আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঙ্গালীর টয়লেট বিবর্তন

ফেসবুকে আমারে "বিডি আইডল" নামে সার্চ দিয়া পাওয়া যাবে

আমার এক প্রিয় স্যার পরিবেশ প্রকৌশলের ক্লাস নেওয়ার সময় প্রায়ই বলতেন...আমরা যে ওয়াশরুম বলতে টয়লেট বুঝি, এটা আসলে ঠিক না। ওয়াশরুম/বাথরুম মানে হলো যেখানে গোসল করা যায়, আর টয়লেট মানে যেখানে ডিফিকেশন (বাংলা হলো 'হাগু') করা যায়। বাঙ্গালী জাতির আদিলগ্ন হতে মানুষ নদীর ধারে হাগু করতে যেত। সে সময় বাড়ীর মধ্যে হাগুখানা থাকাকে চরম ঘৃণ্য বিষয় মনে করা হতো। লোটা (বদনা) হাতে নদীর ধারে...ঝোপের পাশে..মাঠের চিপায় লোকজনদের আনাগোনা দেখা যেত (জেন্ডার ইস্যু: মহিলারা সাধারণত: অন্ধকারে কাজ সারতো)।

মানুষ বাড়ার চাপে যখন খোলা জায়গা কমে গেল...প্রাইভেসীর স্বার্থেই মানুষ তখন ডোবা/জলা ইত্যাদির উপর টাট্টিখানা তৈরি করলো...অনেক সময়ই গাছ/কাঠ ইত্যাদির ঠুনকো পাটাতনের উপর তৈরি হতো এই বিপদজনক জিনিষ। সমসাময়িক কালে আর এক ধরণের টাট্টিখানা ছিল। টয়লেটের নীচে থাকতো টিনের বালতি। জমাদার প্রতিদিন এসে সেটা পরিষ্কার করতো। দীর্ঘদিন এই ব্যবস্হা প্রচলিত ছিল।

কালের বিবর্তনে জাতিসংঘ ইত্যাদি সংস্হা এলো...তারা বললো ছিঃ! এই ভাবে কেউ হাগু করে...এটা খুবই অস্বাস্হ্যকর! এরপর এলো নিরাপদ হাগুর ব্যবস্হা। শুরুটা হলো গর্ত করে এর উপর পাস্টিক/কংক্রিটের পাটাতন বসিয়ে হাগুর ব্যবস্হা। কালে এলো সেফটি ট্যাংকির ব্যবস্হা। যাতে পানি বা মাটি দূষিত না হতে পারে। এতে টয়লেটের নীচের গর্তটি ইট দিয়ে বাধাঁই করা হলো।

একটা পয়সাওয়ালারা এটার উন্নত সংস্করণ বের করলেন...যার নাম হলো ইন্ডিয়ান প‌্যান (লো কমোড)। ফ্ল্যাট বাড়ীতেও এটার বাধ্যতামূলক প্রচলন হলো। কিন্তু ফ্ল্যাশ নষ্ট বা পানি না থাকার বিড়ম্বনায় মানুষকে অস্বস্তিতে রাখতো। ইউরোপিয়ান হাই কমোডও জায়গা দখল করলো। যদিও প্লাম্বারদের ত্রুটির কারণে এতে ইয়ে পড়ে পানি উঠে গায়ে লাগতো বলে বহু লোকই এটা ব্যবহারে অনীহা দেখাতো।

এরপর এলো বিলাশবহুল বাথরুম বা টয়েলট। বাইরের কালচারে বাথরুম/টয়লেট হলো এমন একটা জায়গা যেখানে আপনি সম্পূর্ণ প্রাইভেসী নিয়ে মনের আনন্দে নিজের মত করে সময় কাটাতে পারবেন...চিন্তা ভাবনা করতে পারবেন...বই পড়তে পারবেন। ফুটনোটঃ পড়াশোনার বাইরেও এইখানকার সবরকম হাগুখানায় আমার ইয়ে করার অভিজ্ঞতা আছে (প্রথমটি একেবারেই ছোটবেলায়)।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।