তোমাদের জন্য আমি স্বার্থপর হয়েছি।
অহেতুক আবেগ অথবা বরফ মেশানো লালচে তরল-
এসব কিছুই প্রভাব ফেলেনি, ভুল শোননি এতোটুকু,
যুগে যুগে তোমাদের গল্পে আমিই সেই স্বার্থপর।
আমাকে অপবাদ দিয়ে তোমরা উল্লাস করতেই পারো
কিন্তু যেনে রেখো একবিন্দু অনুতপ্ত নই আমি।
সরল ছেলেবেলায় অনাহূত এই শব্দটির মানে ছিল ভিন্ন
স্কুলের পরীক্ষায় বাংলা অর্থে উত্তর ভুল দিয়েছিলাম।
পণ্ডিত স্যারের বেত আর তীব্র উপহাস হজমের আগে
কেউ কখনো আমায় বলে দেয় নি, স্বার্থপর মানে-
অপরের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেয়া নয়।
সেই স্কুল, পণ্ডিত স্যারের বাংলা ক্লাস, কাঁপানো বেত
দুর্বল ব্যাকরণ অনেক আগেই হারিয়ে গেছে।
বাংলা শব্দে আজ আর ভুল হয়না কখনো ভুল করে।
তবু অদ্ভুত এই শব্দ আর অদ্ভুত সেই মানে
আজো থেকে গেছে মনে, হয়তো হাস্যকর ছিল বলে।
আমার ছোট আয়নায় এখনো ধুলোর আস্তর জমে ওঠেনি
তাই তোমাদের শব্দের ঘৃণিত মানে আমাকে কাঁদায় না।
তোমাদের তীব্র বাক্যবাণে সুতীব্র অন্যায় অভিযোগে
যতবার, যতভাবে আমাকে আঘাত করনা কেন
আমি আমারি মত স্বার্থপর থেকে যাবো।
মানুষের গল্প ফুরিয়ে যায় না, ইতিহাস লিখে রাখে
কখনো পেছনের পাতায় কখনো বা এপিটাফে।
কবিতা যেখানেই যাক আজ আমি কার্পণ্য করবো না
ভুল করবো না তোমাদের প্রাপ্য ধন্যবাদ জানাতে।
জন্ম থেকে জন্মান্তরে আমি ঋণী থেকে যাবো
যুগের পর যুগ ধরে যেভাবে আমায় অবলীলায়
স্বার্থপর হবার সুযোগ করে দিয়ে গেছো তোমরা।
আবার ফিরবো ভিন্ন সময়ে, তোমাদের ভিন্ন হৃদয়ে
অবহেলায় ভুল শব্দের স্বার্থপরতা নিয়ে।
হয়তো তোমাদের আয়েশি ভোরে কর্কশ কাকের কণ্ঠে
চিৎকার করে বলে যাবো আমি স্বার্থপর,
তোমাদের জন্য আমি স্বার্থপর, আমি সেই স্বার্থপর।
তোমাদের আনন্দে ঘৃণায় অপবাদে, গদ্যে পদ্যে সংগীতে
ধ্বনিত হোক আমার স্বার্থপরতার ইতিহাস।
সিডনী
০৯-০১-১৪
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।