ধুরা ছুটাছুটি করে, খেলতে আসে কিন্তু জমে ওঠে না তেমন। দলবেধে পুকুরে সাঁতার কাটা আজ আর হয়না তাদের। স্কুলের সহপাঠিরা তার বসার জায়গা আজও ফাঁকা রেখে দেয়। আজও মায়ের হাড়িতে পড়ে থাকে দিনশেষে একবেলা খাওয়া ভাত।
তার পরনের কাপড়টাও সেভাবেই পড়ে আছে , শুধু শূন্য বিছানায় মা প্রতিদিন বই খাতা গুলোর পাতা উল্টিয়ে ভাঁজে ভাঁজে যেন খোঁজেন ছেলেকে, নাকি তার কোন স্মৃতি! ছেলের স্পর্শ যেন পান তিনি এগুলোতে। তাই আদর করেন বইগুলোকে, বুকে জড়িয়ে চুমু খেয়ে গুছিয়ে রাখেন। কখনো হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন তার ছবি হাতে নিয়ে। সবাইকে দেখিয়ে বলেন, “আমার ছেলেকে এনে দাও। ” তার কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে আকাশ বাতাস।
বাবাও বাকরুদ্ধ। স্তব্ধ পুরো গ্রাম। বিকাশকে হারিয়ে শুন্যতা ছেয়ে গেছে সবার মাঝে।
কুড়িগ্রামের বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের আঠারপাইকা দলবাড়ী গ্রামের বিকাশ চন্দ্র দাস নামের প্রায় ৫ মাস ধরে ভারতের আসাম রাজ্যের বারোপেটা জেলে আটক রয়েছে। সে মন্ডলের হাট হাই স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র ছিল।
বাবা পরবা চন্দ্র দাস পেশায় জেলে। প্রতিদিন মাছ ধরে বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। অভাবের সংসারে বাবা বিকাশের সবগুলো বইও কিনে দিতে পারেননি। ৫ মাস আগে আসাম রাজ্যের সত্য চন্দ্র নামের এক ভারতীয় অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসে প্রতিবেশি বাচ্চু দাসের বাড়ীতে ৭দিন অবস্থান করে। চলে যাওয়ার সময় বিকাশকে বই কিনে দেয়ার কথা বলে ফুঁসলিয়ে রৌমারী সীমান্ত দিয়ে পাচার করে নিয়ে যায়।
কিছুদিন পর সঞ্জিব দাস নামের একজন ভারতীয় আইনজীবী মোবাইল ফোনে বিকাশ জেলে আছে বলে জানায়। ।
কিভাবে তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব তা জানেন না তার মা-বাবা সহ এলাকাবাসী। তাই তারা তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।