জীবনে আমি কি করতে চেয়েছিলাম??? যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের গ্রাম এ পৃথিবীর সবচেয়ে মজার আইচক্রিম পাওয়া যেত। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ( বাংলা ছিঃ নেমা থেকে ধার নিলাম )আমার সামনে গব্বার সিং এর ভূমিকায় চিকন বেত হাতে আমার মা। এই বেতের বাড়ি পুলিশ এর মোটা লাঠি থেকেও খারাপ। এই কারনে আমার শৈশব ছিল আইচক্রিম
বঞ্ছিত। তাই ভাবতাম আমি বড় হয়ে আইচক্রিম ওয়ালা হব।
আহারে তাদের কি মজা!!!ক্লাস ফাইভ এ বলতাম পাইলট হব ( আমার দাদা এটা শিখিয়ে দিসে )ক্লাস নাইন এ ওঠে সুনীল কাকার সাতকাহন পড়ে ভাবতাম আমি যদি দিপা হতে পারতাম!!! এক সময় মা বলল আমার পোলারে আমি ডাক্তার বানামু। আমি ও মুন্না ভাই হবার স্বপ্ন লালন পালন শুরু করলাম। তখন আমার বড়
কাকা বলল না ইঞ্জিনিয়ার হলে ভাল হয় বিদেশে ভাল ডিমান্ড। নদীর পথ আবার পরিবর্তন হল। এক সময় ভর্তির কোচিং এর জন্য ঢাকা গেলাম এফ এর রহমান হবার স্বপ্ন নিয়ে।
ঢাকা আমার জীবনের একটা বড় দার খুলে দিল ,আমি কিছু ই চিনতাম না। কোচিং করতাম ফার্মগেট, আমি এটা ও মনে রাখতে পারতাম না। আনন্দ সিনেমা হল টা মনে রেখে চিনতাম।
আমার কাছে মনে হতে লাগল ঢাকার মানুষ গুলা অনেক জোরে হাটে ( আমার গতি সৈয়দ রাসেল এর থেকে ও কম )রাস্তার পাশে বাইছা লন ২০ বাইছা লন ৪০ এই সব দেখে আমার
খুব মজা লাগত। বিরানির দোকানে আস্ত খাসী টানিয়ে রাখত ।
আমি এটা দেখে আমার জীবন ধন্য মনে করতাম ।
জোরে হাটা মানুষ গুলার সাথে আমি তাল মিলাতে পারলাম না। আমি সাতার না জেনে অলিম্পিক এ ১০০ মিটার এ
প্রতিযোগিতা করতে গেলাম। ভর্তি পরীক্ষার সময়টা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে রহস্যময় ও রমাঞ্চকর ।
মা বাবা কে ছাড়া যে ছেলে এক রাত থাকে নি ও ঢাকায় একা থেকে ভাল করবে এটা মানা কঠিন।
মানুষ এর পড়াশোনা শিকেয় ওঠে আমার পড়াশোনা মঙ্গল গ্রহে নভোযান দিয়ে পাঠাইলাম,তারপর
আমার যান ওখানে নষ্ট হয়ে এখন ও পড়ে আছে। আমি আমার পড়াশোনার বাইরের জগত নিয়ে এতো
বাস্ত যে ওটাকে তার মাতৃভুমির কাছে এখনও ফিরিয়ে আনতে পারি নি। যা হবার তা হল মা বাবার আশা কে
বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে buet,ruet,kuet সবখানে ওয়েটিং। আমি তখন কি জীবন যাপন করেছি
শুধু আমার বিছানা জানে। যে বাপ্পি সারা দিন শুয়ে থাকতো ও কেন বসে আছে???ফ্যামিলি, বন্ধু,সবাইকে
মনে হত স্বার্থপর।
সব গুলা আমার মজা দেখে হাসে। আমাকে বেশি দিন বসে থাকতে হয় নি। এক
জায়গায় ভর্তি হলাম। আমার বোন এইবার পরীক্ষা দিসে ও মেডিকেল এ চান্স পাই নি। তখন আমি নিজে বলছি
আমি দেখিস নাই কিভাবে পড়ছি? তুই ত কিছু ই পড়স নাই টিকবি কি করে?( ও সারা দিন রাত ই পড়ে
হয়ত ধরে রাখতে পারে না )ও তখন নীরবে কাঁদে, আমার মন ও কাঁদে ,হায়রে আমরা অন্নের কষ্ট
বাড়াতে ই পারি সাপোর্ট দিতে পারি না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।